আরামবাগ, 8 মে : বিঘার পর বিঘা ধান চাষের জমি ৷ যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই পাকা ধান ৷ কিন্তু ঘরে তোলার উপায় ? কোরোনা আতঙ্কে এলাকায় ঢুকতে চাইছে না কোনও শ্রমিকই। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন হুগলির আরামবাগের তিরোল গ্রাম পঞ্চায়েত দাদনপুর এলাকার চাষিরা।
কিছু দিন আগেই তিরোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দাদনপুর গ্রামের এক বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় ছড়িয়েছে কোরোনা আতঙ্ক। সেই সঙ্গে কনটেইনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে তিরোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলকাকে । এরপর থেকেই সমস্যায় পড়েছেন দাদনপুর গ্রামের বহু চাষি। তাঁরা জানান, "কোনও শ্রমিক ধান কাটার কাজে আসতে চাইছে না এই গ্রামে।ফলে প্রায় 500 বিঘা জমিতে পাকা ধান পরে রয়েছে ৷ এমনিতেই জমি থেকে ধান তোলার সময় পার হয়ে যাচ্ছে তার উপর মাঝে মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টি ৷ যার জেরে ক্ষতি হচ্ছে পাকা ধানের।অন্য সময় বাঁকুড়া, মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে শ্রমিকরা আসে ৷ কিন্তু এবার কোরোনা সংক্রমণ রুখতে, লকডাউনের জেরে তাঁদেরও নিজ নিজ রাজ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।"
তাঁরা আরও বলেন, "প্রশাসনের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মাঠেই নষ্ট হয়ে যাবে পাকা ধান ৷ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ব আমরা । 500 বিঘার জমির ধান নষ্ট হয়ে গেলে আগামী দিনে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলেও দাবি এলাকার চাষিদের।
দাদনপুর গ্রামের কৃষক আরিফ আলি খান বলেন, "খুবই সমস্যার মধ্যে আছি ৷ এই গ্রামে একজন কোরোনা পজ়িটিভ পাওয়া গিয়েছে যার জেরে পাশের গ্রামের কোনও শ্রমিক এই গ্রামে এসে ধান কাটতে চাইছে না । অন্যদিকে লোকডাউনের জেরে বাঁকুড়া,পুরুলিয়া থেকেও শ্রমিকরা আসছে না। বৃষ্টিতে মাঠে জল জমছে। কোরোনা আতঙ্কে ধান কাটার কোনও গাড়ি ও আসছে না গ্রামে।প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নিলে নষ্ট হয়ে যাবে পাকা ধানগুলি । "
গ্রামের আরেক চাষি তাহের আলি খান জানান, "চাষের উপর নির্ভর করে তাঁদের সংসার চলে। নিজেদের পক্ষে এত ধান কাটা সম্ভব নয় তাই প্রশাসনের সাহায্য দরকার ৷ প্রশাসন যদি হস্তক্ষেপ করে তাহলে আমরা উপকৃত হব।"
যদিও আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুণধর খাঁড়া জানিয়েছেন, "ওই এলাকায় কোরোনা আতঙ্ক ছড়িয়েছিল ৷ কয়েকজন অসুস্থও হয় ৷ কিন্তু সবারই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ।আমরা এলাকার মানুষকে বোঝাচ্ছি এবং সচেতন করছি। তবে পঞ্জাব বা হরিয়ানা থেকে ধান কাটার যে মেশিন এসেছে সেই মেশিন ওই এলাকায় পাঠিয়ে ধান কাটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।