ETV Bharat / state

Mother And New Born Baby: নেই সদ্যজাতকে বড় করে তোলার ক্ষমতা, দম্পতির কাছে 8 দিনের শিশুকে দান করলেন অসহায় মা - কোর্ট পেপারে লিখে সন্তান দান

8 দিনের সদ্যজাতকে স্ট্যাম্প পেপারে লিখে দান করে দিলেন অসহায় মা ৷ হুগলির চাঁচুড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে ৷ তবে এর সঙ্গে আর্থিক কোনও লেনদেন যুক্ত নয় বলেই জানা গিয়েছে ৷ যে দম্পতি ওই শিশুটিকে দত্তক নিয়েছেন, তাঁদের দাবি কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁর একাজ করেননি, যা করেছেন মানবিকতার খাতিরে ৷

Etv Bharat
প্রতীকী ছবি
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 30, 2023, 11:09 PM IST

8 দিনের শিশুকে দম্পতির কাছে দান করলেন মা

চুঁচুড়া, 30 সেপ্টেম্বর: সন্তানের ভরণপোষন করতে অক্ষম মা । তাই বাধ্য হয়ে সদ্যজাত শিশুকে দান করে দিলেন তিনি, তুলে দিলেন চুঁচুড়ার এক নিঃসন্তান দম্পতির হাতে । ঘটনাটি চুঁচুড়া থানার চ্যাটার্জি বাগান এলাকার । তবে সেই দম্পত্তি ওই শিশুটিকে দত্তক নিয়েছেন, তাঁরা জানিয়েছেন এর জন্য ওই মহিলাকে কোনও টাকা দেননি তাঁরা ৷ কেবল একশো টাকার একটি স্ট্যাম্প পেপারে লিখে স্বেচ্ছায় এই শিশুচিকে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছেন ওই অসহায় মহিলা ৷ তবে এইভাবে কোনও শিশুকে কী দত্তক নেওয়া যায় ? এই প্রশ্নের জবাবে ওই দম্পতি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁরা এই কাজ করেননি ৷ এত নিয়মের কথাও তাঁরা জানেন না ৷ তাঁরা যা করেছেন একটি শিশুকে বাঁচাতে মানবিকতার খাতিরে করেছেন ৷ তাঁদের আশঙ্কা, শিশুটিকে তাঁরা না নিলে হয়তো তার মা শিশুটিকে ফেলে দিত, তাই শিশুটিকে মানুষ করতেই তাঁরা এই কাজ করেছেন ৷

জানা গিয়েছে, যে শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তার মা সুগন্ধার এক ইঁটভাটার এক শ্রমিক। আর্থিক সামর্থ না থাকাতেই তিনি শিশুটিকে মানুষ করতে পারবেন না বলে পরিচিত কয়েকজনকে জানিয়েছিলেন ৷ তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়েই শিশুটিকে নিতে উদ্যোগী হন ওই দম্পতি ৷ এই প্রসঙ্গে ওই দম্পতির দাবি, তাঁরা নিঃসন্তান ৷ ওই মহিলা শিশুটিকে মানুষ করতে পারবেন না এটা জেনেই তাঁরা ওই শিশুটিকে নিয়েছেন ৷ তাঁদের কথায়,"ওই মহিলা শিশুর দ্বায়িত্ব নিতে পারবেন না। তাই আমাদের কাছে মানুষ করার জন্য দিয়েছেন। যাতে কোন বিপদে না-পড়তে হয় তার জন্য কোর্ট পেপারে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে ।"

তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চুঁচুড়া থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি । শিশু বিক্রির কোনও অভিযোগ আসেনি ৷ কোদালিয়া দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শিশুটির মাত্র 8-9 দিন বয়স ৷ কিন্তু কোর্ট পেপারে এভাবে লিখে শিশু দত্তক নেওয়া যায় না ৷ এই দম্পতি হয়তো এই বিষয়টা জানতেন না ৷ তাই চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁদের আইনি পরামর্শ দিয়ে, প্রশাসনের সহয়োগিতায় নিয়ম মেনে শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে ৷ তবে দুধের শিশুটিকে এভাবে এখনই কেন তাঁর মায়ের থেকে নেওয়া হল, এই প্রশ্নও উঠছে ৷

এই বিষয়ে, চুঁচুড়ার মহকুমা শাসক সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি বলেন, "বিষয়টি খবর নিয়ে অবশ্যই দেখব । তবে কী উদ্দেশ্যে শিশুটিকে নেওয়া হয়েছে সেটাও দেখতে হবে । স্ট্যাম্প পেপারে লিখিয়ে নিলে শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া যায় না । সরকারের অন্তর্গত একটি সংস্থা আছে তার মাধ্যমে শিশু দত্তক নিতে হয় । দম্পতির যদি সত্যি সৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আদালত ও পোর্টালের মাধ্যমে যোগাযোগ করে আইনত শিশু নেওয়া যেতে পারে ।" উল্লেখ্য গত 22 সেপ্টেম্বর চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন ইঁট ভাটার ওই মহিলা শ্রমিক। সুগন্ধা অঞ্চলে ইটভাটার শ্রমিক ওই মহিলা । গত 27 তারিখ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি । তার পরেই তিনি শিশু হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন এবং ওই সদ্যজাতকে তুলে দেন চ্যাটার্জি বাগান এলাকার ওই দম্পতিকে ।

আরও পড়ুন: খুনের পাঁচদিনের মাথায় কিনারা, গ্রেফতার দত্তপুকুর প্রৌঢ়া খুনের মাস্টারমাইন্ড

