হুগলি, 25 অগস্ট: চন্দ্রযান-3 মিশনের বিক্রমের তিনটি পেলোডারের মধ্যে রয়েছে রম্ভা এলপি। চাঁদের আবহাওয়া মাপার ক্ষেত্রে কাজ করবে সেই পেলোডার। সেই পেলোডারের প্রজেক্ট ডিরেক্টরে রয়েছেন আরও এক বাঙালি। তিনি মুসারফ হোসেন। বীরভূমে বাড়ি হলেও মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক তিনি হুগলির পাণ্ডুয়ার শশীভূষন সাহা হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন। সেই উন্মাদনা ছড়িয়েছে সোশাল মিডিয়া জুড়ে। পাণ্ডুয়ার মানুষ তাঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। স্কুলের তরফেও তাঁকে অভিনন্দন জানান হয়েছে বলে খবর।
চন্দ্রযান-3 মিশনের প্রজেক্টে তিনটে বিক্রমের তিনটে পেলোড আছে। যার মধ্যে একটি হল রম্ভা-এলপি। চন্দ্রযানের গায়ে এটি লাগানো রয়েছে। চাঁদের প্লাজমার আয়ন, ইলেকট্রন, তাপমাত্রা ও ডেনসিটি মাপবে এই রম্ভা। চাঁদের এই ডেটা আসবে যে পাইপলাইন দিয়ে সেটা একটা সফটওয়ারের মাধ্যমে আসবে। রম্ভা এলপি'র প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ফর সায়েন্স ডেটা পাইপ লাইনের তত্ত্বাবধান করেছেন মুশারফ হোসেন। একাধিক বিজ্ঞানী যুক্ত ইসরোর সঙ্গে। বহু শুভাকাঙ্খী মানুষ তাঁকে নিয়ে গর্ব অনুভবও করছেন।
বীরভূমের মুরারই-এর বিলাসপুর গ্রামের বাসিন্দা মুশারফ হোসেন। তাঁর পড়াশোনা শুরু হয়েছিল দাদা মহম্মদ মনিরুল জামানের হাত ধরেই। পরিবারে সচ্ছল পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও দাদার সঙ্গে পাণ্ডুয়ার শশীভূষন সাহা হাই স্কুলে পড়তে আসতেন তিনি। 1992 সালে উচ্চমাধ্যমিক মাধ্যমিক পাশ করে বীরভূমের সাঁইথিয়া অভেদানন্দ কলেজ হয়ে শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা। পরে দিল্লি আইআইটি থেকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরোয় যোগ দেন। গত 17 বছর ইসরোয় রয়েছেন একজন সিনিয়ার বিজ্ঞানী পদে। এবারে চন্দ্রযান-3 মিশনে অংশ নেন ডিরেক্টর হিসাবেও।
মুশারফের কথা অনুযায়ী, ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের বুকে অবতরণ করেছে। তার কিছুক্ষন পর রম্ভা এলপি কাজ শুরু করবে। অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে বলেও জানান তিনি। তাঁর কথায়, "অনেক কিছুই হয়ত আমাদের জানা ছিল। চাঁদের আবহাওয়া, অরবিটার, প্রকৃতি ৷ তবুও প্র্যাকটিক্যালের সঙ্গে ক্যাকুলেশানের কিছুটা ফারাক থেকেই যায়। সেটা খুব সামান্য হলে সমস্যা কম হয়। ফারাক সামান্যই ছিল তাই বিক্রমের ল্যান্ডিং এত ভালোভাবে হয়েছে।"
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান-3 মিশনে ইসরোর সাফল্যে অভিনন্দন সৌরভের
এ বিষয়ে পান্ডুয়া শশীভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি সঞ্জীব ঘোষ বলেন, "এটা আমাদের কাছে খুব গর্বের, শশীভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ইসরোতে রয়েছেন। 1988 সালে স্কুলের নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত এই স্কুলে পড়াশোনা করেন। পাণ্ডুয়ার কল বাজার এলাকায় দাদার সঙ্গে একটি বাড়িতে ভাড়া থেকে পড়াশোনা করতেন। তাঁর দাদাও পাণ্ডুয়াতেই থাকতেন। স্কুলের প্রবীণ শিক্ষকদের কাছে জানতে পারি মুশারফ মেধাবী ছিলেন। এখান থেকে পড়াশোনা করে ইসরোতে গিয়েছে এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের।"