বলাগড়, 4 জানুয়ারি: বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ও জেলা পরিষদের সদস্য রুনা খাতুনের কোন্দলের জেরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি ৷ দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরকে প্রসঙ্গে এবার রুনাকে সোশাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য করে বসলেন মনোরঞ্জন । পোস্ট নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন রুনা । দায়ের হল এফআইআর ৷
বৃহস্পতিবার দুপুরে বলাগড় থানায় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে অশালীন কথা ব্যবহার করা এবং প্রাণ সংশয়ের আশংকা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান তৃণমূলের এই জেলা পরিষদ সদস্য । তিনি বলেন, "বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন । আমাকে যেভাবে অপমান করেছে সেটা পুরো নারী জাতির অপমান । তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন ৷ তাঁর কাছে কোনও প্রমাণ নেই । তিনি ফেসবুকে না-লিখে থানায় বা দলকে জানাতে পারতেন । তাঁর সঙ্গে আমার কোনও শত্রুতা নেই ৷ তিনি শুধু দলকে বদনাম করার জন্য এটা করছেন । আমার মনে হয় উনি বিরোধী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন ৷ অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে কোন ব্যবসায়ীর হাতে বলাগড়কে তুলে দিতে চাইছেন ।"
রুনা খাতুনকে নিয়ে বুধবার রাতে সোশাল মিডিয়ায় প্রথমে কুরুচিকর মন্তব্য করেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ৷ কিছুক্ষণ পর সেই পোস্টটি ডিলিট করে অন্যায় স্বীকার করে নেন তিনি । বিধায়ক লেখেন, বলাগড় বিধানসভার মানুষ ও সমস্ত পাঠকদের কাছে তিনি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন ৷ এই ধরনের শব্দ চয়ন করা তাঁর ভুল হয়েছে । আগামিদিনে এই রকম কথা তিনি আর বলবেন না । তবে বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেননি জেলা পরিষদ সদস্য রুনা খাতুন ৷ পোস্টের মাধ্যমে তাঁকে অসম্মানিত করা হয়েছে বলে সেটির স্ক্রিনশট নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন এই তৃণমূল নেত্রী ৷ মনোরঞ্জন ব্যাপারীর সঙ্গে এই নিয়ে যোগাযোগ করে ইটিভি ভারত ৷ ফোনে তিনি বলেন, "আমি যা বলছি সোশাল মিডিয়াতেই বলেছি ।"
সোশাল মিডিয়ায় এই তৃণমূল বিধায়ক লিখেছিলেন, "আমাকে চোর-খুনি-ধর্ষক বলে আক্রমণ করা হয়েছিল, তাই আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল । তাই আমি এমন একটা বাজে শব্দ লিখে ফেলি । কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝতে পারি মস্ত বড় ভুল হয়ে গিয়েছে । সঙ্গে সঙ্গে সেটা মুছে দিই । কয়েকজন আছে যারা শকুনের মতো আমার প্রোফাইলে নজর পেতে বসে থাকে । তারা সেটার স্ক্রিনশট নিয়ে নেয় এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে থাকে । অনেকেই আমার কাছে জানতে চান এটা কেন লিখেছি, তাদের জানাচ্ছি এটা আমার একটা মস্ত বড় ভুল হয়েছে । এমনটা লেখা সত্যিই আমার উচিত হয়নি । ভুলে যাওয়া উচিত হয়নি আমি একজন লেখক । ওদের মতো মিচুয়াল নিকৃষ্ট জীব নই । আমার পাঠক প্রিয়জন, পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতবর্ষের সমস্ত পরিচিত অপরিচিত সবার কাছে আমি ক্ষমা পার্থনা করছি ।"
উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরে বলাগড়ের বিধায়ক ও জেলা পরিষদের এই সদস্যের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছিল । গতকাল সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে । এরপরই বুধবার রাতে বিধায়কের তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয় । এই ভাঙচুরের পিছনে রুনা খাতুনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী ৷ যদিও রুনা খাতুন সেই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন ৷
আরও পড়ুন: