চন্দননগর, 9 জানুয়ারি: প্রায় 14 কোটি টাকা খরচ করে এই আলো হাব তৈরি করে রাজ্য সরকার। এই ঘরের জন্য টেন্ডার করা হয়। অগ্রিম 50 হাজার টাকার ভিত্তিতে 302 স্কোয়ার ফুট ঘর দেওয়া হয়। তার মধ্যে মাসে 1800 টাকা ভাড়া, 700 টাকা মেন্টেনেন্স ও বৈদ্যুতিক বিল আলাদা দিতে হবে। সেই কারণে শিল্পীরা অনেকেই পিছিয়ে গিয়েছেন। সোমবার এই ঘর প্রদান অনুষ্ঠান করা হয় রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কেন এত কম সংখ্যক শিল্পীদের নিয়ে এই আলো হাব চালু হল (Most Light Artists Did Not Take Room of Chandannagar Light Hub), সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
আলোক শিল্পের জন্য দু'টিতলা ব্যবহার করা হবে। তিন তলায় আলোক শিল্পের কারিগরি শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শুরু হলেও মন্ত্রী ও সাধারণ মানুষ কেউ জানেন না। সে নিয়েও মন্ত্রী ও চন্দননগর বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন প্রশ্ন তোলেন। প্রশিক্ষণের প্রচার নেই কেন। এছাড়াও আলো হাবের ঘর বিতরণ অনুষ্ঠান চলাকালীন সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দেওয়া হয়নি। কী কারণে লুকোচুরি প্রশ্ন বিরোধী দলের। তবে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের দাবি, আগামিদিনে কোনও ঘর ফাঁকা থাকবে না। সব পূরণ হয়ে যাবে। বাংলার মানুষের জন্যই এই আলো হাব তৈরি হয়েছে। তবে বিরোধী সিপিএম ও বিজেপির অভিযোগ রাজ্য সরকারের সঠিক চিন্তাভাবনা নেই ও সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।
এ বিষয়ে বিজেপি নেতা দীপাঞ্জন গুহ বলেন, "আলো হাব যেখানে করা হয়েছে ব্যবসার মূল কেন্দ্র বিন্দু থেকে অনেকটাই দূরে। একে তো আয়ের উপায় নেই। তার উপর গরিব আলো শিল্পীদের উপর টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে। চন্দননগর আলোর জন্য বিখ্যাত সেখানে সরকারের সাবসিটি দিয়ে ভাবা উচিত ছিল। সাংবাদিকদের কাছে এটা লুকানো হচ্ছে। এটা চরম অপমান করা হয়েছে।"চন্দননগর সিপিএম কাউন্সিলর অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন নিজেই বলেছেন কারিগরি শিক্ষার ট্রেনিং হয়েছে তিনি জানেন না। কেন সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। আমার মনে হয় আলোক শিল্পীরা এই হাব থেকে বঞ্চিত হলেন।"
আরও পড়ুন: এক বছর পরও 'অন্ধকারে' আলো-হাব, বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল
দোকান-ঘর প্রাপক এক আলোক শিল্পী অসীম দে বলেন, "চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে মোট 250 জন আলোক শিল্পী রয়েছে। তার মধ্যে আলোক শিল্পী সংগঠনের 110 জন শিল্পী রয়েছেন। আলো হাবে যাওয়ার জন্য অনেকে হয়তো উৎসাহী নন। কিন্ত ভবিষ্যতে অনেকেই যাবেন। আমাদের কাজের যোগ্যতা থাকলে ওই জায়গাটা তৈরি করে নিতে হবে।" কারিগরি শিক্ষার ডিরেক্টর বাপ্পাদিত্য হালদার বলেন, "আলো হাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কারিগরি শিক্ষার কোর্স রয়েছে। তার মধ্যে চারটি কোর্স চালানো হবে। মন্ত্রী বলছেন এই শিক্ষার আরও প্রচার করার জন্য। যাতে সবার নজরে আসে। এখান থেকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।"
তবে এ বিষয়ে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোক শিল্পীদের জন্য এই আলো হাবের তৈরি ব্যবস্থা করেন। আজকে আলোক শিল্পীদের 14 জনকে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হল। বাকি 46 টারও টেন্ডার করা হবে। এখানে যারা আলোকশিল্পীরা আছেন তাঁরা ব্যবসা করবেন। তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম এই প্রশিক্ষণ নিয়ে উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যার মাধ্যমে আলোক শিল্পের উন্নতি ঘটবে। আর কয়েক দিনের মধ্যে বাকি ঘরগুলিও শিল্পীরা নিয়ে নেবেন।" আলোক শিল্পের কারিগরি শিক্ষা শুরু হলেও মন্ত্রীর জানা ছিল না। সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, "হ্যাঁ জানতাম। কিন্তু কী কী নতুন নতুন কারিগরি শিক্ষার আসছে সেটা মানুষের কাছে প্রচার ব্যবস্থা মধ্যে আনার আলোচনা করেছি। এই আলো হাব বাংলার মানুষের জন্য আলো হাব করা হয়েছে।"