একটি একশো টাকার কোর্ট পেপারে তিনি লিখে দেন ওই শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ত্ব নিতে অপারগ । তাই লিখিত ভাবে তাঁর সন্তান হস্তান্তর করছেন । শনিবার এই খবর পেয়েই দম্পতির বাড়িতে ছুটে যান কোদালিয়া 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী । তিনি দম্পতিকে বোঝান শিশু গ্রহণের এই পদ্ধতি অবৈধ। সঠিকভাবে দত্তক গ্রহণের সরকারি কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, ওই পরিবারকে মহকুমা শাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি ।

8 দিনের শিশুকে দম্পতির কাছে দান করলেন মা

চুঁচুড়া, 30 সেপ্টেম্বর: সন্তানের ভরণপোষন করতে অক্ষম মা । তাই বাধ্য হয়ে সদ্যজাত শিশুকে দান করে দিলেন তিনি, তুলে দিলেন চুঁচুড়ার এক নিঃসন্তান দম্পতির হাতে । ঘটনাটি চুঁচুড়া থানার চ্যাটার্জি বাগান এলাকার । তবে সেই দম্পত্তি ওই শিশুটিকে দত্তক নিয়েছেন, তাঁরা জানিয়েছেন এর জন্য ওই মহিলাকে কোনও টাকা দেননি তাঁরা ৷ কেবল একশো টাকার একটি স্ট্যাম্প পেপারে লিখে স্বেচ্ছায় এই শিশুচিকে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছেন ওই অসহায় মহিলা ৷ তবে এইভাবে কোনও শিশুকে কী দত্তক নেওয়া যায় ? এই প্রশ্নের জবাবে ওই দম্পতি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁরা এই কাজ করেননি ৷ এত নিয়মের কথাও তাঁরা জানেন না ৷ তাঁরা যা করেছেন একটি শিশুকে বাঁচাতে মানবিকতার খাতিরে করেছেন ৷ তাঁদের আশঙ্কা, শিশুটিকে তাঁরা না নিলে হয়তো তার মা শিশুটিকে ফেলে দিত, তাই শিশুটিকে মানুষ করতেই তাঁরা এই কাজ করেছেন ৷

জানা গিয়েছে, যে শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তার মা সুগন্ধার এক ইঁটভাটার এক শ্রমিক। আর্থিক সামর্থ না থাকাতেই তিনি শিশুটিকে মানুষ করতে পারবেন না বলে পরিচিত কয়েকজনকে জানিয়েছিলেন ৷ তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়েই শিশুটিকে নিতে উদ্যোগী হন ওই দম্পতি ৷ এই প্রসঙ্গে ওই দম্পতির দাবি, তাঁরা নিঃসন্তান ৷ ওই মহিলা শিশুটিকে মানুষ করতে পারবেন না এটা জেনেই তাঁরা ওই শিশুটিকে নিয়েছেন ৷ তাঁদের কথায়,"ওই মহিলা শিশুর দ্বায়িত্ব নিতে পারবেন না। তাই আমাদের কাছে মানুষ করার জন্য দিয়েছেন। যাতে কোন বিপদে না-পড়তে হয় তার জন্য কোর্ট পেপারে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে ।"

তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চুঁচুড়া থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি । শিশু বিক্রির কোনও অভিযোগ আসেনি ৷ কোদালিয়া দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শিশুটির মাত্র 8-9 দিন বয়স ৷ কিন্তু কোর্ট পেপারে এভাবে লিখে শিশু দত্তক নেওয়া যায় না ৷ এই দম্পতি হয়তো এই বিষয়টা জানতেন না ৷ তাই চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁদের আইনি পরামর্শ দিয়ে, প্রশাসনের সহয়োগিতায় নিয়ম মেনে শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে ৷ তবে দুধের শিশুটিকে এভাবে এখনই কেন তাঁর মায়ের থেকে নেওয়া হল, এই প্রশ্নও উঠছে ৷

এই বিষয়ে, চুঁচুড়ার মহকুমা শাসক সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি বলেন, "বিষয়টি খবর নিয়ে অবশ্যই দেখব । তবে কী উদ্দেশ্যে শিশুটিকে নেওয়া হয়েছে সেটাও দেখতে হবে । স্ট্যাম্প পেপারে লিখিয়ে নিলে শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া যায় না । সরকারের অন্তর্গত একটি সংস্থা আছে তার মাধ্যমে শিশু দত্তক নিতে হয় । দম্পতির যদি সত্যি সৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আদালত ও পোর্টালের মাধ্যমে যোগাযোগ করে আইনত শিশু নেওয়া যেতে পারে ।" উল্লেখ্য গত 22 সেপ্টেম্বর চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন ইঁট ভাটার ওই মহিলা শ্রমিক। সুগন্ধা অঞ্চলে ইটভাটার শ্রমিক ওই মহিলা । গত 27 তারিখ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি । তার পরেই তিনি শিশু হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন এবং ওই সদ্যজাতকে তুলে দেন চ্যাটার্জি বাগান এলাকার ওই দম্পতিকে ।

আরও পড়ুন: খুনের পাঁচদিনের মাথায় কিনারা, গ্রেফতার দত্তপুকুর প্রৌঢ়া খুনের মাস্টারমাইন্ড

একটি একশো টাকার কোর্ট পেপারে তিনি লিখে দেন ওই শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ত্ব নিতে অপারগ । তাই লিখিত ভাবে তাঁর সন্তান হস্তান্তর করছেন । শনিবার এই খবর পেয়েই দম্পতির বাড়িতে ছুটে যান কোদালিয়া 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী । তিনি দম্পতিকে বোঝান শিশু গ্রহণের এই পদ্ধতি অবৈধ। সঠিকভাবে দত্তক গ্রহণের সরকারি কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, ওই পরিবারকে মহকুমা শাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.