গুপ্তিপাড়া, 23 জুলাই: বন্ধ পঞ্চায়েত অফিসে রাতে আটকে রইল সারমেয়। মানুষের মতোই ফোন করে বিদায়ী উপপ্রধানের কাছে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় অবলা জীবটি। এতেই হতবাক হুগলির গুপ্তিপাড়া-1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ। ফোন পেয়ে বুঝতে পারেন কেউ পঞ্চায়েতে ঢুকেছে। ফোন তুলে 'হ্যালো হ্যালো' বলার পর প্রথমে কিছু আওয়াজ না-পেলেও, পরে কুকুরের কান্নার আওয়াজ পান। তখনই ব্যাপারটি তাঁর কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়।
পঞ্চায়েতে একাধিক সারমেয় রয়েছে। সেখানেই খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেন সারমেয় প্রেমীরা। উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগও অবলাদের ভালোবাসেন। রাতে এরাই পঞ্চায়েতের পাহাড়া দেয়। শনিবার অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে কোনওভাবে ভিতরেই থেকে যায় সারমেয়টি। পুরো পঞ্চায়েত অফিস ঘোরাঘুরি করতে থাকে কুকুরটি ৷ যায় পঞ্চায়েতের টেবিলে থাকা ল্যান্ডফোনের কাছেও ৷ সেখানে গেলে কোনওভাবে সারমেয়র পায়ে লেগে ফোনটি পড়ে যায় ৷ ব্যস ফোন চলে যায় বিশ্বজিৎ নাগের কাছে ৷ পঞ্চায়েতের ফোনে যেহেতু উপপ্রধানের সঙ্গে হটলাইন কানেকশন করা আছে। সেইজন্য স্বভাবতই ফোন থেকে কল যায় উপপ্রধানের কাছে।
আরও পড়ুন: তারকাদের হাঁড়ির খবর রাখলেও চেনেন তাঁদের প্রিয় পোষ্য কে ? জানেন তাদের নাম ?
বিষয়টি বুঝে সময় নষ্ট না-করে রাতেই পঞ্চায়েতে কর্মীকে নির্দেশ দেওয়া হয় অফিস খোলার। উপপ্রধান-সহ অন্যান্য কর্মীরা ও স্থানীয়রা গিয়ে পঞ্চায়েতের তালা খুলতেই বেরিয়ে আসে 'অবলা'টি । ভিতরে গিয়ে বিশ্বজিৎ নাগ অবাক হয়ে যান ৷ তিনি দেখেন, ফোনের রিসিভার তোলার পর যে অবস্থায় ফোন রাখা ছিল সেভাবেই পুনরায় রাখা রয়েছে ৷ সারমেয় ছাড়াও পঞ্চায়েতের মধ্যে কেউই ছিল না। তাহলে কি সামরেয়টায় এই কাণ্ড ঘটাল? রাতের মতো এই অভিযান শেষ হলেও সকাল হতেই বুদ্ধিমান সারমেয়র কথা লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। সারমেয়র এই কৃতি শুনে সকলেই অবাক।
বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, "পঞ্চায়েতের ফোনটি হটলাইন করা আছে আমার মোবাইলের সঙ্গে। কেউ হাত দিলেই মেসেজ চলে আসে। সারমেয়টি কোনওভাবে ফোনটি ধরে। কান্নার ডাক দিয়ে সে জানান দেয় আটকে পড়েছে। আমরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। ওর রাম রকি ৷ বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ফোনে সংকেত দেয়। সম্ভবত সারাদিন পঞ্চায়েতে থেকে আমরা ফোনে কথা বলি লক্ষ্য করেছে সে। হয়তো তা দেখেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।"
আরও পড়ুন: ট্রেনে সারমেয় নিয়ে যাত্রা ? জেনে নিন এই নিয়মগুলি