চন্দননগর, 20 জুন: বাংলার প্রসিদ্ধ রথযাত্রাগুলোর মধ্যে অন্যতম হুগলির গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা। 284 বছরে পড়ল এই রথযাত্রা। জানা যায়, 1740 সালে এই রথ উৎসব শুরু করেন মধুসুধানন্দ। গুপ্তিপাড়ার রথকে বলা হয় বৃন্দাবন জিউর রথ। কাঠের এই রথ দেখতে ও দড়িতে টান দিতে আসেন বহু পুণ্যার্থী। বৃন্দাবনচন্দ্র মঠের পাশে বছরভর এই রথ টিনের খাঁচায় থাকে। এই রথ চারতলা, উচ্চতা প্রায় 36 ফুট। আগে বারোটা চূড়া থাকলেও বর্তমানে ন'টি চূড়া এই রথের। বৃন্দাবন মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রা রথে চড়ে যান প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গোঁসাইগঞ্জ-বড়বাজারে মাসির বাড়ি।
এই ঐতিহ্যপূর্ণ গুপ্তিপাড়া রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে এবছর বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের বিভিন্ন থানা থেকে অফিসার ইনচার্জকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালানো হচ্ছে। বেলা 12 টার পর প্রথম রথে টান শুরু হয় ও বিকালে 4টের পর রথ টানা শেষ হয়। ভিন জেলা অর্থাৎ বর্ধমান, নদিয়া, উত্তর 24 পরগনা থেকে বহু মানুষ আসেন। ভক্তের ভিড়ে গমগম করে রথের সড়ক। মেলা বসেছে চারিদিকে। মন্দির চত্বর থেকে সকলের জন্য বরাদ্দ ছিল ভোগের ব্যবস্থা।
অপরদিকে, চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারের অন্যতম প্রাচীন রথের দড়িতে টান পড়ে সকাল 9টা 5 মিনিট থেকে। রথের দিন তিথি মেনে তিনবার টান পড়ে চন্দননগরের রথের দড়িতে। 247 বছরে পড়ল এই রথযাত্রা। ইতিহাস অনুযায়ী চন্দননগর লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী যাদবেন্দ্র ঘোষ 1776 সালে এই রথের সূচনা করেছিলেন। তিনি জগন্নাথ দেবের স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই রথের সূচনা করেন। প্রথমে কাঠের রথ থাকলেও পরে লোহার রথ নির্মাণ করা হয়। 60 টন ওজনের 9টি চূড়াবিশিষ্ট ।
আরও পড়ুন: রথযাত্রায় দেশবাসীর মঙ্গলকামনায় প্রার্থনা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর
সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে। এদিনের রথে টান দেন চন্দননগরের মহানাগরিক রাম চক্রবর্তী, উপমহানাগরিক মুন্না আগারওয়াল, মেয়র পারিষদ সদস্য শুভজিৎ সাউ-সহ বিশিষ্টজনরা ৷ এদিন চন্দননগর পৌরনিগমের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, "নিদিষ্ট নিয়ম মেনেই এই রথ চলে আসছে। পৌরনিগম ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রথ উপলক্ষ্যে সবরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ৷"