সিঙ্গুর, 19 জুন: তৃণমূলের টিকিট পেয়েছিলেন ৷ সেই মোতাবেক জমা দিয়েছিলেন মনোনয়নও ৷ কিন্তু আচমকা দেখা গেল প্রার্থী তালিকায় তাঁর নামই নেই ৷ প্রার্থীপদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে সিঙ্গুরের কৃষি জমি রক্ষা কমিটির অন্যতম নেতা দুধ কুমার ধারাকে। একইভাবে বাদ দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন, জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ মানিক চন্দ্র দাসও ৷ তবে এবার দুধ কুমারের জায়গায় তঁকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে খবর ৷
সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির তিন নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দুধ কুমার ধারা। তার জায়গায় প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ মানিক চন্দ্র দাসকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। এ নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দুধ কুমার ধারা। সোশাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে খোলা চিঠি দিয়েছেন তিনি। দুধ কুমারের দাবি, তাঁকে কোন অপরাধে বাদ দেওয়া হল, তা তিনি জানেন না। সেই অভিমান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান দুধ কুমার।
শোনা যাচ্ছে, কৃষি জমি রক্ষা কমিটির আরেক নেতা ও জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ মানিক চন্দ্র দাস আগেই বাদ পড়ে ছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা থেকে। পড়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানোর পর তাঁকে দুধ কুমারের জায়গায় সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট দেওয়া হয়েছে। এতেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখেছেন দুধ কুমার। তাঁকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে তিনি সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্নার কাছে সরাসরি জানতেও চেয়েছেন ৷ তিনি কোনও উত্তর দিতে পারেননি বলে দাবি করেন তিনি। আর তা নিয়েই সিঙ্গুরে দলের মধ্যে শুরু হয়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। অন্যদিকে, মানিকচন্দ্র দাসের মতে, কী কারনে দুধ কুমার ধারা দলের তালিকা থেকে বাদ গিয়েছেন সে বিষয়ে তিনি জানান না ৷ প্রার্থী তালিকা দেখিয়ে সিঙ্গুরের খাসেরভেড়ি এলাকায় কৃষক নেতা দুধকুমার ধারা বলেন,"আমার বুকে কেন ছুরি মারা হল? মানিক দাসের আত্মীয় পঞ্চায়েতে প্রার্থী, সে আবার পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হলেন। আমার এখানে যে প্রার্থী ছিল তাঁকেও টিকিট দেওয়া হয়নি। সেটা আমি মেনে নিয়েছি। তবুও কেন আমাকে প্রার্থী করা হল না ?"
আরও পড়ুন: দেখি কার হিম্মত আছে আমাকে আটকানোর, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি কেশপুরের সিপিএম প্রার্থীর
পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তের আশঙ্কা করছেন তিনি ৷ দুধ কুমার ধারা বলনে, "আমার নেতা বেচারাম মান্না বলেছেন তিনি নেত্রীর নির্দেশে পিওনের কাজ করছেন।" হুগলী জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ তথা সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা মানিক চন্দ্র দাস বলেন, "আমার কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। টিকিট উনি পেয়েছিলেন তা আমার জানা ছিল না। আগে থেকে কেউই জানত না, কে কোথায় টিকিট পাবে ৷ দল যেটা ভালো মনে করেছে সেটা করেছে। আমিও ভেবেছিলাম জেলা পরিষদে টিকিট পাব কিন্তু দল দেয়নি তাতে আমার কিছু আপত্তি নেই। আর উনি যে টিকিট পেয়ে তা বাতিল হয়ে গেছে সেটা আমি কী করে জানব ?" এ বিষয়ে হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম গুঁই বলেন, "যে প্রার্থী হয়েছেন দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রার্থী হয়েছে। এখান থেকে আমাদের প্রার্থী করার ক্ষমতা নেই। আমরা এখান থেকে প্রস্তাব দিতে পারি। প্রার্থী করার দায়িত্ব রাজ্য নেতৃত্বের। কাজেই রাজ্য নেতৃত্ব যাকে মনে করেছে প্রার্থী করেছে যাকে মনে করেনি প্রার্থী করেনি। আবার রাজ্য নেতৃত্ব যদি মনে করে তাকে প্রয়োজন আছে, তাকে দলের অন্য কোন কাজে পরে অবশ্যই ব্যবহার করবে। এটা সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্ত কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়।"