চন্দননগর, 29 নভেম্বর : অনিতা মুখোপাধ্যায় ৷ 1988 সাল থেকে আরামবাগের গোঘাট কাঁঠালী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করে আসছেন ৷ ছোটবেলায় মায়ের কাছে গীতাপাঠ ও চণ্ডীপাঠ শেখেন ৷ বাড়িতে বরাবর পুজোর চল থাকলেও তাঁর মনে পুজো করার ইচ্ছে জেঁকে বসে মাকে হারানোর পর ৷
বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও পুজো-আর্চা শিখতে ব্যর্থ হন অনিতা ৷ সব জায়গাতেই শোনেন মেয়েদের জন্য এই কাজ নয় ৷ এরপর নিজেই বিভিন্ন বই কিনে শিখতে পড়তে শুরু করেন ৷ অনেক চেষ্টা করে অবশেষে কলকাতার দাঁ বাড়িতে পরিচিতি সূত্রে ভর্তি হন পুজো-সহ যাবতীয় কাজ শেখার ক্লাসে ৷ স্কুলে শিক্ষকতা করে শনিবার ও রবিবার অনিতাদেবী যেতেন সেই ক্লাসে ৷ কোন্ননগরে বন্ধুর বাড়ি থেকে কলকাতায় যাওয়া আসা করে চলত এই ক্লাস ৷
পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে টুকটাক পুজো শুরু করেন ৷ এরপর বন্ধুকে বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছের কথা প্রকাশ করেন ৷ কথা প্রসঙ্গে সেই সুযোগও চলে আসে ৷ সেই মতোই চন্দননগরে বাঙালি বর ও পাঞ্জাবী কনের বিয়ে দিলেন (Woman Priest in Marriage) ৷ এই বিয়ে দিতে এসেই আরও একাধিক বিয়ে দেওয়ার ডাক পেয়েছেন তিনি ৷ শুধু বিয়ে নয়, আরও পুজো ও গৃহপ্রবেশের প্রস্তাবও পেয়েছেন অনিতাদেবী ৷ মনের দীর্ঘদিনের ইচ্ছে পূরণ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি তিনি (Women Priest Gives Marriage) ৷
আরও পড়ুন : Female Priests : এবার দুর্গাপুজোও করতে চান টোলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বৈশাখী
তবে এতদূর আসার পথটা যে খুব একটা মসৃণ ছিল না তাও জানালেন ৷ মেয়ে হিসেবে পুজো করার ইচ্ছে প্রকাশ করায় অনেকেই তাঁকে সাহায্য করেননি ৷ যার জন্য মাঝে বেশ কয়েকদিন তিনি পুজোর কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ৷ তবে হার মানেননি ৷ শুভাকাঙ্খীদের সাহায্য আর নিজের চেষ্টায় আজ মহিলা পুরোহিত হিসেবে সফল অনিতা মুখোপাধ্যায় ৷ হুগলি জেলায় তিনিই প্রথম মহিলা পুরোহিত, যিনি কারও বিয়ে দিলেন ৷
তাঁর বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পারিশ্রমিকের চাহিদা নেই । তিনি শুধু কাজ করে যেতে চান । তৈরি করে যেতে চান শিষ্য। রাজ্য সরকারের তরফে পেয়েছেন শিক্ষাশ্রী পুরস্কার । শিক্ষকতার পাশাপাশি ক্যারাটে শিখেছেন ।
আরও পড়ুন :Female Priests : এবার দুর্গাপুজোও করতে চান টোলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বৈশাখী