পোলবা, 19 মে : করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ ৷ খুলেছে স্কুল-কলেজ, স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল ৷ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো আসতে এখনও পাঁচ মাস বাকি থাকলেও প্রবাস থেকে ইতিমধ্যেই বরাত পেতে শুরু করেছেন এ রাজ্যের শিল্পীরা ৷ কুমোরটুলি থেকে জেলার শিল্পী, সকলেই শুরু করে দিয়েছেন দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ ৷
মুম্বই থেকে দুর্গা প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছেন হুগলির (Hooghly Durga Puja Special) পোলবার বীরেন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় মিশ্র ৷ তাঁর তৈরি এক ফুট বাই এক ফুটের ফাইবারের দুর্গা পাড়ি দিচ্ছে সুদূর মুম্বই (Durga Idol created by specially challenged artist from polba will be displayed in Mumbai) ৷ ছ'মাস আগে থেকে মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন শিল্পী, যা আজ প্রায় শেষের মুখে ৷ তবে আশ্চর্যের কথা হল তিনি সব কাজটাই করেছেন এক হাতে ৷ কিন্তু কেন ?
অষ্টম শ্রেণি থেকেই খুব সুন্দর ছবি আঁকতেন ধনঞ্জয় মিশ্র ৷ তৈরি করতেন মূর্তিও ৷ কিন্তু হঠাৎ এক পথ দুর্ঘটনায় তাঁর জীবনে ছন্দ পতন ঘটে ৷ 20-22 দিন কোমায় থাকার জেরে তাঁর বাঁ হাত সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যায় ৷ কিন্তু তাতেও দমে যাননি তিনি ৷ নিজের ভিতরের শিল্পীসত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখতে মনের জোর আর ইচ্ছেশক্তির দৌলতে একহাতেই ফের কাজ শুরু করেন ৷
আরও পড়ুন : Durga Puja Special : মা দুর্গার নির্দেশেই 300 বছর আগে পুজো শুরু হয় মিত্র জমিদার বাড়িতে
আর্ট কলেজের ছাত্র হয়েও সেভাবে প্রতিষ্ঠা পাননি ধনঞ্জয় ৷ সম্প্রতি এক বন্ধুর মাধ্যমে তাঁর কাছে মুম্বই থেকে এই মূর্তি তৈরির বরাত আসে ৷ যদিও এই মূর্তি তৈরি করতে বেশিদিন সময় লাগার কথা নয় ৷ কিন্তু তাঁর একহাতের কাজ বলে আগেভাগেই মূর্তি করে ফেলেছেন ৷ ছ'মাস ধরে চলা এই কাজ এখন প্রায় শেষের মুখে ৷
মূর্তি তৈরির পাশাপাশি বাচ্চাদের ছবি আঁকাও শেখান তিনি ৷ রয়েছে স্কুলও ৷ শিল্পীর কথায়, "এভাবেই সকলের মধ্যে নিজের সত্ত্বাকে ছড়িয়ে দিতে চাই ৷ কোনও মূর্তি তৈরি বা ছবি আঁকার প্রয়োজন হলে আমায় জানাবেন ৷ আমি এভাবেই আমার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই ৷" ধনঞ্জয়বাবুর প্রতিবেশী অনুপ দাস বললেন, "শিল্পীকে নিয়ে গর্বিত আমরা ৷ গর্বিত আমাদের গ্রাম ৷ ওঁনার আর্থিক অবস্থা ভাল নয় ৷ তাই যদি সরকারি তরফে কোনও সাহায্য মেলে তবে খুবই উপকৃত হবেন উনি ৷
আরও পড়ুন : Durga Puja 2021 : বেলজিয়াম কাচের ঝাড়বাতি সুরুল জমিদারবাড়ির পুজোর আকর্ষণ