ETV Bharat / state

সিঙ্গুরের "লক্ষ্মী"র অন্নে পেট চলে 7 অনাথের - অনাথ শিশু

নিজে সহায় সম্বলহীন হয়েও ৭ অনাথকে মানুষ করছেন সিঙ্গুরের মির্জাপুর দক্ষিণ মামুদপুরের লক্ষ্মী দাস। একাজে তাঁকে সাহায্য করেন কেউ কেউ।

orphan children
অনাথ শিশু
author img

By

Published : Mar 2, 2020, 1:59 PM IST

Updated : Mar 3, 2020, 6:14 PM IST

সিঙ্গুর, ২ ফেব্রুয়ারি : নিজেরই দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোটেনা। রয়েছে বছর ১৪-এর এক সন্তান। কিন্তু, তাতে কী ? ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। সেই প্রবাদকেই জীবনের ব্রত করে নিয়ে নিজের ও সন্তানের পেট চালানোর পাশাপাশি কাঁধে তুলে নিয়েছেন আরও ৭ নাবালকের ভরন-পোষণের দায়িত্ব। এমন ৭ নাবালক, যাদের আগে-পিছনে কেউ নেই। এককথায়, অনাথ। দিনের পর দিন এই নাবালকদের লালন-পালনের জন্য নিজে রাস্তায় নেমেছেন সিঙ্গুরের মির্জাপুর দক্ষিণ মামুদপুরের লক্ষ্মী দাস। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, একাজ করতে ভিক্ষা করেন লক্ষ্মীদেবী। তা সত্ত্বেও তিনি থেমে যাননি।

স্বামী নিয়ে সংসার করছিলেন। কিন্তু, ২০০৪ সালে স্বামী ছেড়ে চলে যান। এক সন্তানকে নিয়ে কোনওরকমে দিন কাটাচ্ছিলেন লক্ষ্মীদেবী। সেই সময় চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে আয়ার কাজ করতেন। কাজে যাওয়ার সময় স্টেশনে অসহায় পথশিশুদের দেখে তাঁরা মন কাঁদত। সেখান থেকেই অনাথ আশ্রম করার ভাবনা। তাই হাজরা, উলুবেড়িয়া, সিঙ্গুর সহ রেলবস্তি ও বিভিন্ন এলাকার অনাথদের নিয়ে শুরু করেন তাঁর সবুজানন্দ আশ্রম। এদের মানুষ করতে কারও কাছে সবজি, তো কারও কাছ থেকে মাছ, কাউকে বলেন কিছুটা চালের ব্যবস্থা করে দিতে। এভাবেই তাদের মুখে দিনের পর দিন তুলে দিচ্ছেন অন্ন। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন পড়াশোনার খরচও।

নিজেরই দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোটেনা অথচ ৭ নাবালকের ভরন-পোষণের দায়িত্ব

লক্ষ্মীদেবীর এই লড়াইয়ের জেরেই এখন দুচোখ ভরা স্বপ্ন সূরয, রমেন, রকিদের। রেলবস্তি বা ফুটপাতের জীবন তারা ভুলে যেতে চায়। লক্ষ্মীদেবীর স্বপ্ন, তাঁর সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে যেন এই নাবালকদের দুবেলা দুমুঠো খেতে দিতে পারেন। পাশাপাশি তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এদের নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা । কাউকে স্নান করাচ্ছেন, কাউকে পড়া দেখিয়ে দিচ্ছেন । আবার বাচ্চাদের পেটের ভাত জোগাতে থলি হাতে বেরোতে হচ্ছে তাঁকে । স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কিংবা মাদার টেরিজার জীবন থেকে প্রেরণা খোঁজেন তিনি ।

সিঙ্গুরের মির্জাপুর দক্ষিণ মামুদপুরে দেড় কাঠা জমির উপর বাড়ি তৈরি করেছেন লক্ষ্মীদেবী। সেখান থেকেই বড় করে তুলছেন অনাথদের। মাছ ব্যবসায়ী প্রদীপ শাসমল বলেন, "দিদির মধ্যে মাতৃভাব আছে। বাচ্চাদের কোলে করে মানুষ করছেন। তাঁর জন্য আমরা কিছুই করতে পারি না। তবুও যতটুকু পারি করার চেষ্টা করি। বাচ্চাদের প্রোটিনের জন্য আমার দোকান থেকে একটু মাছের ব্যবস্থা করে দিই। আমি গেলে ওরা সেটা নিয়ে আনন্দ করে। আমার মতো অনেকেই আছে যারা ওঁকে সাহায্য করেন। আরও অনেকে যদি হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে লক্ষ্মীদেবীর উদ্দেশ্য সফল হয়।"

জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তাঁর অবদান অন্যদের কাছে পাথেয় হয়ে থাকুক।

সিঙ্গুর, ২ ফেব্রুয়ারি : নিজেরই দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোটেনা। রয়েছে বছর ১৪-এর এক সন্তান। কিন্তু, তাতে কী ? ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। সেই প্রবাদকেই জীবনের ব্রত করে নিয়ে নিজের ও সন্তানের পেট চালানোর পাশাপাশি কাঁধে তুলে নিয়েছেন আরও ৭ নাবালকের ভরন-পোষণের দায়িত্ব। এমন ৭ নাবালক, যাদের আগে-পিছনে কেউ নেই। এককথায়, অনাথ। দিনের পর দিন এই নাবালকদের লালন-পালনের জন্য নিজে রাস্তায় নেমেছেন সিঙ্গুরের মির্জাপুর দক্ষিণ মামুদপুরের লক্ষ্মী দাস। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, একাজ করতে ভিক্ষা করেন লক্ষ্মীদেবী। তা সত্ত্বেও তিনি থেমে যাননি।

স্বামী নিয়ে সংসার করছিলেন। কিন্তু, ২০০৪ সালে স্বামী ছেড়ে চলে যান। এক সন্তানকে নিয়ে কোনওরকমে দিন কাটাচ্ছিলেন লক্ষ্মীদেবী। সেই সময় চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে আয়ার কাজ করতেন। কাজে যাওয়ার সময় স্টেশনে অসহায় পথশিশুদের দেখে তাঁরা মন কাঁদত। সেখান থেকেই অনাথ আশ্রম করার ভাবনা। তাই হাজরা, উলুবেড়িয়া, সিঙ্গুর সহ রেলবস্তি ও বিভিন্ন এলাকার অনাথদের নিয়ে শুরু করেন তাঁর সবুজানন্দ আশ্রম। এদের মানুষ করতে কারও কাছে সবজি, তো কারও কাছ থেকে মাছ, কাউকে বলেন কিছুটা চালের ব্যবস্থা করে দিতে। এভাবেই তাদের মুখে দিনের পর দিন তুলে দিচ্ছেন অন্ন। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন পড়াশোনার খরচও।

নিজেরই দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোটেনা অথচ ৭ নাবালকের ভরন-পোষণের দায়িত্ব

লক্ষ্মীদেবীর এই লড়াইয়ের জেরেই এখন দুচোখ ভরা স্বপ্ন সূরয, রমেন, রকিদের। রেলবস্তি বা ফুটপাতের জীবন তারা ভুলে যেতে চায়। লক্ষ্মীদেবীর স্বপ্ন, তাঁর সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে যেন এই নাবালকদের দুবেলা দুমুঠো খেতে দিতে পারেন। পাশাপাশি তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এদের নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা । কাউকে স্নান করাচ্ছেন, কাউকে পড়া দেখিয়ে দিচ্ছেন । আবার বাচ্চাদের পেটের ভাত জোগাতে থলি হাতে বেরোতে হচ্ছে তাঁকে । স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কিংবা মাদার টেরিজার জীবন থেকে প্রেরণা খোঁজেন তিনি ।

সিঙ্গুরের মির্জাপুর দক্ষিণ মামুদপুরে দেড় কাঠা জমির উপর বাড়ি তৈরি করেছেন লক্ষ্মীদেবী। সেখান থেকেই বড় করে তুলছেন অনাথদের। মাছ ব্যবসায়ী প্রদীপ শাসমল বলেন, "দিদির মধ্যে মাতৃভাব আছে। বাচ্চাদের কোলে করে মানুষ করছেন। তাঁর জন্য আমরা কিছুই করতে পারি না। তবুও যতটুকু পারি করার চেষ্টা করি। বাচ্চাদের প্রোটিনের জন্য আমার দোকান থেকে একটু মাছের ব্যবস্থা করে দিই। আমি গেলে ওরা সেটা নিয়ে আনন্দ করে। আমার মতো অনেকেই আছে যারা ওঁকে সাহায্য করেন। আরও অনেকে যদি হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে লক্ষ্মীদেবীর উদ্দেশ্য সফল হয়।"

জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তাঁর অবদান অন্যদের কাছে পাথেয় হয়ে থাকুক।

Last Updated : Mar 3, 2020, 6:14 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.