শিলিগুড়ি, 27 এপ্রিল : লকডাউনে বন্ধ হোটেল, রেস্তরাঁ। বাইরে আসছেন না সাধারণ মানুষও । সপ্তাহে একদিন বাজার না করলে যে বাঙালীর চলত না, তারাই এখন একদিন বাজার যাচ্ছেন । এমন সময় বন্ধ উত্তরবঙ্গের লঙ্কা, টমাটো ও নানা সবজির রপ্তানিও। এই পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি থাকায় হু হু করে কমছে সবজির দাম। ক্ষতি স্বীকার করেই বাজারে সবজি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা ।
শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারে দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করেই দাম পড়ে গিয়েছে শাক-সবজির । ঝিঙা, আলু, টম্যাটো, লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে নামমাত্র দামে । ক্ষতি স্বীকার করে সেসব বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কিন্তু হঠাৎ এভাবে কেন দাম কমল শাকসবজির ? খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হোটেল-রেস্তরাঁ বন্ধ থাকায় চাহিদার তুলনায় জোগান বেড়ে গিয়েছে । এই পরিস্থিতিতে কম দামে বিক্রি হচ্ছে উত্তরবঙ্গে উৎপাদিত বহু শাকসবজি । পাশাপাশি ভিনরাজ্যে রপ্তানির পথ বন্ধ থাকায় কার্যত কেনা দামেই সবজি বিক্রি করে দিতে চাইছেন বিক্রেতারা । ক্রেতাদের লাভ হলেও আখেরে চরম অনটনের মুখে পড়েছেন সবজি উৎপাদক চাষি ও বিক্রেতারা ।
লকডাউনের ফলে কলকারখানা বন্ধ। লোকের হাতে টাকাও নেই। তাই দাম চাইলে দিচ্ছেন না কেউই। পাশপাশি, কাজ হারিয়ে বহু যুবক রাতারাতি সবজি নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ফেরি করে বেড়াচ্ছেন । এই পরিস্থিতিতে বাজারে কমছে ক্রেতার সংখ্যা। শিলিগুড়ির বিধান মার্কেট, ক্ষুদিরামপল্লি বাজারসহ নানা বাজারের ছবিটা একই রকম । এই পরিস্থিতিতে নিজেদের অনটনের কথা জানিয়েও কম দামে সবজি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা ।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে শিলিগুড়ি বৃহত্তর সবজি বিক্রেতা সমিতির সভাপতি কাউন্সিলর নান্টু পাল বলেন, "বাজারে ভিড় করতে চাইছেন না অনেকে। তাঁরা বাজারে আসছেন না। অন্যদিকে হোটেল ইত্যাদি বন্ধ। রপ্তানি বন্ধ। এর পাশাপাশি কাজ হারিয়ে বহু মানুষ রাতারাতি সবজি বিক্রেতা হিসেবে সবজি বিক্রি করায় বাজারে কমে গিয়েছে ক্রেতার সংখ্যা।" এই পরিস্থিতি সামলাতে বড় এবং খোলামেলা এলাকায় বাজার স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন নান্টু পাল। তিনি বলেন শিলিগুড়িতে আমরা স্টেডিয়ামের মেলা গ্রাউন্ডে বাজারগুলি স্থানান্তর করতে চাইছি। আশা করছি বড় এবং খোলা এলাকায় ভিড় কম হলে ক্রেতা আসবেন। কোরোনা পরিস্থিতির জেরে লকডাউনে এই ক্ষতি কিভাবে সামাল দেওয়া যায় তার সমাধান দূর-অস্ত বলে মেনে নিয়েছেন তিনিও ।