চুঁচুড়া, 27 মার্চ: তিনি স্লিপ লিখে দিলেই পাড়ার মুদি দোকান দুঃস্থের হাতে তুলে দিচ্ছে চাল-ডাল-নুন । না, কোনও সরকারি উদ্যোগ নয় । কোরোনা সতর্কতায় লকডাউনের দিনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন বর্তমানে এ রাজ্যের অধিবাসী এক কাশ্মীরি শালওলা ।
তিনি আরশাদ হোসেন । হ্যাঁ, কাশ্মীর উপত্যকারই মানুষ । তবে, শাল, সোয়েটারের ব্যবসার তাগিদে চুঁচুড়ায় ভাড়া আছেন প্রায় একযুগ । স্ত্রী, পুত্র নিয়ে সপরিবারে চুঁচুড়ার ময়নাডাঙায় থাকেন আরশাদ হোসেন । খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ । উপত্যকার গরম কাপড় বিক্রি করে সংসার চালান । কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে যখন লকডাউনে স্তব্ধ গোটা দেশ, তখন সেই সাধারণ শালওলা দিন আনা-দিন খাওয়া মানুষের মুখে তুলে দিচ্ছেন অন্ন । বহুদিন চুঁচুড়ায় থাকতে থাকতে এলাকার প্রতি টান পড়ে গেছে, জানাচ্ছেন আরশাদ সাহেব। বলছেন, মানুষগুলো চরম অসহায় এখন। কিন্তু গরিব মানুষগুলোর জন্য কেমন ব্যবস্থা করেছেন তিনি?
পাড়ার যে মুদিখানা দোকান থেকে আরশাদ হোসেন দৈনন্দিন সামগ্রী কেনেন, সেই দোকানের মালিককে বলে দিয়েছেন, বিপদের বাজারে যাদের চাল-ডালটুকু কেনারও সামর্থ্য নেই, তাদের সাধ্যমতো সাহায্য করবেন তিনি । বলেছেন, মুদির দোকানে এমন কেউ এলে যেন তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । যেমন কথা তেমনি কাজ । এরপর থেকেই তেমন কেউ তাঁর বাড়িতে গেলে তিনি তাকে লিখে দিচ্ছেন একটি চিরকুট বা স্লিপ । দোকানে ওই চিরকুট জমা দিলেই গরিব মানুষগুলি পাচ্ছেন অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী । যার দাম দিচ্ছেন আরশাদে হোসেন । গত দু'দিনে এভাবে অনেকেই আরশাদের থেকে স্লিপ লিখিয়ে চাল ডাল নিয়ে গেছেন ওই মুদি দোকান থেকে ।