ETV Bharat / state

Chandannagar French Institute : অবহেলায়, অযত্নে ঐতিহাসিক গৌরব হারাচ্ছে চন্দননগর ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট - Chandannagar French Institute

ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম বা ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট আজ ধংসের পথে (Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence)। 1812 সালের ফরাসি বাস্তু কলায় নির্মিত ডুপ্লে মহলের এখন ভঙ্গপ্রায় দশা । সেই আমলের তৈরি মূল্যবান গ্রন্থাগার, ফরাসিদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে স্বাধীনতা আমলে নথিতে এখন ধুলো জমেছে । রক্ষণাবেক্ষণ-এর অভাবে নষ্ট হচ্ছে সব কিছুই (Chandannagar French Institute)।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
Chandannagar French Institute
author img

By

Published : May 25, 2022, 9:15 PM IST

চন্দননগর, 25 মে : সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফরাসি ঐতিহ্য (Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence)। যে চন্দননগরে ফরাসিরা একদা উপনিবেশ তৈরি করেছিল । যার নানা ইতিহাস ছড়িয়ে আছে গোটা চন্দননগর জুড়ে । সেই ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম বা ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট তা আজ ধংসের পথে ।

1812 সালের ফরাসি বাস্তু কলায় নির্মিত ডুপ্লে মহলের এখন ভঙ্গপ্রায় দশা । সেই আমলের তৈরি মূল্যবান গ্রন্থাগার, ফরাসিদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে স্বাধীনতা আমলে নথিতে এখন ধুলো জমেছে । রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সব কিছুই । নিরাপত্তা জন্য নেই কোনও নাইট গার্ড বা সিসিটিভি ক্যামেরা । যে কোন সময় এই সমস্ত মূল্যবাণ জিনিসপত্র চুরি হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সেখানকার অস্থায়ী কর্মীরা । বর্তমানেও এই ইনস্টিটিউটে ফরাসি ডিপ্লোমা কোর্সে পড়ানো হয় । সঠিক ক্লাস করানো হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে । অল্প পয়সায় শিক্ষক নিয়োগের ফলেও ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার ঘাটতি রয়েছে বলেও অভিযোগ ।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
জাতীয় পতাকার এক অংশ এখন ছিঁড়ে গেছে

চন্দননগর 1950 সালে স্বাধীনতা লাভ পাওয়ার পর থেকে এই মিউজিয়াম ভারতের দখলে আসে । ভারতীয় পতাকা তোলা হয় । সেই জাতীয় পতাকার এক অংশ এখন ছিঁড়ে গিয়েছে । সেই ছিন্ন বিছিন্ন পতাকাই উড়ছে ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটে (Chandannagar French Institute)। কেউ দেখার নেই । কোনও অফিসার থাকে না । চারজন স্থায়ী ও 5 জন অস্থায়ী কর্মী থাকলেও, এত বড় ইনস্টিটিউটে চালাতে সক্ষম নয় তাঁরা । না আছে লাইব্রেরিয়ান, না আছে কিউরেটর । একজন ডিরেক্টর থাকলেও, তিনি সপ্তাহে একদিন আসেন । দীর্ঘদিন ডেপুটি ডিরেক্টর পদ শূন্য হয়ে রয়েছে ।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম বা ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট তা আজ ধংসের পথে

আরও পড়ুন : Paray Paray Didibhai : আসানসোলবাসীদের জন্য অগ্নিমিত্রার পাড়ায় পাড়ায় দিদিভাই !

ঐতিহাসিক এই মহলের ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ (ASI)দেখভালের কথা থাকলেও, দীর্ঘদিন হয়ে গেল তা তত্ত্বাবধান করা হয়নি । রাজ্য উদ্যান পালন দফতরের দায়িত্বে থাকা ডুপ্লে ভবনের বাগান রক্ষণাবেক্ষণের কর্মী রাখার কথা, সে পদও ফাঁকা হয়ে পড়ে আছে । কোন যত্ন হয় না এই বাগানের । বিশাল গাছের ডাল শুকনো হয়ে আছে, গাছের গোড়ায় অবস্থাও ভাল নয় । যে কোন সময়ে গাছ ভেঙে ঐতিহাসিক আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাও দেখার কেউ নেই । সেই সঙ্গে ভিতরের ফ্রেঞ্চ মিউজিয়ামও রাজ্য সরকারের দখলে । সেখানেও অর্থ বরাদ্দ-এর অভাবে সিসিটিভি লাগানো ও অন্যান্য কাজ স্তব্ধ হয়ে রয়েছে । নতুন করে মিউজিয়ামকেও সাজানো হচ্ছে না ।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
সঠিক রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফরাসি ঐতিহ্য

তবে এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে সেভাবে কিছু বলতে চাননি । ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটের এরকম দশা দেখে লজ্জিত চন্দননগরবাসী । সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে আশা বহু পর্যটক আশাহত হন এই দুরবস্থা দেখে । যারা ইতিহাস নিয়ে পড়েন তাঁরা গবেষণার জন্য এখানকার গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে পারেন না । এখানকার অস্থায়ী কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই চান এর এই ঐতিহাসিক স্থানের উন্নতি হোক । বিশেষ করে চন্দননগর সরকারি কলেজের ফরাসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইনস্টিটিউটে ফরাসি পড়াশোনার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন । তাঁর দাবি, সরকার এ বিষয়ে নজর দিক । নইলে আগামিদিনে চন্দননগরের এত বড় ঐতিহ্য ধ্বংসের পথে চলে যাবে ।

চন্দননগরে ফরাসিরা মোগল বাদশার কাছ থেকে 40,000 মুদ্রার বিনিময় 1688 খ্রিস্টাব্দে কুঠি স্থাপন করেন । পরে চন্দননগর গঙ্গার পশ্চিম তীরে অবস্থিত মনোরম প্রাসাদের ফরাসি উদ্যানবাটী তৈরি করা হয় । ফরাসি উপনিবেশের শাসকের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই প্রাসাদ । সামনে বারান্দায় অনেকগুলি সারিবদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে । প্রাসাদের চারিদিকে সেটাও নষ্ট হচ্ছে এই সময় । ছাদের উপরের কাঠের একটি সুন্দর চালা রয়েছে, সেটাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে । ছাদও নষ্ট হয়ে গিয়েছে, বৃষ্টি হলে জল পরে । এই স্মারকটি তৎকালীন ফরাসি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক উপনিবেশের গুরুত্ব বহন করে । এখানে হল ঘরে নানা ইন্দো-ফ্রেঞ্চ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত, তাও এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে ।

ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম আজ ধংসের পথে

ইনস্টিটিউটের একজন অস্থায়ী কর্মী দেবকুমার শীল বলেন, "এখানে রক্ষণাবেক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই । বর্তমান ডিরেক্টর আছেন ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় তিনি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন । কিন্তু কিছু করা যায়নি । হেরিটেজ সংস্থার শুভাপ্রসন্ন মজুমদারকে জানিয়ে কোনও ফল হয়নি । এখানে নিরাপত্তার জন্য কোন সিসিটিভি ক্যামেরা নেই । আমরা চাই চন্দননগরের ঐতিহাসিক এই স্থানটির উন্নতি হোক । বিভিন্ন মানুষ ও বিদেশী মানুষরাও দেখতে এসে ফিরে যায় এখান থেকে ।"

চন্দননগর সরকারি কলেজের ফরাসি বিভাগের প্রধান বাসবী পাল বলেন, "ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ এখানের দায়িত্বে আছে, ডিরেক্টরও আছেন । কিন্তু দুঃখের বিষয় শিক্ষা ব্যবস্থার এডুকেশনাল হেড নেই । ডেপুটি ডিরেক্টর-এর পদ শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে । চন্দননগর সরকারি কলেজের ফরাসি বিভাগের প্রধানই ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটের শিক্ষাব্যবস্থার দেখা উচিত এটা চিরকালের প্রথা । আমাদের পড়াশোনার চলাকালীন তাই দেখে এসেছি । সরকারি অর্ডার না থাকার কারণেই ওখানে গিয়ে কাজ করাও সম্ভব হচ্ছে না আমার পক্ষে । ফ্রান্স ও ভারতের মধ্যে চুক্তির বন্ধন আছে এই পর্যন্তই, তাঁরা আতিথিয়তা না পেলে তাঁরাও এখানে যুক্ত হতে পারছেন না । সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের যে বিষয়টা চন্দননগর থেকে হত, সেটা হয়ত আমরা চাইছি না । তাই জন্য ফ্রান্স ডেলিগেটরা সমাদৃত হচ্ছেন না ইনস্টিটিউটে ।"

আরও পড়ুন : Piyali Basak Conquers Mount Everest: টাকার 'পাহাড়ে' আটকে পিয়ালীর এভারেস্ট জয়ের স্বীকৃতি

পড়াশোনার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফরাসি বিভাগের প্রধান । তিনি আরও বলেন, "এই ইনস্টিটিউটের মতো পূর্ব ভারতে এই ধরনের পাঠাগার কোথাও নেই । রিসার্চ সেন্টারকেও আমরা আটকে দিয়েছি । ওখানে যে গভর্নিং বডি আছে, সেটাও মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে দশ বছর হল । মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন যে এই এত বড় ঐতিহ্যটাকে রক্ষা করার জন্য তিনি হস্তক্ষেপ করুন । ফরাসির সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন হত ভারতবর্ষের, সেটা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে । ফ্রান্স ও ভারতের মৈত্রীর বন্ধন আছে, সেটা নষ্ট হচ্ছে ৷ সেই সঙ্গে সংস্কৃতিক পীঠস্থান এই ইনস্টিটিউট, এটা নষ্ট হয়ে গেলে চন্দননগর তার ঐতিহ্য হারাবে ।"

চন্দননগর, 25 মে : সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফরাসি ঐতিহ্য (Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence)। যে চন্দননগরে ফরাসিরা একদা উপনিবেশ তৈরি করেছিল । যার নানা ইতিহাস ছড়িয়ে আছে গোটা চন্দননগর জুড়ে । সেই ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম বা ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট তা আজ ধংসের পথে ।

1812 সালের ফরাসি বাস্তু কলায় নির্মিত ডুপ্লে মহলের এখন ভঙ্গপ্রায় দশা । সেই আমলের তৈরি মূল্যবান গ্রন্থাগার, ফরাসিদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে স্বাধীনতা আমলে নথিতে এখন ধুলো জমেছে । রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সব কিছুই । নিরাপত্তা জন্য নেই কোনও নাইট গার্ড বা সিসিটিভি ক্যামেরা । যে কোন সময় এই সমস্ত মূল্যবাণ জিনিসপত্র চুরি হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সেখানকার অস্থায়ী কর্মীরা । বর্তমানেও এই ইনস্টিটিউটে ফরাসি ডিপ্লোমা কোর্সে পড়ানো হয় । সঠিক ক্লাস করানো হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে । অল্প পয়সায় শিক্ষক নিয়োগের ফলেও ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার ঘাটতি রয়েছে বলেও অভিযোগ ।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
জাতীয় পতাকার এক অংশ এখন ছিঁড়ে গেছে

চন্দননগর 1950 সালে স্বাধীনতা লাভ পাওয়ার পর থেকে এই মিউজিয়াম ভারতের দখলে আসে । ভারতীয় পতাকা তোলা হয় । সেই জাতীয় পতাকার এক অংশ এখন ছিঁড়ে গিয়েছে । সেই ছিন্ন বিছিন্ন পতাকাই উড়ছে ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটে (Chandannagar French Institute)। কেউ দেখার নেই । কোনও অফিসার থাকে না । চারজন স্থায়ী ও 5 জন অস্থায়ী কর্মী থাকলেও, এত বড় ইনস্টিটিউটে চালাতে সক্ষম নয় তাঁরা । না আছে লাইব্রেরিয়ান, না আছে কিউরেটর । একজন ডিরেক্টর থাকলেও, তিনি সপ্তাহে একদিন আসেন । দীর্ঘদিন ডেপুটি ডিরেক্টর পদ শূন্য হয়ে রয়েছে ।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম বা ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট তা আজ ধংসের পথে

আরও পড়ুন : Paray Paray Didibhai : আসানসোলবাসীদের জন্য অগ্নিমিত্রার পাড়ায় পাড়ায় দিদিভাই !

ঐতিহাসিক এই মহলের ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ (ASI)দেখভালের কথা থাকলেও, দীর্ঘদিন হয়ে গেল তা তত্ত্বাবধান করা হয়নি । রাজ্য উদ্যান পালন দফতরের দায়িত্বে থাকা ডুপ্লে ভবনের বাগান রক্ষণাবেক্ষণের কর্মী রাখার কথা, সে পদও ফাঁকা হয়ে পড়ে আছে । কোন যত্ন হয় না এই বাগানের । বিশাল গাছের ডাল শুকনো হয়ে আছে, গাছের গোড়ায় অবস্থাও ভাল নয় । যে কোন সময়ে গাছ ভেঙে ঐতিহাসিক আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাও দেখার কেউ নেই । সেই সঙ্গে ভিতরের ফ্রেঞ্চ মিউজিয়ামও রাজ্য সরকারের দখলে । সেখানেও অর্থ বরাদ্দ-এর অভাবে সিসিটিভি লাগানো ও অন্যান্য কাজ স্তব্ধ হয়ে রয়েছে । নতুন করে মিউজিয়ামকেও সাজানো হচ্ছে না ।

Chandannagar French Institute losing historical glory due to negligence
সঠিক রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফরাসি ঐতিহ্য

তবে এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে সেভাবে কিছু বলতে চাননি । ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটের এরকম দশা দেখে লজ্জিত চন্দননগরবাসী । সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে আশা বহু পর্যটক আশাহত হন এই দুরবস্থা দেখে । যারা ইতিহাস নিয়ে পড়েন তাঁরা গবেষণার জন্য এখানকার গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে পারেন না । এখানকার অস্থায়ী কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই চান এর এই ঐতিহাসিক স্থানের উন্নতি হোক । বিশেষ করে চন্দননগর সরকারি কলেজের ফরাসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইনস্টিটিউটে ফরাসি পড়াশোনার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন । তাঁর দাবি, সরকার এ বিষয়ে নজর দিক । নইলে আগামিদিনে চন্দননগরের এত বড় ঐতিহ্য ধ্বংসের পথে চলে যাবে ।

চন্দননগরে ফরাসিরা মোগল বাদশার কাছ থেকে 40,000 মুদ্রার বিনিময় 1688 খ্রিস্টাব্দে কুঠি স্থাপন করেন । পরে চন্দননগর গঙ্গার পশ্চিম তীরে অবস্থিত মনোরম প্রাসাদের ফরাসি উদ্যানবাটী তৈরি করা হয় । ফরাসি উপনিবেশের শাসকের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই প্রাসাদ । সামনে বারান্দায় অনেকগুলি সারিবদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে । প্রাসাদের চারিদিকে সেটাও নষ্ট হচ্ছে এই সময় । ছাদের উপরের কাঠের একটি সুন্দর চালা রয়েছে, সেটাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে । ছাদও নষ্ট হয়ে গিয়েছে, বৃষ্টি হলে জল পরে । এই স্মারকটি তৎকালীন ফরাসি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক উপনিবেশের গুরুত্ব বহন করে । এখানে হল ঘরে নানা ইন্দো-ফ্রেঞ্চ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত, তাও এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে ।

ইতিহাসের সাক্ষী ফরাসি মিউজিয়াম আজ ধংসের পথে

ইনস্টিটিউটের একজন অস্থায়ী কর্মী দেবকুমার শীল বলেন, "এখানে রক্ষণাবেক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই । বর্তমান ডিরেক্টর আছেন ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় তিনি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন । কিন্তু কিছু করা যায়নি । হেরিটেজ সংস্থার শুভাপ্রসন্ন মজুমদারকে জানিয়ে কোনও ফল হয়নি । এখানে নিরাপত্তার জন্য কোন সিসিটিভি ক্যামেরা নেই । আমরা চাই চন্দননগরের ঐতিহাসিক এই স্থানটির উন্নতি হোক । বিভিন্ন মানুষ ও বিদেশী মানুষরাও দেখতে এসে ফিরে যায় এখান থেকে ।"

চন্দননগর সরকারি কলেজের ফরাসি বিভাগের প্রধান বাসবী পাল বলেন, "ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ এখানের দায়িত্বে আছে, ডিরেক্টরও আছেন । কিন্তু দুঃখের বিষয় শিক্ষা ব্যবস্থার এডুকেশনাল হেড নেই । ডেপুটি ডিরেক্টর-এর পদ শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে । চন্দননগর সরকারি কলেজের ফরাসি বিভাগের প্রধানই ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটের শিক্ষাব্যবস্থার দেখা উচিত এটা চিরকালের প্রথা । আমাদের পড়াশোনার চলাকালীন তাই দেখে এসেছি । সরকারি অর্ডার না থাকার কারণেই ওখানে গিয়ে কাজ করাও সম্ভব হচ্ছে না আমার পক্ষে । ফ্রান্স ও ভারতের মধ্যে চুক্তির বন্ধন আছে এই পর্যন্তই, তাঁরা আতিথিয়তা না পেলে তাঁরাও এখানে যুক্ত হতে পারছেন না । সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের যে বিষয়টা চন্দননগর থেকে হত, সেটা হয়ত আমরা চাইছি না । তাই জন্য ফ্রান্স ডেলিগেটরা সমাদৃত হচ্ছেন না ইনস্টিটিউটে ।"

আরও পড়ুন : Piyali Basak Conquers Mount Everest: টাকার 'পাহাড়ে' আটকে পিয়ালীর এভারেস্ট জয়ের স্বীকৃতি

পড়াশোনার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফরাসি বিভাগের প্রধান । তিনি আরও বলেন, "এই ইনস্টিটিউটের মতো পূর্ব ভারতে এই ধরনের পাঠাগার কোথাও নেই । রিসার্চ সেন্টারকেও আমরা আটকে দিয়েছি । ওখানে যে গভর্নিং বডি আছে, সেটাও মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে দশ বছর হল । মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন যে এই এত বড় ঐতিহ্যটাকে রক্ষা করার জন্য তিনি হস্তক্ষেপ করুন । ফরাসির সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন হত ভারতবর্ষের, সেটা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে । ফ্রান্স ও ভারতের মৈত্রীর বন্ধন আছে, সেটা নষ্ট হচ্ছে ৷ সেই সঙ্গে সংস্কৃতিক পীঠস্থান এই ইনস্টিটিউট, এটা নষ্ট হয়ে গেলে চন্দননগর তার ঐতিহ্য হারাবে ।"

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.