পাণ্ডুয়া, 10 ডিসেম্বর : স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আওতায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নামে দুর্নীতির অভিযোগ (Swasthya Sathi Card Fraud Case) ৷ কাঠগড়ায় বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ৷ স্বাস্থ্যপরীক্ষার নামে টানা তিনদিন হুগলির পাণ্ডুয়ার 11 জন বাসিন্দাকে ওই হাসপাতালে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ ৷ ভুক্তভোগীদের দাবি, তাঁদের এলাকার পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের যোগসাজশেই গোটা ঘটনা ঘটেছে ৷
আরও পড়ুন : Swasthya Sathi Scheme : স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে মিলছে না পরিষেবা, বিশৃঙ্খলা বহরমপুরের নার্সিংহোমে
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পাণ্ডুয়ার হারাধনচন্দ্র নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে একটি স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করা হয় ৷ বর্ধমানের ওই বেসরকারি হাসপাতালই এই স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করে ৷ সেই শিবিরে গ্রামের অনেক মানুষই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান ৷ তাঁদের মধ্যে 11 জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলা হয় ৷ ওই 11 জনকে জানানো হয়, মাত্র একদিনের জন্য তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে ৷ কিন্তু, ভর্তি হওয়ার পর টানা তিনদিন তাঁদের সেখানে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ ৷ এতে ওই রোগীরা ভয় পেয়ে যান ৷ বাড়িতে ফোন করে গোটা ঘটনা জানান তাঁরা ৷ এরপরই ওই 11 জনকে উদ্ধার করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় ৷ পরে তাঁদের চিকিৎসার জন্য পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সকলেরই অবস্থা স্থিতিশীল ৷ তবে কয়েকজনকে আরও কয়েকটি স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য চুঁচুড়ায় রেফার করা হয়েছে ৷
পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁদের প্রত্যেকের হাতে 12 হাজার থেকে 14 হাজার টাকার বিল ধরিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ এই টাকা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পেয়ে যাবে বলে দাবি সূত্রের ৷ রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পাণ্ডুয়ার নিরালা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৷ তাঁর যোগসাজশেই পাণ্ডুয়ার স্কুলে স্বাস্থ্যশিবির করে বর্ধমানের ওই হাসপাতাল ৷ স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের মাধ্যমে সরকারি টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ করাই এই শিবিরের লক্ষ্য ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়েই ওই স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল ৷
অভিযুক্ত উপপ্রধান দেবী বাউল দাস অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তাঁর দাবি, তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না ৷ যদিও উপপ্রধানের এই দাবি মানতে নারাজ পাণ্ডুয়াার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন ৷ তাঁর অভিযোগ, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অজুহাতে সরকারি টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে ৷ আমজনতাকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক দুর্নীতি করছেন ক্ষমতাসীনরা ৷ একই অভিযোগ করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও ৷