রিষড়া, 6 নভেম্বর : হুগলির রিষড়া ওয়েলিংটন জুট মিলে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল ৷ কর্তৃপক্ষের দাবি, জুট মিলের অফিস, ম্য়ানেজারের কোয়ার্টার ও একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন শ্রমিকরা ৷ যদিও ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রমিকরা ৷ সূত্রের খবর, শনিবার সকালে মিলের কাজে যোগ দিতে আসেন তাঁরা ৷ কিন্তু, কাজ না পেয়ে ক্ষেপে যান শ্রমিকরা ৷ তার জেরেই শুরু হয় অশান্তি ৷
আরও পড়ুন : Haldia Exide : কারখানার জন্য জমি দিয়ে মেলেনি চাকরি, হলদিয়ায় বিক্ষোভ জমিদাতাদের
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, জুট মিলের কয়েকটি বিভাগে কাজ হলেও সব শ্রমিক কাজ পাচ্ছেন না ৷ গত 18 অক্টোবর মিল সম্পূর্ণ খোলার কথা ছিল ৷ কিন্তু, তা হয়নি ৷ ফলে কাজ না পেয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শ্রমিকরা ৷ বাড়ছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ৷ অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা এদিন পরিকল্পিতভাবে মিলে হামলা চালিয়েছেন ৷ যাতে মিল খোলার প্রচেষ্টা বানচাল করে দেওয়া যায় ৷ এদিন গন্ডগোলের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ৷ পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ৷ উত্তেজনা থাকায় মিলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ৷
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওয়েলিংটন জুট মিলে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক-এর নোটিস ঝোলায় কর্তৃপক্ষ ৷ এরপর বেশ কয়েকবার বৈঠকের পর অক্টোবর মাসে রাজ্য়ের শ্রম মন্ত্রী বেচারাম মান্নার হস্তক্ষেপে মিল খোলে ৷ 10 অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয় উৎপাদন ৷ পর্যাক্রমে সব শ্রমিককে কাজ দেওয়া হবে বলে নোটিসও দেয় মিল কর্তৃপক্ষ ৷ কিন্তু, তারপর প্রায় একমাস কাটতে চলেছে ৷ অথচ বহু শ্রমিকই এখনও বেকার ৷ তার জেরেই এদিন মিলে অশান্তি ছড়ায় বলে মনে করা হচ্ছে ৷
মিলের নিরাপত্তারক্ষী রঘুনন্দন প্রসাদ গুপ্তা জানান, এদিন সকালে শ্রমিকরা তাঁর কাছেই প্রথমে আসেন ৷ মিলে এসে ম্যানেজারকে খুঁজছিলেন তাঁরা ৷ কিন্তু, ম্যানেজার তখন ছিলেন না ৷ তাঁকে না পেয়ে শ্রমিকরা প্রৌঢ় নিরাপত্তারক্ষীকেই মারধর করেন বলে অভিযোগ ৷ এরপরই অফিস ঘরে, কোয়ার্টারে ভাঙচুর করা হয় ৷
আরও পড়ুন : Train Passengers Protest: লোকাল ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে নলপুরে বিক্ষোভ যাত্রীদের
অন্যদিকে, মিলের শ্রমিক মহম্মদ জাভেদের বক্তব্য হল, ‘‘ম্যানেজার খালি বলেন আজ কাজ দেব, কাল কাজ দেব ৷ আজ সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়েও কাজ মেলেনি ৷ বলা হয়েছিল, 18 তারিখ থেকে মিল পুরো চলবে ৷ তাও হয়নি ৷ আমরা চাই, সবাইকে কাজ দেওয়া হোক ৷ আমরা কোনও ভাঙচুর করিনি ৷ উল্টে মালিকপক্ষই মিলের ভিতরের জিনিসপত্র বাইরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে ৷ মিলের জিনিস চুরি করানো হচ্ছে ৷’’
স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাকির আলি বলেন, ‘‘সকালে মিলের কাজ শুরু হতেই বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা মিলের অফিসারের ঘর ভাঙচুর করেন ৷ এই তিনটি সংগঠন চাইছে না মিলটা চলুক ৷ যাঁরা এর সঙ্গে যুক্ত তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে ৷ আর এই তিন সংগঠনকে মিল থেকে সরানোর দাবি জানাচ্ছি ৷’’