ETV Bharat / state

Hooghly Mohsin College: মহসিন কলেজের ঐতিহ্যকে অটুট রেখেই সংস্কার হবে বঙ্কিম ভবনের - মহসিন কলেজ

হুগলির ঐতিহাসিক মহসিন কলেজের একটি ভবনের ভগ্নদশা। সেটির সংস্কার নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। ঐতিহ্যশালী এই বঙ্কিম ভবন ঐতিহ্য অটুট রেখে সংস্কারের দাবি তোলেন প্রাক্তনীরা । সেই অনুযায়ী মহসিন কলেজের প্রাক্তনীদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। তাতে সিদ্ধান্ত হয় কলেজের ঐতিহ্যকে অটুট রেখেই (Keeping Tradition of Mohsin College) সংস্কার হবে বঙ্কিম ভবনের ৷

Hooghly Mohsin College
মহসিন কলেজের বঙ্কিম ভবনের
author img

By

Published : Jan 19, 2023, 11:13 AM IST

কলেজের ঐতিহ্যকে অটুট রেখেই সংস্কার হবে বঙ্কিম ভবনের

চুঁচুড়া, 18 জানুয়ারি: হুগলির ঐতিহাসিক মহসিন কলেজের মূল ভবনের সংস্কার শুরু হয়েছে। কিন্তু কাউকে কিছু না-জানিয়ে ভাঙা হচ্ছে ভবনটি। এই নিয়েই ক্ষোভ ছিল প্রাক্তনীদের। দাবি, ঐতিহাসিক এই বঙ্কিম ভবন (Bankim Bhavan of Hooghly Mohsin College) ঐতিহ্য অটুট রেখে সংস্কার করতে হবে। সেই অনুযায়ী মহসিন কলেজের প্রাক্তনীদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয় মঙ্গলবার। বৈঠকে কলেজের ঐতিহ্যকে অটুট রেখেই সংস্কার হবে বঙ্কিম ভবনের ৷

চুঁচুড়ায় হুগলি নদীর তীরে ডাচদের প্রাচীন বাগানবাড়িগুলির মধ্যে অন্যতম হুগলি মহসিন কলেজ। 1804 সালে কলেজটি নির্মাণ হয় ৷ 1836 সালে ভবনটি পরিণত হয় মহসিন কলেজে। এই কলেজ থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বারকানাথ মিত্র, কানাইলাল দত্ত শহিদ সঈদ আমির আলির মতো বিখ্যাত মানুষরা পড়াশোনা করেছেন একটা সময়ে। বর্তমান প্রাক্তনীরা জানতে পারেন কলেজের মূল ভবন যেটি বঙ্কিম ভবন নামে পরিচিত সেটি ভাঙা হচ্ছে। বঙ্কিম ভবনের যে নির্মাণ তা নষ্ট যাতে না-হয় তার দাবি তোলা হয়।

ফলে দিন কয়েক আগে কলেজের সেমিনার হলে প্রাক্তনীদের ডাকা হয়। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়র, কলেজের অধ্যক্ষ, হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আলোচনা হয়। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানান, বঙ্কিম ভবনের যা অবস্থা তাতে পুরো ছাদটাই ভেঙে ফেলতে হবে। জানলার উপর থেকে কিছুটা দেওয়ালও নষ্ট হয়েছে সেটাও ভাঙতে হবে। প্রাক্তনীরা এতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এতে ভবনের প্রাচীন স্থাপত্য নষ্ট হবে। তাঁরা দাবি জানান, আগের অবস্থায় রেখে সংস্কার করা হোক। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় ভবনের পুরনো স্থাপত্য বজায় রেখে ছাদ ভাঙা হবে । তারপর সংস্কার করা হবে। কড়িবরগার কাঠামোটি ভাঙা হবে।

