কর্পোরেট স্পাইয়ের কায়দায় হিরে লোপাট, মাটি খুঁড়ে উদ্ধার 50 লাখের নেকলেস - নেকলেস
কলকাতার ওয়ার্কশপ থেকে চুরি যাওয়া 50 লাখ টাকার হিরের নেকলেস উদ্ধার । গ্রেপ্তার মুম্বই প্রবাসী হিরের ব্রোকার মান্নান শেখ ।
কলকাতা, 11 সেপ্টেম্বর : কারিগরের কাছ থেকে গায়েব হয়ে গেছিল 97টি হিরে দিয়ে তৈরি নেকলেস । যার মূল্য প্রায় 50 লাখ টাকা । তদন্তে নেমে চোরকে ধরতে না পারলেও গ্রেপ্তার হয়েছে মূল পাণ্ডা । খোদ মুম্বই প্রবাসী হিরের ব্রোকার । সিনেমার কায়দায় হুগলির গুপ্তিপাড়া থেকে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয়েছে সেই 50 লাখের হিরেও ।
প্রশান্ত মাল । পেশায় হিরের গয়নার পাথর সেটিং-এর কারিগর । গিরিশ পার্কের 17/1/এ ঠিকানায় তাঁর ওয়ার্কশপ । কারিগর হিসেবে তাঁর বেশ সুনামও রয়েছে । গতমাসে একটি নামী গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থা তাঁকে 97টি হিরে দিয়ে একটি নেকলেস তৈরির বরাত দেয় । কাজটা প্রায় সম্পূর্ণই করে ফেলেছিলেন । কিন্তু, 22 অগাস্ট ছন্দপতন । গায়েব সেই বহুমূল্য নেকলেস । সেই সঙ্গে বেপাত্তা মাসখানেক আগে কাজে যোগ দেওয়া এক কর্মী । নাম শাকিল আহমেদ । 23 অগাস্ট গিরিশ পার্ক থানায় FIR করেন তিনি । তদন্তে নামেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ।
প্রাথমিকভাবে সকলেরই সন্দেহ ছিল, নেকলেস নিয়ে পালিয়েছে শাকিল । শুরু হয় খোঁজাখুঁজি । তদন্ত এগোলে গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন এই কাজ একা শাকিলের নয় । তবে চুরি করেছে সেই । ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ গতরাতে গ্রেপ্তার করে মুম্বই প্রবাসী হিরের ব্রোকার মান্নান শেখকে ।
কিন্তু, এখানে মান্নান শেখ এল কোথা থেকে ? তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শাকিল হিরে চুরি করেছে ঠিকই, তা করেছে মান্নানের নির্দেশে । কারণ, শাকিলকে প্রশান্তর ওয়ার্কশপে নিয়োগ করেছিল সেই । তা একেবারে কর্পোরেট স্পাইয়ের কায়দায় । শাকিলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ওয়ার্কশপে কোনও বড় অর্ডার এলেই চুরি করতে হবে । তা পৌঁছে দিতে হবে হুগলির গুপ্তিপাড়ার মীরডাঙায় । আদতে সে ওই গ্রামের বাসিন্দা । তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, এই একই কায়দায় রীতিমতো বেতনের বিনিময়ে দেশের নানা রাজ্যে হিরের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে চোর ঢুকিয়েছে সে । যাদের কাজ দামী হিরের গয়না চুরি করা । তারপর সেই গয়না বিক্রি হয়ে যায় মুম্বইয়ের জাভেরি বাজারে।
কিন্তু, পঞ্চাশ লাখের হিরের নেকলেস কোথায় গেল ? পুলিশি জেরার মান্নান জানায়, নেকলেসটি এখনও বিক্রি হয়নি । লুকানো আছে মাটির তলায় । এরপরই আজ বিকেলে হুগলির গুপ্তিপাড়া পৌঁছান কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকরা । মাটি খুঁড়ে বের করা হয় নেকলেস । শাকিলের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ।
প্রাথমিকভাবে সবার সন্দেহ ছিল, নেকলেস নিয়ে পালিয়েছে সাকিল। স্বাভাবিক। শুরু হয় তার খোঁজ। তদন্ত এগোলে গোয়েন্দারা নানাভাবে বুঝতে পারেন এই কাজ একা সাকিলের নয়। তবে চুরি করেছে সেই। ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ গতরাতে গ্রেপ্তার করেছে মুম্বই প্রবাসী হীরের ব্রোকার মান্নান শেখকে। কিন্তু এখানে তার আবির্ভাব হল কি ভাবে?
হ্যাঁ, এখানেই গল্পে টুইস্ট। সাকিল হীরে চুরি করেছে ঠিকই, কিন্তু তা মান্নান শেখের জন্য। কারণ, সাকিলকে প্রশান্তর ওয়ার্কশপে নিয়োগ করেছিল সেই। একেবারে কর্পোরেট স্পাইয়ের কায়দায়। সাকিলকে বলা ছিল, ওয়ার্কশপে কোনো বড় অর্ডার এলে চুরি করতে হবে। এবং তা পৌঁছে দিতে হবে হুগলির গুপ্তিপাড়ার মীরডাঙায়। আদতে সে ওই গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জেনেছে, এই কায়দায় রীতিমতো মাইনের বিনিময়ে ভারতের নানা রাজ্যে হীরের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে চোর ঢুকিয়েছে সে। তাদের কাজ দামী হিরের গয়না চুরি। তারপর সেই গয়না বিক্রি হয়ে যায় মুম্বইয়ের জাভেরি বাজারে। Conclusion:কিন্তু পঞ্চাশ লাখি হিরের নেকলেস কোথায়? জেরার মুখে মান্নান কবুল করে, সেটি এখনও বিক্রি হয়নি। রাখা আছে মাটির তলায়। এরপরই আজ বিকেলে হুগলির গুপ্তিপাড়া পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের দল। মাটি খুঁড়ে বের করা হয় হার। আপাতত সাকিলের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।