ETV Bharat / state

ভাবদিঘিতে নেই কোনও সরকারি সাহায্য - ভাবদিঘির মানুষ

ভোটের আগে রাজনৈতিক নেতারা আসেন।কিন্তু এই লকডাউনের সময় কাজহারা মানুষ গুলোর পাশে নেই কেউ।রেশনের 2 কিলো চাল ছাড়া কিছুই জটেনি তাঁদের।আন্দোলনকারী ও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ সরকারি সাহায্য বলতে কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা।তবে প্রশাসনিক তরফে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।গোঘাটের বিধায়ক মানুষ মজুমদার বলেন, "10 তারিখের পর ত্রাণ দেওয়ার কাজ শুরু করবেন।তবে ভাবদিঘির মানুষের কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই জানান। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁদের জন্য।"

bhabadighi
ভাবদিঘি
author img

By

Published : Apr 7, 2020, 11:53 PM IST


হুগলি, 7 এপ্রিল : লক ডাউনে কেমন আছে ভাবদিঘির মানুষ?প্রশাসন কি খোঁজ নিচ্ছে ? গৃহবন্দী কয়েকশো পরিবার কী খাচ্ছেন? কী বলছেন বিধায়ক? দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলা রেলপ্রকল্প থমকে গিয়েছে গোঘাটের ভাবদিঘিতে এসেই।

গোঘাট ও কামারপুকুর স্টেশনের রেললাইনে কোথা দিয়ে যাবে সেই নিয়ে বিরোধ সরকার ও ভাবদিঘির মানুষের মধ্যে।আর একমাত্র রুটিরুজি এই দিঘি নিয়ে শুরু হয় আন্দোলন।বর্তমানে তা সুপ্রিমকোর্ট অবধি গড়িয়েছে।কিন্তু এখনও জট কাটেনি।বিভিন্ন ভাবে রেল ও রাজ্য সরকার প্যাকেজ ঘোষণা করেও কিছু লাভ হয়নি।সেখানকার মানুষ চায় ভাবদিঘির উপর দিয়ে রেলপ্রকল্প যাতে না হয়।তার ফলে ভাবদিঘি নষ্ট হয়ে যাবে।আর তা নষ্ট হলে ভাবাদিঘি থেকে মাছ চাষের আয়ও বন্ধ হয়ে যাবে এই খেটে খাওয়া মানুষদের।

ভোটের আগে রাজনৈতিক নেতারা আসেন।কিন্তু এই লকডাউনের সময় কাজহারা মানুষগুলোর পাশে নেই কেউ এমনই অভিযোগ।রেশনের 2 কিলো চাল ছাড়া কিছুই জোটেনি তাঁদের।আন্দোলনকারী ও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ সরকারি সাহায্য বলতে কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা।তবে প্রশাসনিক তরফে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।গোঘাটের বিধায়ক মানুষ মজুমদার বলেন, "10 তারিখের পর ত্রাণ দেওয়ার কাজ শুরু করবেন।তবে ভাবদিঘির মানুষের কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই জানান। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁদের জন্য।"


ভাবদিঘি মোট 17 একর 48 বিঘা ।এই দিঘির পাড়ের চার পাশে 164 টি ঘরে কয়েকশো মানুষের বাস ।আর এই দিঘি লিজ দিয়ে বছরে 4 লক্ষ 20 হাজার টাকা নগদ ও 13 কুইন্টাল মাছ পাওয়া যেত।বর্তমানে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বন্ধ মাছ চাষ। স্শ স্থানীয়দের অভিযোগ, শাসক দলের চোখরাঙানিতে কোনও জেলে চাষ করছেন না । আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন এখানকার খেটে খাওয়া মানুষেরা।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেল পথ ঘোষণা করেন । গোঘাট পর্যন্ত রেল লাইন হয় ।গোঘাটের পর থেকে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভূমি কামারপুকুর পর্যন্ত রেললাইনের কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।ভাবদিঘির জন্য বন্ধ এই হাওড়া বিষ্ণুপুর সুদীর্ঘ রেল পথ।স্থানীয় মানুষের দাবি,একটাই রেল লাইন হোক কিন্তু ভাবদিঘিকে নষ্ট করে রেলপথ হবে না।ভাবদিঘির উত্তর দিকে দিয়ে রেললাইন হলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।এই নিয়ে সরকারের সঙ্গে লড়াই ভাবদিঘির মানুষের।

