ডানকুনি, 26 ফেব্রুয়ারি : ডানকুনি পৌরসভায় (Bengal Civic Polls 2022) দু’টি খাল দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের হয় না বলে অভিযোগ ৷ ডানকুনি খাল ও সরস্বতী খালকে নিকাশি ব্যবস্থার প্ৰধান মাধ্যম বলা যায় ৷ খাল দু’টি মজে যাওয়ার কারণে এবং দিনের পর দিন নিকাশি নিয়ে সমস্যা বেড়েই চলেছে (Water Logging Problem in Dunkuni Due to Garbage Dumping in Canal) ৷ অভিযোগ একটু বর্ষাতেই ডানকুনি পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ড ভেসে যায় ৷ সাধারণ মানুষ বাড়ি থেকে বেরতে পারে না । স্থানীয় মানুষ ও বিরোধীদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের করা হয় না এই খাল দু’টির ।
খাল সংস্কার না হওয়ার পাশাপাশি আরেকটি বড় সমস্যা হল ডানকুনি খালের পারে রয়েছে কয়েকশো গবাদি পশুর খাটাল ৷ সেই খাটালের নোংরা জল ও গোবর পড়ে আরও মজে যাচ্ছে খাল দু’টি । প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ ৷ পৌরভোটে তাই বিরোধীরা এই ইস্যুকেই প্রধান হাতিয়ার করতে চলেছে ৷ তবে, পৌরসভার তরফে জানানো হয়েছে, খাটাল সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসা হয়েছিল ৷ ডানকুনি খাল ও সরস্বতী খালের সংস্কারও করা হয়েছিল ৷ কিন্তু সংস্কারের জন্য যে টাকার প্রয়োজন, তা কখনই পাওয়া যায়নি ৷ পৌরসভার তরফে জানানো হয়েছে, বিপুল সরকারি আর্থিক সহায়তা না হলে খালের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্ভব নয় ৷
আরও পড়ুন : Saraswati River : অসাধু চক্রের দখলদারি, অবলুপ্তির পথে সরস্বতী নদী
ডানকুনি পৌরসভায় সরস্বতী খালা কালীপুর থেকে 21 নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত বিস্তৃত ৷ আর ডানকুনি খাল কোল কমপ্লেক্স থেকে বন্দেরবিল পযর্ন্ত বয়ে গেছে ৷ তার মধ্যে ডানকুনি খালের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মতো মজে গিয়েছে । আর এই এলাকার মধ্যে খালের পাড়ে রয়েছে 400’র উপর খাটাল ৷ সেখানে গোবর ফেলে আরও বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ পৌরসভার তরফে নানা পরিকল্পনা নিয়ে খাটাল মালিকদের সঙ্গে কথাও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । তবে, আখেরে সেগুলি বাস্তব রূপ নেয়নি ৷
আর সরস্বতী খালে জল না থাকায়, সহজেই মজে গিয়েছে ৷ অভিযোগ আবর্জনায় ভর্তি হয়ে যাচ্ছে খালটি ৷ তাই একটু বর্ষা হতেই খাল উপচে গিয়ে বন্যার আকার নেয় ডানকুনি শহর জুড়ে ৷ পৌরসভা পাম্পিং স্টেশনগুলি নিকাশির কাজ করলেও তাতে সমস্যা মেটে না বলে অভিযোগ । তাই প্রায় সারা বছরই জলজন্ত্রনায় ভুগতে হয় পৌরসভার বাসিন্দাদের ৷ অবশ্য পুজোর আগে প্রায় 10 লক্ষ টাকা সংস্কারের কাজে খরচ করা হয়েছিল ৷ কিন্তু, তা কখনই পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন পৌরপ্রশাসক ৷
আরও পড়ুন : Mayor Of Chandannagar : নাগরিক পরিষেবায় জোর, চন্দননগরের মেয়র পদে হ্যাটট্রিক করে বললেন রাম
11নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মাঝি বলেন, ‘‘দশ বছর হয়ে গেল তৃণমূলের পৌরসভা রয়েছে ৷ এই খালে নোংরা আবর্জনা ও খাটালের গোবর পরে মজে যাচ্ছে ৷ এই খালগুলি পরিষ্কার হলে জল নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হয় । ডানকুনি পৌরসভায় 14টি ওয়ার্ড জলের তলায় তলিয়ে যায় বৃষ্টি হলেই । নর্দমা তো নেই বললেই চলে ৷ খাল সংস্কার করা থাকলে মানুষ কিছু সুরাহা পেত ৷ পৌরসভায় যারা বসে আছেন, এ ব্যাপারে কোনও চিন্তাভাবনা করে না ৷ আবাসন তৈরি করে শুধু টাকা নিচ্ছে ৷ মানুষকে দেখানোর জন্য ভ্যাসেল নামিয়ে কিছুদিন কাজ করে দায় সেরেছে মাত্র । ভোটের সময় মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেয় কেবলমাত্র ৷’’
ডানকুনি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন হাসিনা শবনম বলেন, ‘‘খাল সংস্কার আমরা অবশ্যই চাইছি । মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে । ভোট মিটলেই কাজ শুরু হবে । খাটাল সমস্যার জন্য আমরা গোবর গ্যাস প্লান্ট করতে পারি ৷ এতে দূষণ হবে না ৷ বহু মানুষ উপকৃত হবে । খাটালের গোবর নিয়ে গোবর গ্যাস করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল । কিন্তু, এই বেআইনি খাটালগুলির মালিকদের মধ্যে সম্পূর্ণ অনিহা রয়েছে ৷ আমরা আবারও বোঝাবো ৷ গোবর গ্যাস প্রকল্প হলে বহু বেকারের চাকরি হবে ৷ ভবিষ্যতে আমরা সর্বতভাবে চেষ্টা করব, যাতে এর সমাধান হয় ৷’’