দার্জিলিং, 4 সেপ্টেম্বর: স্কুল পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনার পরেও শিক্ষা দফতর উদাসীন বলে অভিযোগ । পড়ুয়ার মৃত্যুর পর পাঁচ দিন কেটে গেলেও র্যাফল শিট লটারি নিয়ে কোনও হেলদোল প্রশাসন কিংবা শিক্ষা দফতরের নেই বলেই অভিযোগ । ফলে এবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শিক্ষা বিভাগ, প্রশাসনের পাশাপাশি জিটিএ-র (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্য়াডমিনিস্ট্রেশন) ভূমিকা নিয়ে ।
স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, পুজোর আগে বা বছরের কোনও একটা সময় ফান্ড সংগ্রহের জন্য র্যাফল শিটের ব্যবহার করা হয় । যা স্কুল পড়ুয়াদের বিক্রি করতে দেওয়া হয় । এই ধরনের লটারি খেলা এবং সেই লটারি স্কুল পড়ুয়াদের বিক্রি করতে দেওয়া স্কুল শিক্ষা দফতরের আইন বিরুদ্ধ । রাজ্যের অন্য কোথাও কোনও স্কুলে এই ধরনের লটারি খেলার আয়োজন করা হয় না ৷ শুধুমাত্র পাহাড়ে এই ধরনের খেলার আয়োজন হয়ে থাকে প্রায় কয়েক বছর ধরে ।
অভিযোগ, এমন নয় বিষয়টি জেলা প্রশাসন বা শিক্ষা দফতর কিংবা জিটিএ আধিকারিকদের নজরে পরেনি । বহুদিন আগে থেকেই বেআইনিভাবে ওই লটারি খেলার আয়োজনের বিষয়টি জানতে পেরেছেন তাঁরা । কিন্তু তারপরেও শীতঘুম কাটেনি তাঁদের । তার মাশুল দিতে হল নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে৷ টিকিট বিক্রি করতে না পেরে স্কুলে হেনস্তার শিকার হয়ে ওই পড়ুয়া আত্মঘাতী হয় ৷ অভিযোগ, ওই আত্মহত্যার পরেও গা ছাড়া মনোভাব জেলা প্রশাসন থেকে জিটিএ আধিকারিকদের ।
এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, "র্যাফল শিটের বিষয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি । বিষয়টি পরে দেখা হবে ।" দার্জিলিং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক রবিনা তামাং বলেন, "র্যাফল শিট লটারি নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই । আমরা কোনও পদক্ষেপ এখনও করছি না । ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশ এলে পদক্ষেপ করা হবে ।"
জিটিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান (উচ্চশিক্ষা) রাজেশ চৌহান বলেন, "র্যাফল শিটের বিষয়ে আমরা কিছু করতে পারব না ।" এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের বিধায়ক নিরজ জিম্বা বলেন, "র্যাফল শিট বিষয়টিই কাউন্সিলের আইনবিরোধী ও বেআইনি । কেন কেউ পদক্ষেপ করছে না জানা নেই ।"
প্রসঙ্গত, 31 অগস্ট দার্জিলিংয়ের একটি সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণীর এক ছাত্র র্যাফল শিট বিক্রি করতে না পারায়, তাকে অপমান করার অভিযোগ ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে । শুধু তাই নয়, স্কুল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে । অপমান সহ্য করতে না পারায় বাড়িতেই স্কুল ইউনিফর্ম পরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ ৷ পরে ওই ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক গগেন্দ্র গুরুংকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: দার্জিলিংয়ে ছাত্র আত্মহত্যা-মামলায় প্রধান শিক্ষকের 14 দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজত