ETV Bharat / state

জগদ্ধাত্রী পুজো প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে ঝড়-বৃষ্টির ভ্রুকুটি, দুশ্চিন্তায় চন্দননগরের উদ্যোক্তারা

Chandannagar Jagadhatri Puja: জগদ্ধাত্রী পুজো প্রস্তুতিতে যখন শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা চলছে, তখনই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস চিন্তায় রাখছে চন্দননগরের উদ্যোক্তাদের ৷

Chandannagar Jagadhatri Puja
জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 17, 2023, 6:57 PM IST

জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

চন্দননগর, 17 নভেম্বর: চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি অন্তিম পর্যায়ে ৷ এরই মধ্যে নিম্নচাপ ও ঝড়-বৃষ্টির ভ্রুকুটিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পুজো উদ্যোক্তাদের ৷ আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস শুনে জগদ্ধাত্রী পুজোর আনন্দ মাটি হওয়ার আশংকা করছেন উদ্যোক্তারা ৷ বেশিরভাগ পুজো মণ্ডপেই কাজ শেষের পথে । মণ্ডপসজ্জা থেকে প্রতিমা তৈরি - সবেতেই জোর কদমে চলছে ফিনিশিং টাচ ৷ তবে ঝড়-বৃষ্টি শেষবেলার প্রস্তুতিতে বাধ সাধতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে ৷

আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ । যার জেরে 24 ঘণ্টার মধ্যে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বিভিন্ন জেলায় । 19 নভেম্বর উপকূলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । আর তা হলে ভোগান্তিতে পড়তে হবে আলোক শিল্পীদের ৷ চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর মূল আকর্ষণই এখানকার তাক লাগানো আলোকসজ্জা ৷ তা দেখতে দেশে-বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন এই সময়ে ৷

তাই বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়েই তড়িঘড়ি কাজ শেষ করতে তৎপর বড়বাজার পুজো কমিটি । বিশাল ক্রেন হাইড্রা এনে মণ্ডপসজ্জা করা হচ্ছে । 61 বছরে তাদের এ বারের থিম পরম্পরা । লোকশিল্পের উপর থিমকে তুলে ধরা হয়েছে । আর আলোকশিল্পে চমক থাকছে এ বারেও । বড়বাজার পুজো কমিটির সম্পাদক প্রণব শীল বলেন, "লোকশিল্পের উপর এই পুজো মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে । বংশপরম্পরায় যে লোকশিল্পের কাজ হত, বর্তমানে মেশিন আসায় সেটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । তাই বর্তমান লোকশিল্পীর বংশধররা অন্য পেশায় স্থানান্তরিত হয়ে যাচ্ছেন । পটশিল্প-সহ অন্যান্য শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের এই চিন্তাভাবনা । এছাড়াও আলোকশিল্পের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে । 120 ফুটের লম্বা সিলিং লাইট করা হচ্ছে । গোটা পুজো মণ্ডপকে রংবাহারি করে তোলা হচ্ছে ।"

চন্দননগরের আদি হালদার পাড়ার এ বছরের থিম 'মাটির ঘরে মা'। মায়ের সঙ্গে যে মাটির সম্পর্ক, সেটাকেই মণ্ডপসজ্জায় ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন উদ্যোক্তারা । এখানে মা বলতে শুধু দেবীকে মণ্ডপসজ্জায় তুলে আনা হয়নি । উল্লেখ করা হয়েছে গর্ভধারিণী মায়েদের কথা ৷ রয়েছে সতীর 108টি রূপের বর্ণনা । মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে মাটির হাঁড়ি, পটচিত্র, মাটির মডেল, কলসী, কুলো ইত্যাদি । তবে মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়নি কোনও প্লাস্টিকের জিনিস । পুজো উদ্যোক্তারা পরিবেশ বান্ধব মণ্ডপ উপহার দিতে চলেছেন দর্শনার্থীদের । ইতিমধ্যেই দেবীর চক্ষুদানও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে । তবে নিম্নচাপের জেরে মাঝেমধ্যেই শুরু হচ্ছে হালকা বৃষ্টি ও সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া । আর তাতেই চিন্তা বাড়ছে উদ্যোক্তাদের ।

এ প্রসঙ্গে আদি হালদার পাড়া পুজো কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেই আমরা যত শীঘ্র সম্ভব মণ্ডপের কাজ সম্পূর্ণ করব । এখনও পর্যন্ত মণ্ডপের বাইরের কিছুটা কাজ বাকি রয়েছে । প্রতিমারও সাজসজ্জা বাকি রয়েছে । এরপরেও বৃষ্টি চলতে থাকে সেটা দুশ্চিন্তার বিষয় । মণ্ডপ শিল্পীরা চাইছেন, যত দ্রুত সম্ভব মণ্ডপের কাজ শেষ করতে । এখন সবটাই নির্ভর করছে ঈশ্বরের উপরে । মায়ের কাছে প্রার্থনা করি, যাতে বৃষ্টি না হয় । তাতে চন্দননগরবাসী-সহ গোটা রাজ্যের মানুষের মঙ্গল হবে । ইতিমধ্যেই অনেকে মণ্ডপ দেখতে আসছেন ৷ নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আমরা এখনও মণ্ডপ বা প্রতিমার কাজ শেষ করতে পারিনি । শুধু আমরা নয়, গোটা চন্দননগরের অধিকাংশ বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিও তাদের মণ্ডপ এখনও সম্পূর্ণ করতে পারেনি ।"

বেশি বৃষ্টি হলে জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা ।

আরও পড়ুন:

  1. মা দুর্গার বিদায়ের দিনই জগদ্ধাত্রীর কাঠামো পুজো চন্দননগরে
  2. জগদ্ধাত্রী মন্ত্রে পূজিতা সিনহা বাড়ির 500 বছরের প্রাচীন বুড়িমা চতুর্ভূজা

জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

চন্দননগর, 17 নভেম্বর: চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি অন্তিম পর্যায়ে ৷ এরই মধ্যে নিম্নচাপ ও ঝড়-বৃষ্টির ভ্রুকুটিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পুজো উদ্যোক্তাদের ৷ আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস শুনে জগদ্ধাত্রী পুজোর আনন্দ মাটি হওয়ার আশংকা করছেন উদ্যোক্তারা ৷ বেশিরভাগ পুজো মণ্ডপেই কাজ শেষের পথে । মণ্ডপসজ্জা থেকে প্রতিমা তৈরি - সবেতেই জোর কদমে চলছে ফিনিশিং টাচ ৷ তবে ঝড়-বৃষ্টি শেষবেলার প্রস্তুতিতে বাধ সাধতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে ৷

আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ । যার জেরে 24 ঘণ্টার মধ্যে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বিভিন্ন জেলায় । 19 নভেম্বর উপকূলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । আর তা হলে ভোগান্তিতে পড়তে হবে আলোক শিল্পীদের ৷ চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর মূল আকর্ষণই এখানকার তাক লাগানো আলোকসজ্জা ৷ তা দেখতে দেশে-বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন এই সময়ে ৷

তাই বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়েই তড়িঘড়ি কাজ শেষ করতে তৎপর বড়বাজার পুজো কমিটি । বিশাল ক্রেন হাইড্রা এনে মণ্ডপসজ্জা করা হচ্ছে । 61 বছরে তাদের এ বারের থিম পরম্পরা । লোকশিল্পের উপর থিমকে তুলে ধরা হয়েছে । আর আলোকশিল্পে চমক থাকছে এ বারেও । বড়বাজার পুজো কমিটির সম্পাদক প্রণব শীল বলেন, "লোকশিল্পের উপর এই পুজো মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে । বংশপরম্পরায় যে লোকশিল্পের কাজ হত, বর্তমানে মেশিন আসায় সেটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । তাই বর্তমান লোকশিল্পীর বংশধররা অন্য পেশায় স্থানান্তরিত হয়ে যাচ্ছেন । পটশিল্প-সহ অন্যান্য শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের এই চিন্তাভাবনা । এছাড়াও আলোকশিল্পের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে । 120 ফুটের লম্বা সিলিং লাইট করা হচ্ছে । গোটা পুজো মণ্ডপকে রংবাহারি করে তোলা হচ্ছে ।"

চন্দননগরের আদি হালদার পাড়ার এ বছরের থিম 'মাটির ঘরে মা'। মায়ের সঙ্গে যে মাটির সম্পর্ক, সেটাকেই মণ্ডপসজ্জায় ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন উদ্যোক্তারা । এখানে মা বলতে শুধু দেবীকে মণ্ডপসজ্জায় তুলে আনা হয়নি । উল্লেখ করা হয়েছে গর্ভধারিণী মায়েদের কথা ৷ রয়েছে সতীর 108টি রূপের বর্ণনা । মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে মাটির হাঁড়ি, পটচিত্র, মাটির মডেল, কলসী, কুলো ইত্যাদি । তবে মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়নি কোনও প্লাস্টিকের জিনিস । পুজো উদ্যোক্তারা পরিবেশ বান্ধব মণ্ডপ উপহার দিতে চলেছেন দর্শনার্থীদের । ইতিমধ্যেই দেবীর চক্ষুদানও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে । তবে নিম্নচাপের জেরে মাঝেমধ্যেই শুরু হচ্ছে হালকা বৃষ্টি ও সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া । আর তাতেই চিন্তা বাড়ছে উদ্যোক্তাদের ।

এ প্রসঙ্গে আদি হালদার পাড়া পুজো কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেই আমরা যত শীঘ্র সম্ভব মণ্ডপের কাজ সম্পূর্ণ করব । এখনও পর্যন্ত মণ্ডপের বাইরের কিছুটা কাজ বাকি রয়েছে । প্রতিমারও সাজসজ্জা বাকি রয়েছে । এরপরেও বৃষ্টি চলতে থাকে সেটা দুশ্চিন্তার বিষয় । মণ্ডপ শিল্পীরা চাইছেন, যত দ্রুত সম্ভব মণ্ডপের কাজ শেষ করতে । এখন সবটাই নির্ভর করছে ঈশ্বরের উপরে । মায়ের কাছে প্রার্থনা করি, যাতে বৃষ্টি না হয় । তাতে চন্দননগরবাসী-সহ গোটা রাজ্যের মানুষের মঙ্গল হবে । ইতিমধ্যেই অনেকে মণ্ডপ দেখতে আসছেন ৷ নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আমরা এখনও মণ্ডপ বা প্রতিমার কাজ শেষ করতে পারিনি । শুধু আমরা নয়, গোটা চন্দননগরের অধিকাংশ বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিও তাদের মণ্ডপ এখনও সম্পূর্ণ করতে পারেনি ।"

বেশি বৃষ্টি হলে জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা ।

আরও পড়ুন:

  1. মা দুর্গার বিদায়ের দিনই জগদ্ধাত্রীর কাঠামো পুজো চন্দননগরে
  2. জগদ্ধাত্রী মন্ত্রে পূজিতা সিনহা বাড়ির 500 বছরের প্রাচীন বুড়িমা চতুর্ভূজা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.