হুগলি, 25 সেপ্টেম্বর : কৃষি আইনে কৃষকের স্বার্থ রক্ষা হবে, না-কি কৃষকেরই গলায় ফাঁস হবে দাঁড়াবে ? কেন্দ্রের বক্তব্য, কৃষকের স্বার্থেই পাশ হয়েছে কৃষি বিল । ফড়ে বা মিডলম্যান সরালেই ন্যায্যমূল্য পাবে কৃষকরা ৷ তাই এই বিশেষ আইন । এ বিষয়ে উঠে আসছে একাধিক মত । ফসল উৎপাদনকারী ও ব্যবসাদার কী বলছেন? ETV ভারতের গ্রাউন্ড রিপোর্টে উঠে আসছে বিভিন্ন মত। সরকারি এই আইন পিছিয়ে দেবে না তো একশো বছর আগের অবস্থা? এই নিয়ে শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কি চলতেই থাকবে? আখেরে লাভ কার ?
কৃষি বিল পাশ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। কৃষক থেকে রাজনৈতিক দলগুলি রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্যে । পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলাও পিছিয়ে নেই। কৃষিভিত্তিক জেলা হিসাবে পরিচিত হুগলি। কৃষি আইনে দালাল চক্র সরিয়ে ন্যায্যমূল্য দিতে চায় কেন্দ্রের এই আইন। কিন্তু কী ভাবে প্রণয়ন হবে এই আইন? সকলেই দিশাহারা । কৃষিজাত পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন কোনও একটা মাধ্যম। সেই চেষ্টা করেছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও । তাও কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। কিষাণ মান্ডি করে চাষিরা সরাসরি তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করার জায়গা তৈরি হয়েছিল। বহু টাকা ব্যয় করে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে এই মান্ডিগুলি । তার মধ্যে অধিকাংশই পড়ে আছে । যে মান্ডি বা কৃষক বাজার চলছে তাতে ফড়ের সংখ্যা বেশি। কৃষকরা সেভাবে মাল বিক্রি করতে যায় না এই মান্ডিগুলিতে। অনেকের বক্তব্য, কাঁচামাল হওয়ায় তাড়াতাড়ি বাজারের পৌঁছানো প্রয়োজন। তাই মাঠ থেকেই ফড়ে বা মিডলম্যান ফসল কিনে নিচ্ছে কৃষকদের কাছে থেকে । সেখানে কৃষকেরা দাম কম পেলেও কোনও ঝুঁকি তাদের নিতে হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী চাষের সময় বাঁচানো সম্ভব হয়। আবার ভিন জেলা ও রাজ্যে চাহিদা মতো কাঁচা ফসলের জোগান একক কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়। সেখানে প্রয়োজন মধ্যপন্থী ব্যবসায়ীদের। তারা বিভিন্ন জায়গার চাহিদা মেটানো জন্য ব্যবসা করে। সেই ব্যবসাদারদের যদি সরিয়ে দেওয়া হয়, তারা কোথায় যাবে ? জেলায় প্রায় 1 লাখের বেশি ফড়ে , মিডলম্যান ও ব্যবসায়ী আছে। বেকারত্বের জ্বালায় অনেকেই কৃষিপণ্যের ব্যবসাকেই রুটি রুজি করেছে। কিন্তু সেই ব্যবসা থেকে সরিয়ে দিলে তারা বেকার হয়ে যাবে ।
কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছে, কৃষিভিত্তিক চুক্তি চাষে কৃষকদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। সেখানে থেকেও অনেকেই পিছিয়ে এসেছে। আবার যদি কৃষকরা তাদের ফসল কর্পোরেট সংস্থাকে বিক্রি করে, তাতেও একটা মধ্যস্থকারী থাকবে। সেক্ষেত্রে দাম নির্ধারনের ক্ষমতা পুরোপুরি কর্পোরেট সংস্থার হাতে চলে যাবে। সেটা বজায় রাখতে গেলে সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে ফসলের দাম। প্রয়োজনে সমবায়গুলিকে কৃষক স্বার্থে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু সমবায় সমিতির দাবি, কৃষিজাত পণ্য কিনতে উপযুক্ত পরিকাঠামোর প্রয়োজন। সে অভাবও রয়েছে সমবায়গুলিতে । সরকারি বিপণন বিভাগ যদি ফসলের দাম নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেয়, তাহলে আলুর বা ধানের দাম নির্ধারণ করা তো খুব সহজ হত। সে দিকে দেখতে গেলে এখন আলু ও পিঁয়াজের দাম উর্ধ্বমুখী । তাহলে সরকারিভাবে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হচ্ছে না কেন? তাই কৃষক থেকে ব্যবসায়ী সকলেই এই কৃষি বিলের বিরোধিতা করছে। তারা মনে করছে, এই আইনে আগামী দিনে কৃষি ফসলের দাম নিধারিত হবে কর্পোরেট সংস্থার দ্বারা।
কৃষি আইনে কৃষকের স্বার্থ রক্ষা, না গলায় ফাঁস
কৃষি বিল কি সত্যিই কৃষকের স্বার্থরক্ষা করবে ? এ বিষয়ে উঠে আসছে একাধিক মত । কী বলছেন কৃষক ও এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা ? কৃষি আইনে দালাল চক্র সরিয়ে ন্যায্য মূল্য দিতে চায় কেন্দ্র ৷ কিন্তু এই আইন কি সত্য়িই কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করবে, এই নিয়ে অনেকেই দিশাহারা ৷
হুগলি, 25 সেপ্টেম্বর : কৃষি আইনে কৃষকের স্বার্থ রক্ষা হবে, না-কি কৃষকেরই গলায় ফাঁস হবে দাঁড়াবে ? কেন্দ্রের বক্তব্য, কৃষকের স্বার্থেই পাশ হয়েছে কৃষি বিল । ফড়ে বা মিডলম্যান সরালেই ন্যায্যমূল্য পাবে কৃষকরা ৷ তাই এই বিশেষ আইন । এ বিষয়ে উঠে আসছে একাধিক মত । ফসল উৎপাদনকারী ও ব্যবসাদার কী বলছেন? ETV ভারতের গ্রাউন্ড রিপোর্টে উঠে আসছে বিভিন্ন মত। সরকারি এই আইন পিছিয়ে দেবে না তো একশো বছর আগের অবস্থা? এই নিয়ে শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কি চলতেই থাকবে? আখেরে লাভ কার ?
