হুগলি, 26 জুলাই : জেলাজুড়ে BJP কর্মীদের ওপর সন্ত্রাস, গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগে জেলা সভাপতি সুবীর নাগের নেতৃত্বে আজ SP অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় BJP কর্মীরা ৷ নেতৃত্ব দেন রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু ৷ বুদ্ধিজীবীদের চিঠিপত্র লেখা নিয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন সায়ন্তন ৷ বলেন, "তৃণমূল কয়েকজন বুদ্ধিজীবীকে নামিয়েছেন ৷ এরা ভাড়া করা ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ধ্যায় একটা বোতল ধরিয়ে দিলে এরা তৃণমূলের হয়ে লাফালাফি শুরু করে দেবে ৷ সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে 500-1000 টাকায় বিক্রি হয়ে গেছেন ৷"
সায়ন্তন বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের যে সব বুদ্ধিজীবীরা চিঠিপত্র লিখেছেন, তাঁদের কাজকর্ম নেই ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 500-1000 টাকা দিয়ে এদের কিনে নেন ৷ আমি আবারও বলছি এরা সরকারের কেনা গোলাম ৷ পাশের বাড়ির লোকও ওঁদের কথা জিজ্ঞাসা করে না ৷ প্রচারের আলোয় থাকার জন্য এসব করছেন ৷ আর কিছু রোজগারপাতির আশায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখছেন ৷ এর থেকে ভালো হত, জয়শ্রীরাম বলার পর যে কর্মী খুন হয়েছে তারপর যদি চিঠি লেখা হত ৷ অধ্যাপককে পেটানো হয়েছে তারপর যদি চিঠি লিখত ৷ অত্যন্ত মুখটা একটু উজ্জ্বল হত ৷ আমি তো বলেছি ওঁরা যেখানে যাবেন, দলের কর্মীরা যেন ওষুধ দেওয়ার জন্য তৈরি থাকে ৷ এরা কেউ রামমোহন রায়, রবীন্দ্রনাথ বা বিদ্যাসাগর নন ।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে BJP নেতার বক্তব্য, "দিদিমণি প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, রাস্তার ভিখারিতে পরিণত হয়েছেন ৷ আজকাল তো সব জায়গায় কার্টুন চলছে ৷ কে একটা সাদা মতো ছুটে যাচ্ছে আর তার পিছনে জয়শ্রীরাম বলছে ৷" DA-ইশুকে কটাক্ষ করে সায়ন্তন বলেন, "পুলিশ তালপাতার সেপাইয়ের মত পাঠকাঠি হয়ে গেছে । CRPF ও রাস্তা দিয়ে চলে আর আপনারাও রাস্তা দিয়ে চলেন । ওরা পুরো মাইনে পায়, পুরো DA পায় । আর আপনাদের তৃণমূলের ক্যাডার বানিয়ে রেখেছে ।" সায়ন্তন আরও বলেন, "আগামী বিধানসভা ভোটে এর প্রতিশোধ নেব । আর ছ'মাস পর আমাদের সরকার চালাতে হবে । থানায় ভাঙচুর করার দরকার নেই ৷ এই পুলিশকেই আমাদের ব্যবহার করতে হবে ৷ এই বিল্ডিংই ব্যবহার করতে হবে৷ ছ'মাসের জন্য এগুলো ভেঙে কী হবে ? চাইলে আমরা একটা দুটো থানা জ্বালিয়ে দিতে পারি, চাইলে আমরা একটা দুটো তৃণমূল কর্মীর হাত ভেঙে দিতে পারি । তাই ছ'মাস, এক বছর অপেক্ষা করুন ।"
কাটমানি ইশুতে সরকারকে একহাত নেন সায়ন্তন ৷ বলেন, "হুগলির মানুষের কাছে যারা টেট পরীক্ষায় পাশ করানোর জন্য টাকা নিয়েছেন, যারা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছেন তাঁদের বাড়ি যান । মারধর করবেন না । মিষ্টি নিয়ে যান, এখন মিষ্টি মুখ করান । পরে আমরা ওষুধ খাওয়াব । আমাদের সরকার এসে গেলে তেতো ওষুধ খাওয়াব । যারা কাটমানি খেয়েছে তাদের জমি-বাড়ি বিক্রি করে শোধ দেব । পুলিশ রাস্তা থেকে টাকা তুলছে আর সেই টাকা যাচ্ছে ভাইপোর কাছে । সেই টাকাও আমরা উদ্ধার করব । BJP কর্মীদের মিথ্যে মামলা দিয়েছে যে পুলিশ, তাদের মাইনের টাকা থেকে মামলার টাকা কাটব ৷ ক্ষমতায় এলে, তৃণমূল আর কতদিন চমকাবে-ধমকাবে । আমরা লোকসভায় দেখে নিয়েছি, বিধানসভায় দেখে নেব ।"
সায়ন্তন বসুর এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, "বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে এধরনের মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক ৷ আমরা যারা বাংলার কৃষ্টিতে বিশ্বাস করি, তাদের প্রতিবাদ জানানো দরকার ৷"