আরামবাগ, 6 ডিসেম্বর: দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করায় আরামবাগে গ্রেফতার এক বাংলাদেশি যুবক । নাম পলাশ গোস্বামী ওরফে জয়। বাড়ি বাংলাদেশের কালিয়াপুর থানা এলাকায়। দালাল চক্র কাজের প্রলোভন দেখিয়ে নদীপথে অভিযুক্তদের অবৈধ উপায়ে অনুপ্রবেশ করায় বলে অভিযোগ । পলাশের দাবি, কাজের জন্য পশ্চিমবঙ্গে স্ত্রী'কে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি । দালালের খপ্পড়ে পরে নিখোঁজ হয়ে যান তাঁর স্ত্রী। তাঁর খোঁজেই আরামবাগ গৌরহাটি মোড়ে আসেন তিনি। সেখান থেকেই স্থানীয় মানুষের তৎপরতায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় পলাশকে ।
এরপরই জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা বিষয়টি জানতে পারে আরামবাগ থানার পুলিশ । পলাশকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ বারাসত থেকে আরও চার যুবককে গ্রেফতার করেছে । ধৃতদের নাম সৈয়দ মণ্ডল,আলিম মণ্ডল,আলামিন সরদার ও জাহেদুল সরদার । জানা গিয়েছে, এদের মধ্যে সৈয়দ কর্ণাটকের বাসিন্দা । পুলিশ এখনও পলাশের স্ত্রীর হদিশ পায়নি । ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল অভিযুক্তকে খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে ।
এ প্রসঙ্গে আরামবাগের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল বলেন, "বাংলাদেশি এক যুবককে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে । জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে বারাসত এলাকা থেকে পলাশ ছাড়াও আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এর সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে কি না, সেটারও খোঁজ চালানো হচ্ছে ।" মঙ্গলবার বাংলাদেশি-সহ পাঁচজনকে আরামবাগ আদালতে তোলা হয় । বিচারক তাঁদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷
অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তার মধ্যে পলাশের বাড়ি বাংলাদেশে । আলিম ও আলামিনের বাড়ি উত্তর 24 পরগনায় । সৈয়দের বাড়ি কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে । চারজনকে দত্তপুকুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে । পলাশকে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । বাকিদের এই মামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে । পলাশের অভিযোগ, স্ত্রী নিখোঁজ ছিল । সেই কারণে এখানে আসেন তিনি । এদেরকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ।"
সূত্রের খবর, বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই কাজের সন্ধানে ভারতে এসে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ওই বাংলাদেশি যুবক । দালালের মাধ্যমে ভারতে আসেন যুবক । এক দালাল তাঁকে কাজের টোপ দেন । সেইমতো বাংলাদেশ থেকে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগে করেন পলাশ । স্ত্রীকে নিয়ে নদী পেরিয়ে দালালের কথা মতো ভারতে আসেন তিনি । দালালের লোক তাঁদের একটি ঘরে নিয়ে যায় ।
জানা গিয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে 15 হাজার টাকাও নিয়েছিল দালালরা । স্ত্রীকে ঘরে বসিয়ে রেখে পলাশ বাজারে বেরিয়েছিলেন । কিন্তু তারপর থেকে দালাল ও পলাশের স্ত্রীর কোনও খোঁজ মেলেনি । এরপরই বিভিন্ন জায়গা ঘুরে আরামবাগে এসে পুলিশের কবলে পড়েন তিনি । গোটা বিষয়টির তদন্তের পরই পরিষ্কার হবে, কেন ও কী উদ্দেশ্যে এসেছিলেন বাংলাদেশি যুবক । এতো নিরাপত্তা সত্ত্বেও কীভাবে সীমানা পেরিয়ে ভারতে ঢুকলেন তিনি, তারও তদন্ত চলছে ।
আরও পড়ুন: