ETV Bharat / state

Gautam Ghosh: চন্দননগরে মিউজিয়াম উদ্বোধনে পরিচালক গৌতম ঘোষ, জানালেন নতুন ছবির কথা

চন্দননগরের অন্যতম প্রাচীন কলেজ ডুপলে ৷ পরবর্তী সময়ে সেই কলেজ পরিচিত হয় চন্দননগর কলেজ নামে ৷ সেই কলেজে তৈরি হল মিউজিয়াম ৷ চন্দননগরের বিপ্লবীদের উত্তরাধিকার, শহরের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কলেজটি মিজিয়াম হিসাবে স্থাপন করা হয়েছে। মিউজিয়ামের শুভ সূচনা করেন পরিচালক গৌতম ঘোষ ৷

Etv Bharat
চন্দননগরে মিউজিয়াম উদ্বোধনে পরিচালক গৌতম ঘোষ
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 7, 2023, 11:18 AM IST

চন্দননগর, 7 অক্টোবর: ইংরেজদের চাপে পড়ে প্রায় দু'দশক বন্ধ ছিল চন্দননগরের বিখ্যাত ডুপলে কলেজ ৷ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে কলেজ। সেই অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কলেজ। পরবর্তী সময় অনেক লড়াইয়ের পর আবারও পথ চলা শুরু করে এই কলেজ ৷ নাম হয় চন্দননগর কলেজ ৷ বর্তমানে সেই কলেজে তৈরি করা হল মিউজিয়াম ৷

চন্দননগরের বিপ্লবীদের উত্তরাধিকার, শহরের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কলেজটি মিজিয়াম হিসাবে স্থাপন করা হয়েছে। সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ-এর তত্ত্বাবধানে কলেজের 161 বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ভবনে স্থাপন করা হয় চন্দননগর কলেজ মিউজিয়াম। মোমবাতি জ্বালিয়ে মিউজিয়ামের শুভ সূচনা করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক গৌতম ঘোষ ৷ উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ সরকার, চন্দননগর পুরনিগমের মহানাগরিক রাম চক্রবর্তী ও অন্যান্যরা।

মিউজিয়াম উদ্বোধনে এসে ছবির কথা জানান গৌতম ঘোষ

পরিচালক গৌতম ঘোষ এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ৷ অভিনন্দন জানিয়েছেন চন্দননগরের ও অন্যান্য জায়গার মানুষজনকে। তাঁর কথায় কাজের প্রতি পাগলামি না থাকলে এই ধরনের কাজ করা যায় না। পাশাপাশি, এদিনের অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আগামী ছবির কথা জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "ইন্দো-ইতালিয়ান প্রযোজনায় নতুন ছবির কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পরিক্রমা নামে ছবি খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে।" অন্যদিকে, ছেলে ঈশানের জাতীয়- আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া নিয়ে খুশি প্রকাশ করেছেন তিনি ৷ পরিচালক জানান, ছেলে গতানুগতিক ছবির বাইরে গিয়ে পরীক্ষামূলক ছবি করছে। এটাতে তিনি খুশি।

চন্দননগর কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীস ঘোষ বলেন, "চন্দননগর কলেজ সারা পৃথিবীতে একমাত্র কলেজ যেটা 23 বছর বন্ধ ছিল। শুধুমাত্র সেই সময় সহ-অধ্যক্ষ ছিলেন বিপ্লবী চারুচন্দ্র রায়। তাঁর ছাত্র ছিলেন বিপ্লবী কানাই লাল, শ্রীস চন্দ্র ঘোষ ও রাসবিহারী বসু। কলেজে এই সমস্ত বিপ্লবী আখড়া হওয়ার কারণে বৃটিশদের চাপে বন্ধ হয়ে যায় । 23 বছর বন্ধ থাকার পর সমাজে আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ে ফরাসি আমলেই কলেজ ডুপলে খোলে। 160 বছর পার করে ফেলেছে এই কলেজ।আগের কলেজের চেয়ে বর্তমানে তার আকার বেড়েছে। আগামিদিনে কীভাবে বাইরের মানুষের জন্য এই কলেজের মিউজিয়াম দেখার সুযোগ পাবেন, সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে ৷"

উল্লেখ্য, ইতিহাসের ফরাসি চন্দননগর ও আধুনিক চন্দননগরের চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে মিউজিয়ামে। পাঁচটি ঘর বিশিষ্ট মিউজিয়াম কি নেই ! রয়েছে একাধিক বিপ্লবীদের হাতের লেখা চিঠি থেকে শুরু করে পুলিশ রিপোর্ট, চরকা, ডিঙি নৌকা, প্রাচীন তাঁত, টাইপ মেশিন-সহ সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের নানান স্মৃতি। রয়েছে বিপ্লবীদের একাধিক দুষ্প্রাপ্য ছবি, মূর্তি, প্রাচীন খবরের কাগজ এবং নানা ইতিহাস। 1862 সালে স্থাপিত কলেজের পূর্বতন নাম ছিল একোল দে সাঁৎ মেরি। 1901 সাল থেকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ডুপলে কলেজ নামে পরিচিতি পেয়েছিল।

আরও পড়ুন: মঞ্চে শুরু সৌরভের 'দাদাগিরি', প্রথম পর্বে রাজনীতির আঁচ সামলে আনলেন লর্ডসের নস্ট্যালজিয়া

পরবর্তী সময়ে 1948 সালে নাম পরিবর্তন করে চন্দননগর কলেজ রাখা হয়। চন্দননগর কলেজ শুরু থেকেই একটি ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান, কারণ একদা কলেজের সহ-অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে কলেজ-সহ চন্দননগর শহর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। সরাসরি স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে 1908 থেকে টানা 23 বছর কলেজ বন্ধ ছিল। চারুচন্দ্র রায়ের বিখ্যাত শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন 1908 সালে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত তরুণ বিপ্লবী কানাইলাল দত্ত, শ্রীশচন্দ্র ঘোষ, রাসবিহারী বসুর মতো বিপ্লবীরা।

চন্দননগর, 7 অক্টোবর: ইংরেজদের চাপে পড়ে প্রায় দু'দশক বন্ধ ছিল চন্দননগরের বিখ্যাত ডুপলে কলেজ ৷ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে কলেজ। সেই অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কলেজ। পরবর্তী সময় অনেক লড়াইয়ের পর আবারও পথ চলা শুরু করে এই কলেজ ৷ নাম হয় চন্দননগর কলেজ ৷ বর্তমানে সেই কলেজে তৈরি করা হল মিউজিয়াম ৷

চন্দননগরের বিপ্লবীদের উত্তরাধিকার, শহরের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কলেজটি মিজিয়াম হিসাবে স্থাপন করা হয়েছে। সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ-এর তত্ত্বাবধানে কলেজের 161 বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ভবনে স্থাপন করা হয় চন্দননগর কলেজ মিউজিয়াম। মোমবাতি জ্বালিয়ে মিউজিয়ামের শুভ সূচনা করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক গৌতম ঘোষ ৷ উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ সরকার, চন্দননগর পুরনিগমের মহানাগরিক রাম চক্রবর্তী ও অন্যান্যরা।

মিউজিয়াম উদ্বোধনে এসে ছবির কথা জানান গৌতম ঘোষ

পরিচালক গৌতম ঘোষ এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ৷ অভিনন্দন জানিয়েছেন চন্দননগরের ও অন্যান্য জায়গার মানুষজনকে। তাঁর কথায় কাজের প্রতি পাগলামি না থাকলে এই ধরনের কাজ করা যায় না। পাশাপাশি, এদিনের অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আগামী ছবির কথা জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "ইন্দো-ইতালিয়ান প্রযোজনায় নতুন ছবির কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পরিক্রমা নামে ছবি খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে।" অন্যদিকে, ছেলে ঈশানের জাতীয়- আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া নিয়ে খুশি প্রকাশ করেছেন তিনি ৷ পরিচালক জানান, ছেলে গতানুগতিক ছবির বাইরে গিয়ে পরীক্ষামূলক ছবি করছে। এটাতে তিনি খুশি।

চন্দননগর কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীস ঘোষ বলেন, "চন্দননগর কলেজ সারা পৃথিবীতে একমাত্র কলেজ যেটা 23 বছর বন্ধ ছিল। শুধুমাত্র সেই সময় সহ-অধ্যক্ষ ছিলেন বিপ্লবী চারুচন্দ্র রায়। তাঁর ছাত্র ছিলেন বিপ্লবী কানাই লাল, শ্রীস চন্দ্র ঘোষ ও রাসবিহারী বসু। কলেজে এই সমস্ত বিপ্লবী আখড়া হওয়ার কারণে বৃটিশদের চাপে বন্ধ হয়ে যায় । 23 বছর বন্ধ থাকার পর সমাজে আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ে ফরাসি আমলেই কলেজ ডুপলে খোলে। 160 বছর পার করে ফেলেছে এই কলেজ।আগের কলেজের চেয়ে বর্তমানে তার আকার বেড়েছে। আগামিদিনে কীভাবে বাইরের মানুষের জন্য এই কলেজের মিউজিয়াম দেখার সুযোগ পাবেন, সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে ৷"

উল্লেখ্য, ইতিহাসের ফরাসি চন্দননগর ও আধুনিক চন্দননগরের চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে মিউজিয়ামে। পাঁচটি ঘর বিশিষ্ট মিউজিয়াম কি নেই ! রয়েছে একাধিক বিপ্লবীদের হাতের লেখা চিঠি থেকে শুরু করে পুলিশ রিপোর্ট, চরকা, ডিঙি নৌকা, প্রাচীন তাঁত, টাইপ মেশিন-সহ সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের নানান স্মৃতি। রয়েছে বিপ্লবীদের একাধিক দুষ্প্রাপ্য ছবি, মূর্তি, প্রাচীন খবরের কাগজ এবং নানা ইতিহাস। 1862 সালে স্থাপিত কলেজের পূর্বতন নাম ছিল একোল দে সাঁৎ মেরি। 1901 সাল থেকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ডুপলে কলেজ নামে পরিচিতি পেয়েছিল।

আরও পড়ুন: মঞ্চে শুরু সৌরভের 'দাদাগিরি', প্রথম পর্বে রাজনীতির আঁচ সামলে আনলেন লর্ডসের নস্ট্যালজিয়া

পরবর্তী সময়ে 1948 সালে নাম পরিবর্তন করে চন্দননগর কলেজ রাখা হয়। চন্দননগর কলেজ শুরু থেকেই একটি ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান, কারণ একদা কলেজের সহ-অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে কলেজ-সহ চন্দননগর শহর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। সরাসরি স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে 1908 থেকে টানা 23 বছর কলেজ বন্ধ ছিল। চারুচন্দ্র রায়ের বিখ্যাত শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন 1908 সালে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত তরুণ বিপ্লবী কানাইলাল দত্ত, শ্রীশচন্দ্র ঘোষ, রাসবিহারী বসুর মতো বিপ্লবীরা।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.