উল্লেখ্য, দুই শতাব্দী প্রাচীন হুগলি মহসিন কলেজ সংস্কারের প্রয়োজন ছিল আগেই। কিন্ত আগে তা হয়নি। বর্তমানে কড়িবরগার ছাদ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ছাদের ভারে দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। এরপরই শুরু হয় কাজ । রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে। প্রথম ধাপের ত্রিশ লক্ষ টাকা আসার পর সংস্কারের কাজও শুরু হয়। সব কিছু অটুট রেখেই এই সংস্কার হবে। প্রাক্তনীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। তাতে আশ্বস্ত হন প্রাক্তনীরা।

আরও পড়ুন: বড়দিনে রঙিন ব্যান্ডেল চার্চ, মিডনাইট মাসের আগেই উপচে পড়ল ভিড়

মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ পুরুষোত্তম প্রামাণিক বলেন, "এই ভাঙার কাজটা হচ্ছে পূর্ত দফতরের তরফে ৷ সমস্যাটা এই নিয়ে যে কেন ভবনটি ভাঙা হচ্ছে ৷ সেই বিষয়ে কথছা বলতে প্রাক্তনী ও পূর্ত দফতরকে একসঙ্গে ডাকা হয়েছিল ৷" প্রাক্তনীদের পক্ষ থেকে মোহনলাল ঘোষ বলেন, "আমরা বলেছিলাম পেরন সাহেবের যে ফরাসি স্থাপত্য রয়েছে, সেটা যেন অক্ষুন্ন থাকে তার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনের ছাদ শুধু ভাঙা হবে। বাকি সব একই থাকবে। ফার্ম সাইডে যে জায়গা আছে, সেটাকে নতুন করে বিকল্প ক্লাস করার চিন্তা ভাবনা করতে হবে। তা না-হলে আগামিদিনে আরও সমস্যা হতে পারে।"

কলেজের প্রাক্তনী হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, "আমরা হঠাৎই জানতে পারি ভবনটি ভাঙা হবে ৷ কিছু ফাটল দেখা দিয়েছে। অধ্যক্ষের উচিত ছিল বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই প্রাক্তনীদের খবর দেওয়া সেটা করা হয়নি। পরে ডাকা হয়েছে এটা ভালো। মহসিন কলেজ নিয়ে মানুষের একটা সেন্টিমেন্ট আছে। সর্বত্রই এই ধরনের প্রাচীন ভবন গুলোকে ঐতিহ্য স্থাপত্য বজায় রেখেই সংস্কার করা হয়। আমি পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়রকে বলেছি প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ দল নিয়োগ করুন যারা এই স্থাপত্য নিয়ে কাজ করেন। কোনভাবেই স্থাপত্যকে বিকৃত করা যাবে না।"

কলেজের ঐতিহ্যকে অটুট রেখেই সংস্কার হবে বঙ্কিম ভবনের

চুঁচুড়া, 18 জানুয়ারি: হুগলির ঐতিহাসিক মহসিন কলেজের মূল ভবনের সংস্কার শুরু হয়েছে। কিন্তু কাউকে কিছু না-জানিয়ে ভাঙা হচ্ছে ভবনটি। এই নিয়েই ক্ষোভ ছিল প্রাক্তনীদের। দাবি, ঐতিহাসিক এই বঙ্কিম ভবন (Bankim Bhavan of Hooghly Mohsin College) ঐতিহ্য অটুট রেখে সংস্কার করতে হবে। সেই অনুযায়ী মহসিন কলেজের প্রাক্তনীদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয় মঙ্গলবার। বৈঠকে কলেজের ঐতিহ্যকে অটুট রেখেই সংস্কার হবে বঙ্কিম ভবনের ৷

চুঁচুড়ায় হুগলি নদীর তীরে ডাচদের প্রাচীন বাগানবাড়িগুলির মধ্যে অন্যতম হুগলি মহসিন কলেজ। 1804 সালে কলেজটি নির্মাণ হয় ৷ 1836 সালে ভবনটি পরিণত হয় মহসিন কলেজে। এই কলেজ থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বারকানাথ মিত্র, কানাইলাল দত্ত শহিদ সঈদ আমির আলির মতো বিখ্যাত মানুষরা পড়াশোনা করেছেন একটা সময়ে। বর্তমান প্রাক্তনীরা জানতে পারেন কলেজের মূল ভবন যেটি বঙ্কিম ভবন নামে পরিচিত সেটি ভাঙা হচ্ছে। বঙ্কিম ভবনের যে নির্মাণ তা নষ্ট যাতে না-হয় তার দাবি তোলা হয়।

ফলে দিন কয়েক আগে কলেজের সেমিনার হলে প্রাক্তনীদের ডাকা হয়। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়র, কলেজের অধ্যক্ষ, হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আলোচনা হয়। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানান, বঙ্কিম ভবনের যা অবস্থা তাতে পুরো ছাদটাই ভেঙে ফেলতে হবে। জানলার উপর থেকে কিছুটা দেওয়ালও নষ্ট হয়েছে সেটাও ভাঙতে হবে। প্রাক্তনীরা এতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এতে ভবনের প্রাচীন স্থাপত্য নষ্ট হবে। তাঁরা দাবি জানান, আগের অবস্থায় রেখে সংস্কার করা হোক। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় ভবনের পুরনো স্থাপত্য বজায় রেখে ছাদ ভাঙা হবে । তারপর সংস্কার করা হবে। কড়িবরগার কাঠামোটি ভাঙা হবে।

উল্লেখ্য, দুই শতাব্দী প্রাচীন হুগলি মহসিন কলেজ সংস্কারের প্রয়োজন ছিল আগেই। কিন্ত আগে তা হয়নি। বর্তমানে কড়িবরগার ছাদ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ছাদের ভারে দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। এরপরই শুরু হয় কাজ । রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে। প্রথম ধাপের ত্রিশ লক্ষ টাকা আসার পর সংস্কারের কাজও শুরু হয়। সব কিছু অটুট রেখেই এই সংস্কার হবে। প্রাক্তনীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। তাতে আশ্বস্ত হন প্রাক্তনীরা।

আরও পড়ুন: বড়দিনে রঙিন ব্যান্ডেল চার্চ, মিডনাইট মাসের আগেই উপচে পড়ল ভিড়

মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ পুরুষোত্তম প্রামাণিক বলেন, "এই ভাঙার কাজটা হচ্ছে পূর্ত দফতরের তরফে ৷ সমস্যাটা এই নিয়ে যে কেন ভবনটি ভাঙা হচ্ছে ৷ সেই বিষয়ে কথছা বলতে প্রাক্তনী ও পূর্ত দফতরকে একসঙ্গে ডাকা হয়েছিল ৷" প্রাক্তনীদের পক্ষ থেকে মোহনলাল ঘোষ বলেন, "আমরা বলেছিলাম পেরন সাহেবের যে ফরাসি স্থাপত্য রয়েছে, সেটা যেন অক্ষুন্ন থাকে তার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনের ছাদ শুধু ভাঙা হবে। বাকি সব একই থাকবে। ফার্ম সাইডে যে জায়গা আছে, সেটাকে নতুন করে বিকল্প ক্লাস করার চিন্তা ভাবনা করতে হবে। তা না-হলে আগামিদিনে আরও সমস্যা হতে পারে।"

কলেজের প্রাক্তনী হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, "আমরা হঠাৎই জানতে পারি ভবনটি ভাঙা হবে ৷ কিছু ফাটল দেখা দিয়েছে। অধ্যক্ষের উচিত ছিল বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই প্রাক্তনীদের খবর দেওয়া সেটা করা হয়নি। পরে ডাকা হয়েছে এটা ভালো। মহসিন কলেজ নিয়ে মানুষের একটা সেন্টিমেন্ট আছে। সর্বত্রই এই ধরনের প্রাচীন ভবন গুলোকে ঐতিহ্য স্থাপত্য বজায় রেখেই সংস্কার করা হয়। আমি পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়রকে বলেছি প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ দল নিয়োগ করুন যারা এই স্থাপত্য নিয়ে কাজ করেন। কোনভাবেই স্থাপত্যকে বিকৃত করা যাবে না।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.