সরকারি তরফে এখানে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল ।কিন্তু বর্তমানে লকডাউনে সময়ে কোনও সরকারি সাহায্য নেই মানুষের জন্য।এমনিতেই দিঘি থেকে আয় বন্ধ।তারউপর লকডাউনে গৃহবন্দী মানুষ । কোথাও কাজে বেরতে পারছে না।নিজেদের আয় বলতে কেউ মাঠে অথবা দিনমজুরের কাজ করে দিন কাটে।কিছু মানুষের জমি জায়গা থাকলেও তা সামান্য।এই সময় মানুষের পাশে নেই সরকার বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ তুলেছে আন্দোলনকারী থেকে সাধারণ মানুষ।আন্দোলনকারী মধ্যে স্বপন রায় বলেন, "ভাবদিঘি ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল তা প্রতি শরিক পিছু 24 হাজার 300 টাকা করে । যা ভাবদিঘি মানুষের কাছে যৎসামান্য ।কারণ এই দিঘি থেকে যে আয় হবে সেটার এক-চতুর্থাংশ ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ ।আমাদের মতে কি এই দিঘি বুজিয়ে দেওয়া উচিত নয়।সেই জন্যই আমাদের আন্দোলন।প্রতি বছর আমরা এই দিঘি থেকে প্রায় মাথা পিছু 24 হাজার টাকা করে পেতাম।এখানে যারা দিন আনে দিন খায় তারা সারা বছর এটা থেকেই খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকে।"ভাবদিঘির 165 টি ঘরের মধ্যে 150 টি ঘরের মানুষজন সেভাবে খেতে পায় না। কিছু জমি জায়গা চাষ করে লকডাউনে কিছুদিন চলবে। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে মানুষের ডাকাতি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলে মত স্থানীয়দের।

গোঘাটের বিধায়ক মানুষ মজুমদার বলেন, "বুলবুলের টাকা পাচ্ছে না বলেও ওরা দাবি করেছে । সে ক্ষেত্রে নিজের জমি ও বর্গাদারের জমি থাকলেই বুলবুলের টাকা পাওয়া যায় ।কৃষি দপ্তরের যে নিয়ম ছিল তাতে কোনও টাকা পাওয়া যায় না। সেটা সকলে ক্ষেত্রেই সমান।ত্রাণ দেওয়ার ব্যাপারে ভাবদিঘির মানুষ বলে নয়, সকলকেই ত্রাণ দেওয়া হবে ।10 তারিখের পর চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।তবে ভাবদিঘির মানুষ যদি আলাদা করে বলেন আমায়, সে বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করব অবশ্যই।"

স্থানীয় মানুষ সুকুমার রায় ,শঙ্কর মালিক বলেন," রেশনের দুকিলো চাল ছাড়া কিছু পাইনি। সরকার ও বিধায়ক সাহায্যের জন্য আসেনি।আমাদের দুবেলা কী জুটছে সেটাও বিধায়ক দেখতে আসেন না।"

সাবিত্রী মালিক ও শ্রাবণী মালিক বলেন, "লকডাউেনের সময় আমাদের স্বামী ছেলে সকলেই ঘরে বসে আছে। কেউ দিনমজুর কেউ রাজমিস্ত্রি কাজ করে খায়। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে এই সময়। লকডাউনে যখন কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। সেই সময় দু কিলো করে চালে পাঁচ-ছয় জনের পেট কিভাবে চলবে।" তাঁদের মতে সরকারি তরফে আরও কিছু চাল ডাল আলু দিলে হয়তো কিছুটা সমস্যা মিটবে ।


হুগলি, 7 এপ্রিল : লক ডাউনে কেমন আছে ভাবদিঘির মানুষ?প্রশাসন কি খোঁজ নিচ্ছে ? গৃহবন্দী কয়েকশো পরিবার কী খাচ্ছেন? কী বলছেন বিধায়ক? দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলা রেলপ্রকল্প থমকে গিয়েছে গোঘাটের ভাবদিঘিতে এসেই।

গোঘাট ও কামারপুকুর স্টেশনের রেললাইনে কোথা দিয়ে যাবে সেই নিয়ে বিরোধ সরকার ও ভাবদিঘির মানুষের মধ্যে।আর একমাত্র রুটিরুজি এই দিঘি নিয়ে শুরু হয় আন্দোলন।বর্তমানে তা সুপ্রিমকোর্ট অবধি গড়িয়েছে।কিন্তু এখনও জট কাটেনি।বিভিন্ন ভাবে রেল ও রাজ্য সরকার প্যাকেজ ঘোষণা করেও কিছু লাভ হয়নি।সেখানকার মানুষ চায় ভাবদিঘির উপর দিয়ে রেলপ্রকল্প যাতে না হয়।তার ফলে ভাবদিঘি নষ্ট হয়ে যাবে।আর তা নষ্ট হলে ভাবাদিঘি থেকে মাছ চাষের আয়ও বন্ধ হয়ে যাবে এই খেটে খাওয়া মানুষদের।

ভোটের আগে রাজনৈতিক নেতারা আসেন।কিন্তু এই লকডাউনের সময় কাজহারা মানুষগুলোর পাশে নেই কেউ এমনই অভিযোগ।রেশনের 2 কিলো চাল ছাড়া কিছুই জোটেনি তাঁদের।আন্দোলনকারী ও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ সরকারি সাহায্য বলতে কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা।তবে প্রশাসনিক তরফে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।গোঘাটের বিধায়ক মানুষ মজুমদার বলেন, "10 তারিখের পর ত্রাণ দেওয়ার কাজ শুরু করবেন।তবে ভাবদিঘির মানুষের কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই জানান। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁদের জন্য।"


