হুগলি, 5 অগস্ট: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'অচলায়তন'-এর পঞ্চক অচলায়তন ভাঙতে চেয়েছিল এক প্রতিষ্ঠানের জানলা খুলে দিয়ে ৷ এবার চন্দননগররের বিপ্লবী ভবনের জানলা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৷ ইতিমধ্যে ভবনটিকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছে ট্রাস্টের সদস্যরা । অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন চন্দননগর পৌরনিগমের মেয়র রাম চক্রবর্তী । ট্রাস্ট্রের পক্ষ থেকেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷
এক সময়ের স্বাধীনতা সংগ্রামের পীঠস্থান ছিল চন্দননগর । এই চন্দননগর থেকেই অরবিন্দ ঘোষ, রাসবিহারী বসু ও নেতাজির মতো বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন ৷ চন্দননগর লক্ষীগঞ্জ বাজারে অরবিন্দ মন্দির ও বিপ্লবী শ্রীশ চন্দ্র ঘোষের নামে ট্রাস্টের ভবন 'বিপ্লবী ভবন' নামে পরিচিত । একশো বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছে ভবনটি । বর্তমানে এই ভবনকে গ্রাস করার অভিযোগ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৷
এই ভবনের পাশেই রয়েছে এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি । অভিযোগ, সেই প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণের নামে ভবনের দু’টি তলার জানলা ইঁট দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে । তাতে ভবনটিতে আলো বাতাস ঢুকতে পারছে না । ট্রাস্টের সম্পাদকদের অগোচরেই এই সব কান্ড ঘটেছে । পরবর্তী কালে জানাজানি হতেই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন । ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা নেওয়া হয়েছে । ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় একশো বছরের বেশি সময় এই ভবনটি রয়েছে এখানে । বিপ্লবী জ্যোতিষ চন্দ্র ঘোষ এই ভবনে বাস করতেন । তাঁর মৃত্যুর পর ভবনের সম্প্রসারণ হয়েছিল বহু বছর আগে ।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী নতুন বিল্ডিং করতে হলে নিদিষ্ট নিয়ম রয়েছে । কিন্তু মালিক পক্ষের দাবি নিয়ম মেনেই করছেন তাঁরা । ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক মৌসম সুর বলেন, "প্ল্যানের নিয়ম অনুযায়ী তিনি সবকিছু করেছেন ৷ প্যারাফিট দিয়ে জানালা বন্ধ করা হয়েছে । জানালা দিয়ে জল ও চায়ের কাপ ফেলা হয় । নিরাপত্তার কারণেই প্যারাফিট দেওয়া হয়েছে । সেটা নিয়ম মেনেই করা হয়েছে ।"
ওই ব্যবসায়ীর কথার পরিপ্রক্ষিতেই শ্রীশ চন্দ্র ঘোষ ফান্ডের যুগ্ম সম্পাদক অমিতাভ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই ভবনে বিপ্লবী কার্যকলাপ হত । সেখানে প্রশাসনিক সাহায্যে বন্ধ করে দেওয়া হয় । তাতে আমাদের মুশকিল হবে । প্রথম দিকে আমরা বুঝতে পারেনি কিছুই । তাই প্রশাসনিক দফতরে কোনও অভিযোগ জানাতে পারেনি । প্রশাসনের কাছে অনুরোধ চন্দননগরের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক ।"
আরও পড়ুন: বর্ষায় জলমগ্ন স্কুল, জিটি রোডের ধারে ক্লাস নিলেন শিক্ষকরা
চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী জানান, বিষয়টি নিয়ে তাঁর কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ তবি তিনি বিষয়টি শুনেছেন ৷ সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন ৷