হুগলি, 7 এপ্রিল: সরকারি রাস্তার জমিতে তৈরি হয়েছিল বাংলা আবাস যোজনার ঘর। আদালতের নির্দেশে সরকারি খরচে তৈরি ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন। একদিকে যেমন সরকারি টাকার অপব্যয় হল, অন্যদিকে ঘরছাড়া হলেন এক মহিলা (Homeless woman demolishes against Amnan Panchayat)। তাতে গৃহহীন হলেন এক অসহায় মহিলা কল্পনা হেমরম। ঘটনাটি আমনান গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশ্বড়া জোড়া অশ্বত্থ তলার ।
দীর্ঘ 38 বছর ধরে হরিপাল তারকেশ্বর 17 নম্বর রোডের পাশে পিডব্লুউডি (pwd) জায়গায় বাস করছিলেন তিনি। আমনান গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফের 2019-20 আর্থিক বছরে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকায় সরকারি ঘর দেওয়া হয়। শুধু উনি নন, তার পাশেই রাস্তার জায়গায় আরও বেশ কয়েকটি বাংলা আবাস যোজনার ঘর দেওয়া হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের বক্তব্য, পঞ্চায়েত কিভাবে সরকারি জায়গায় আবাস যোজনার ঘর দেয়। আমনানে এক কামরার ঢালাই ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করেছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশে সেই ঘর ভেঙে দিল প্রশাসন। আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন ওই মহিলা। প্রশ্ন উঠেছে রাস্তার জায়গায় কিভাবে পঞ্চায়েত এই সরকারি ঘর দিতে পারে । এতে সরকারের টাকার অপচয় করার প্রশ্ন তুলেছেন পোলবার বিজেপির নেতারা। সেই সঙ্গে অবিলম্বে কল্পনাদেবীকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি উঠেছে। তবে পঞ্চায়েতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে ওই ঘর ভাঙা হয়েছে। সরকারি নির্দেশে আবাস যোজনার ঘর দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ অনুযায়ী ঘর ভাঙা হয়েছে। তাঁকে নতুন ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
কল্পনাদেবী বলেন, "আগে টালির ঘরে বাস করতাম। আমনান পঞ্চায়েত থেকে এই জায়গায় ঘর দেওয়া হল। আবার ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, এখন কোথাও যাব।বুঝতে পারছি না।" বিজেপি নেতা অর্পণ চট্টপাধ্য়ায় বলেন, "একজন আদিবাসী নিরক্ষর মহিলা কাগজপত্রের কি বুঝবে। সরকারিভাবে যে ঘর দেওয়া হয়েছে তাঁকে দেখেই তো দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে এখন ওই দরিদ্র মহিলা কোথায় যাবেন।"
আমনান পঞ্চায়েত উপপ্রধান নির্মল ঘড়া বলেন, "আদিবাসী মানুষ যাতে থাকতে পারে তার জন্যই ঘর দিয়েছিলাম। ব্যক্তিগত মালিকানায় সামনের জমিতে ঘর করেছেন ওই মহিলা। হাইকোর্টে আবেদন জানান হয় সামনের জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য। সেই মতো আজ ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে ওঁর ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। একটা সময় নিজের জমি না থাকলে ঘর হত না। পরবর্তী সময়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও জায়গায় না থাকলে যে জায়গায় বাস করছে সেখানেই বাড়ি করে দেওয়া হয় সমস্ত টাকা অপচয় হল, ঠিকই কিন্তু কিছু করার নেই।"
সদর মহকুমা শাসক সৈকত গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, "এটা করা বেআইনি হয়েছে। যখন আবাস যোজনার বাড়ি অনুমোদন করা হয় তখন উপভোক্তার জমির কাগজ দেখা হয়। এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত কি করছিল জানি না। হাইকোর্টের নির্দেশে বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ওই মহিলাকে অন্য জায়গায় ঘর করে দেওয়া হবে।"