ভাবদিঘি মোট 17 একর 48 বিঘা ।এই দিঘির পাড়ের চার পাশে 164 টি ঘরে কয়েকশো মানুষের বাস ।আর এই দিঘি লিজ দিয়ে বছরে 4 লক্ষ 20 হাজার টাকা নগদ ও 13 কুইন্টাল মাছ পাওয়া যেত।বর্তমানে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বন্ধ মাছ চাষ। স্শ স্থানীয়দের অভিযোগ, শাসক দলের চোখরাঙানিতে কোনও জেলে চাষ করছেন না । আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন এখানকার খেটে খাওয়া মানুষেরা।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেল পথ ঘোষণা করেন । গোঘাট পর্যন্ত রেল লাইন হয় ।গোঘাটের পর থেকে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভূমি কামারপুকুর পর্যন্ত রেললাইনের কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।ভাবদিঘির জন্য বন্ধ এই হাওড়া বিষ্ণুপুর সুদীর্ঘ রেল পথ।স্থানীয় মানুষের দাবি,একটাই রেল লাইন হোক কিন্তু ভাবদিঘিকে নষ্ট করে রেলপথ হবে না।ভাবদিঘির উত্তর দিকে দিয়ে রেললাইন হলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।এই নিয়ে সরকারের সঙ্গে লড়াই ভাবদিঘির মানুষের।

সরকারি তরফে এখানে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল ।কিন্তু বর্তমানে লকডাউনে সময়ে কোনও সরকারি সাহায্য নেই মানুষের জন্য।এমনিতেই দিঘি থেকে আয় বন্ধ।তারউপর লকডাউনে গৃহবন্দী মানুষ । কোথাও কাজে বেরতে পারছে না।নিজেদের আয় বলতে কেউ মাঠে অথবা দিনমজুরের কাজ করে দিন কাটে।কিছু মানুষের জমি জায়গা থাকলেও তা সামান্য।এই সময় মানুষের পাশে নেই সরকার বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ তুলেছে আন্দোলনকারী থেকে সাধারণ মানুষ।আন্দোলনকারী মধ্যে স্বপন রায় বলেন, "ভাবদিঘি ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল তা প্রতি শরিক পিছু 24 হাজার 300 টাকা করে । যা ভাবদিঘি মানুষের কাছে যৎসামান্য ।কারণ এই দিঘি থেকে যে আয় হবে সেটার এক-চতুর্থাংশ ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ ।আমাদের মতে কি এই দিঘি বুজিয়ে দেওয়া উচিত নয়।সেই জন্যই আমাদের আন্দোলন।প্রতি বছর আমরা এই দিঘি থেকে প্রায় মাথা পিছু 24 হাজার টাকা করে পেতাম।এখানে যারা দিন আনে দিন খায় তারা সারা বছর এটা থেকেই খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকে।"ভাবদিঘির 165 টি ঘরের মধ্যে 150 টি ঘরের মানুষজন সেভাবে খেতে পায় না। কিছু জমি জায়গা চাষ করে লকডাউনে কিছুদিন চলবে। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে মানুষের ডাকাতি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলে মত স্থানীয়দের।

গোঘাটের বিধায়ক মানুষ মজুমদার বলেন, "বুলবুলের টাকা পাচ্ছে না বলেও ওরা দাবি করেছে । সে ক্ষেত্রে নিজের জমি ও বর্গাদারের জমি থাকলেই বুলবুলের টাকা পাওয়া যায় ।কৃষি দপ্তরের যে নিয়ম ছিল তাতে কোনও টাকা পাওয়া যায় না। সেটা সকলে ক্ষেত্রেই সমান।ত্রাণ দেওয়ার ব্যাপারে ভাবদিঘির মানুষ বলে নয়, সকলকেই ত্রাণ দেওয়া হবে ।10 তারিখের পর চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।তবে ভাবদিঘির মানুষ যদি আলাদা করে বলেন আমায়, সে বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করব অবশ্যই।"

স্থানীয় মানুষ সুকুমার রায় ,শঙ্কর মালিক বলেন," রেশনের দুকিলো চাল ছাড়া কিছু পাইনি। সরকার ও বিধায়ক সাহায্যের জন্য আসেনি।আমাদের দুবেলা কী জুটছে সেটাও বিধায়ক দেখতে আসেন না।"

সাবিত্রী মালিক ও শ্রাবণী মালিক বলেন, "লকডাউেনের সময় আমাদের স্বামী ছেলে সকলেই ঘরে বসে আছে। কেউ দিনমজুর কেউ রাজমিস্ত্রি কাজ করে খায়। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে এই সময়। লকডাউনে যখন কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। সেই সময় দু কিলো করে চালে পাঁচ-ছয় জনের পেট কিভাবে চলবে।" তাঁদের মতে সরকারি তরফে আরও কিছু চাল ডাল আলু দিলে হয়তো কিছুটা সমস্যা মিটবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.