কোন্নগর, 29 ডিসেম্বর: বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে অশান্তির জেরে আত্মঘাতী বছর পঁয়ত্রিশের মেয়ে ৷ যা দেখে আত্মহত্য়ার চেষ্টা মায়ের ৷ এমনই ঘটনা হুগলির কোন্নগরের ক্রাইফার রোডে ঘটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ৷ ঘটনাস্থল উত্তরপাড়া থানা এলাকার মধ্যে অবস্থিত ৷ ওই থানার পুলিশ স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ৷ মৃতদেহ উদ্ধার করে ৷ পুলিশ সবদিক খতিয়ে দেখছে ৷ প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে ৷ আত্মহত্যার চেষ্টা করায় গুরুতর জখম হয়েছেন বৃদ্ধা ৷ তাঁকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে ৷ সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ৷
কোন্নগরের ক্রাইফার রোডে রয়েছে অরণী অ্যাপার্টমেন্ট ৷ সেই অ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্ল্যাটে মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন বিপাশা মুখোপাধ্যায় ৷ বছর পঁয়ত্রিশের বিপাশা ডিভোর্সি ছিলেন ৷ তাঁর বাবা বুদ্ধদেব মুখোপাধ্য়ায় ও মা কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায়, দু’জনেই বৃদ্ধ ৷ বাবা অসুস্থ দীর্ঘদিন ধরে ৷ স্থানীয়দের দাবি, বছর সাতেক আগে ওই ফ্ল্যাটে থাকতে আসেন বিপাশারা ৷ ডিভোর্সের জেরে বাড়ি ফিরে আসার পর থেকেই মা-বাবার সঙ্গে বিপাশার অশান্তি চলত ৷ বৃহস্পতিবার রাতেও প্রতিবেশীরা ঝগড়ার আওয়াজ শুনেছেন ৷
প্রতিবেশী দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, শুক্রবার সকালে পরিচারিকা এসে তাঁকে জানান যে কৃষ্ণাদেবী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ৷ আর আত্মহত্যা করেছেন বিপাশা ৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশকে ৷ পুলিশ গিয়ে বিপাশার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ৷ পুলিশের অনুমান, বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাটি ঘটে ৷ শুক্রবার উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় কৃষ্ণাদেবীকে ৷ আর বুদ্ধদেববাবু বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে ৷ পুলিশ ওই ফ্ল্যাট থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে ৷ এই নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি পুলিশের কেউই ৷ তবে একটি সূত্রে খবর যে সুইসাইড নোটে লেখা, বাবার সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় বাবার গায়ে গরম ছ্যাঁকা দিয়ে ফেলেন বিপাশা । তাতে তিনি অনুতপ্ত৷ সেই কারণে তিনি এই পদক্ষেপ করেছেন ৷
সত্যিই কি তাই ? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে ? বিপাশাদের প্রতিবেশী দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করতেন না । এরা নিজেদের মতোই থাকতেন । কিছুদিন আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বিপাশার বাবা ৷ তাঁকে অনেকবার হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন ।’’ ফলে কী নিয়ে অশান্তি ছিল মুখোপাধ্যায় পরিবারে, তা নিয়ে পুলিশি তদন্তে কিছু উঠে আসে কি না, সেটাই দেখার !
আরও পড়ুন: