হুগলি, 6 এপ্রিল: হাওড়ার পর রিষড়ায় রামনবমীর ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্য়ের সবকটি রাজনৈতিক দল। সংঘর্ষ এবং সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন খোদ রাজ্য়পাল সিভি আনন্দ বোসও ৷ এমনকী উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করে সরাসরি রিষড়ায় এসে সরেজমিনে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখেন তিনি ৷ কিন্তু রামনবমীর পর হনুমান জয়ন্তীতে ফের অশান্তি হতে পারে এই আশঙ্কা তাড়া করে বাড়াচ্ছিল সকলকে ৷ শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তীতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এল হুগলিতে ৷
সাধারণত নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেখতে অভ্য়স্ত রাজ্য়ের মানুষ ৷ কিন্তু রামনবমী বা কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই এর আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেখা যায়নি ৷ কিন্তু গত 10 দিনে আমূল বদলে গিয়েছে ছবিটা ৷ রামনবমীকে কেন্দ্র করে গত মাসের শেষ থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হাওড়া ৷ এরপর একই রকম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে হুগলির রিষড়াতেও ৷ একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতিরা ৷ সেই সঙ্গে পুলিশকে লক্ষ্য় করে উড়ে এসেছে ইট-পাথর ৷ পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যায় ৷ এরপরই হস্তক্ষেপ করে আদালত ৷ রামনবমীর ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে হনুমান জয়ন্তীতে না ঘটে তার জন্য় হাইকোর্টের নির্দেশে নামানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ সেই মতো, এদিন সকালেই হুগলির মগরা গ্রামীণ থানা এলাকায় আসে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷
আরও পড়ুন: অশান্তি রুখতে শহরে মোতায়েন হাজারখানেক পুলিশ, বডি ক্যামেরার ব্যবহার
রামনবমীর শোভাযাত্রাকে ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছিল রিষড়া। দিলীপ ঘোষ সহ বিজেপি নেতৃত্ব সেই শোভাযাত্রায় ছিলেন। পুলিশ সেদিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। পরদিন আবারও রিষড়া চার নম্বর রেল গেট এলাকা নতুন করে সংঘাত হয় দু'পক্ষের। সংঘর্ষ, আগুন, বোমাবাজির জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পরে। পরিস্থিতি শান্ত হলেও ফের বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী আবারও রিষড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই যাতে হনুমান জয়ন্তীতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেকারণেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নামতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ সেই মতো হুগলির একাধিক জায়গায় ইতিমধ্য়েই পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ কলকাতাতেও মোতায়েন করা হয়েছে বাহিনী ৷
জানা গিয়েছে, এদিন হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্য়ে বিকালে বাঁশবেরিয়া এলাকায় মিছিল করবে বিজেপি ৷ মিছিলে থাকবেন বিজেপি রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্য়ায় ৷ তবে আদালতের নির্দেশে কোনও বক্তব্য় রাখতে পারবেন না রাজনৈতিক নেতারা ৷ পাশাপাশি বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় আসলেও এখনও রুট মার্চ বা টহল দিতে তারা বেরোয়নি ৷ অন্য়দিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনী নামতেই রাজ্য় প্রশাসনকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি ৷ রাজ্য় পুলিশ প্রশাসন কার্যত ব্য়র্থ বলে আক্রমণ করেন রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