হুগলি, 16 ডিসেম্বর: পোলবার কয়েকটি গ্রাম জুড়ে রয়েছে কয়েকশো ময়ূর । এখানকার সুগন্ধা ও রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রামগুলিকে লোকে ময়ূরের গ্রাম বলেই চেনে । কিন্তু বর্তমানে খাবারের অভাব ও চোরা শিকারের জন্য অবলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি । সরকারি উদাসীনতায় মরতে বসছে ময়ূর এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের (National Bird on Verge of Extinction Due to Lack of Food)।
পোলবার গান্ধি গ্রামের কল্লা পরিবার তাঁদের সামর্থ্য মতো মযূরদের দেখা শোনা করলেও তা পর্যাপ্ত নয় । লোকালয়ে এভাবে কোথাও ময়ূরের দেখা মেলে না । অনেকেই এই ময়ূর দেখতে দূরদূরান্ত থেকে দেখতে আসেন । গ্রামবাসীদের দাবি, জাতীয় পাখি হিসাবে সংরক্ষণ করুক সরকার । তবে দীর্ঘদিন দিন ধরে প্রশাসনের কাছে আবেদনে জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। তাই কিছু সহৃদয় মানুষ ও গ্রামবাসীদের চেষ্টায় ময়ূরের খাবার ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে । কিন্ত তা পর্যাপ্ত নয়।
কুন্তী ও সরস্বতী দুই নদীর মাঝে সুগন্ধা গ্রাম পঞ্চায়েত ও রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সুগন্ধা, গান্ধিগ্রাম, চকপাড়া, চৌতাড়া, সাহেববাগান, ঝাপানডাঙা-সহ একাধিক জায়গায় ময়ূরের অবাধ বিচরণ । এরা সাধারণত বড় বড় আমগাছে থাকে । কিন্তু বর্তমানে যেভাবে গাছ কাটা চলেছে তাতে এদের থাকা ও প্রাকৃতিক খাবারের সমস্যা বাড়ছে । তার উপর আছে চোরা শিকারি । পর্যটকের বেশে ময়ূর ও ডিম চুরি করে নিয়ে যায় । গান্ধি গ্রামে উপেন কল্লার পরিবার ময়ূরের দেখভাল করে । বিভিন্ন জায়গা থেকে গম জোগাড় করে ময়ূরের খাবারের ব্যবস্থা করছে এখনও পর্যন্ত । কিন্তু তাঁরাও আর পেরে উঠছে না ।
আরও পড়ুন: অভয়ারণ্য থেকে লোকালয়ে, নীলকণ্ঠ ময়ূর দেখতে ভিড় শান্তিনিকেতনে
উপেন কল্লা বলেন, "দীর্ঘদিন ধরেই আমি ও আমার পরিবার ময়ূরের জন্য কাজ করছি । করোনাকালে গমের জন্য বিভিন্ন মানুষের কাছে গিয়েছি । কিন্তু যতদিন যাচ্ছে ততই কঠিন হচ্ছে কাজ করা । তাও চালিয়ে যাচ্ছি কোনওরকমে । সরকারের বিভিন্ন দফতরে গিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ সরকার যদি জাতীয় পাখির অবহেলা করে, সে ক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে নীলকন্ঠী ময়ূর । আগামিদিনে ময়ূরগুলিকে সংরক্ষণ না-করতে পারলে এই অঞ্চলে মযূরের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না ।"