কৃষি বিল পাশ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। কৃষক থেকে রাজনৈতিক দলগুলি রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্যে । পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলাও পিছিয়ে নেই। কৃষিভিত্তিক জেলা হিসাবে পরিচিত হুগলি। কৃষি আইনে দালাল চক্র সরিয়ে ন্যায্যমূল্য দিতে চায় কেন্দ্রের এই আইন। কিন্তু কী ভাবে প্রণয়ন হবে এই আইন? সকলেই দিশাহারা । কৃষিজাত পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন কোনও একটা মাধ্যম। সেই চেষ্টা করেছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও । তাও কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। কিষাণ মান্ডি করে চাষিরা সরাসরি তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করার জায়গা তৈরি হয়েছিল। বহু টাকা ব্যয় করে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে এই মান্ডিগুলি । তার মধ্যে অধিকাংশই পড়ে আছে । যে মান্ডি বা কৃষক বাজার চলছে তাতে ফড়ের সংখ্যা বেশি। কৃষকরা সেভাবে মাল বিক্রি করতে যায় না এই মান্ডিগুলিতে। অনেকের বক্তব্য, কাঁচামাল হওয়ায় তাড়াতাড়ি বাজারের পৌঁছানো প্রয়োজন। তাই মাঠ থেকেই ফড়ে বা মিডলম্যান ফসল কিনে নিচ্ছে কৃষকদের কাছে থেকে । সেখানে কৃষকেরা দাম কম পেলেও কোনও ঝুঁকি তাদের নিতে হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী চাষের সময় বাঁচানো সম্ভব হয়। আবার ভিন জেলা ও রাজ্যে চাহিদা মতো কাঁচা ফসলের জোগান একক কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়। সেখানে প্রয়োজন মধ্যপন্থী ব্যবসায়ীদের। তারা বিভিন্ন জায়গার চাহিদা মেটানো জন্য ব্যবসা করে। সেই ব্যবসাদারদের যদি সরিয়ে দেওয়া হয়, তারা কোথায় যাবে ? জেলায় প্রায় 1 লাখের বেশি ফড়ে , মিডলম্যান ও ব্যবসায়ী আছে। বেকারত্বের জ্বালায় অনেকেই কৃষিপণ্যের ব্যবসাকেই রুটি রুজি করেছে। কিন্তু সেই ব্যবসা থেকে সরিয়ে দিলে তারা বেকার হয়ে যাবে ।
কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছে, কৃষিভিত্তিক চুক্তি চাষে কৃষকদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। সেখানে থেকেও অনেকেই পিছিয়ে এসেছে। আবার যদি কৃষকরা তাদের ফসল কর্পোরেট সংস্থাকে বিক্রি করে, তাতেও একটা মধ্যস্থকারী থাকবে। সেক্ষেত্রে দাম নির্ধারনের ক্ষমতা পুরোপুরি কর্পোরেট সংস্থার হাতে চলে যাবে। সেটা বজায় রাখতে গেলে সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে ফসলের দাম। প্রয়োজনে সমবায়গুলিকে কৃষক স্বার্থে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু সমবায় সমিতির দাবি, কৃষিজাত পণ্য কিনতে উপযুক্ত পরিকাঠামোর প্রয়োজন। সে অভাবও রয়েছে সমবায়গুলিতে । সরকারি বিপণন বিভাগ যদি ফসলের দাম নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেয়, তাহলে আলুর বা ধানের দাম নির্ধারণ করা তো খুব সহজ হত। সে দিকে দেখতে গেলে এখন আলু ও পিঁয়াজের দাম উর্ধ্বমুখী । তাহলে সরকারিভাবে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হচ্ছে না কেন? তাই কৃষক থেকে ব্যবসায়ী সকলেই এই কৃষি বিলের বিরোধিতা করছে। তারা মনে করছে, এই আইনে আগামী দিনে কৃষি ফসলের দাম নিধারিত হবে কর্পোরেট সংস্থার দ্বারা।