শিলিগুড়ি, 5 ডিসেম্বর: শীতের মরশুম ও ক্রিসমাসের আগে বড় ধাক্কা পাহাড়ের পর্যটনে (Darjeeling Tourism) ৷ যথেষ্ট সংখ্য়ায় পর্যটক না-থাকায় চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যেই দু'টি টয়ট্রেন পরিষেবা (Toy Train Service) বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের (Northeast Frontier Railway) আওতাধীন দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (Darjeeling Himalayan Railway) বা ডিএইচআর (DHR) কর্তৃপক্ষ ৷
ডিএইচআর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাতিল হওয়া টয় ট্রেন দু'টির মধ্য়ে একটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং রুটে যাতায়াত করছিল ৷ অন্যটি ছিল দার্জিলিং-ঘুম স্পেশাল জয় রাইড পরিষেবা ৷ বছর শেষে পর্যটকদের বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখেই গত নভেম্বর মাসে এই দু'টি টয় ট্রেন চালু করা হয় ৷ স্থির হয়, শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত সপ্তাহে তিনদিন যাতায়াত করবে একটি বাতানুকূল টয় ট্রেন ৷ এর পাশাপাশি, শীতকালের পর্যটন ও ক্রিসমাসের কথা মাথায় রেখে দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত অতিরিক্ত দু'টি জয়রাইড পরিষেবাও শুরু করা হয়েছিল ৷ তার মধ্যে একটি পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ ৷
আরও পড়ুন: দার্জিলিং সফরের মাঝেই সস্ত্রীক টয় ট্রেন ভ্রমণ রাজ্যপালের
রেল সূত্রে আরও জানা গিয়েছ, 52539 নম্বরের ট্রেনটি এনজেপি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত সপ্তাহে তিনদিন করে চলাচল করছিল ৷ এই বাতানুকূল টয় ট্রেন পরিষেবা আগামী17 ডিসেম্বর থেকে 28 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় তিনমাস বন্ধ থাকবে ৷ পাশাপাশি, 02537 এবং 02550 দার্জিলিং-ঘুম স্পেশাল জয় রাইড 6 ডিসেম্বর থেকে 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় একমাস বন্ধ রাখা হবে ৷
রেলের হাতে থাকা হিসাব বলছে, 2021 সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় 1 লক্ষ পর্যটক টয় ট্রেনে সফর করেছিলেন ৷ তা থেকে রেলের আয় হয়েছিল 7 কোটি 2 লক্ষ টাকা ৷ সেই জায়গায় চলতি বছর অর্থাৎ 2022 সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত টয় ট্রেনে সওয়ার যাত্রী বা পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে হয় প্রায় 1 লক্ষ 10 হাজার ৷ পাশাপাশি, একাধিক স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়, যেগুলির টিকিটের দাম বেশি ছিল ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এক্ষেত্রে বাড়তি রেস্ত খরচ করেও মানুষ কিন্তু টয় ট্রেনে চেপেছে ৷ ফলে চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে (এই রুটে টয় ট্রেন চালিয়ে) রেলের আয় বেড়ে হয়েছে 13 কোটি 45 লক্ষ ৷ কিন্তু, তারপরও টয় ট্রেন পরিষেবায় কাটছাঁট করায় উঠছে প্রশ্ন ৷
এই প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, "এই সময় পর্যটকদের চাহিদা একদম কম ৷ টয় ট্রেনে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না ৷ সেই কারণেই দু'টি ট্রেন বন্ধ করা হচ্ছে ৷"
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম এস কে চৌধুরী বলেন, "পরিষেবা আমরা যেকোনও মুহূর্তেই ফের চালু করতে পারি ৷ সেই পরিকাঠামো আমাদের কাছে রয়েছে ৷ কিন্তু, আমরা খালি ট্রেন চালানোর পক্ষপাতী নই ৷ পর্যটকদের চাহিদা বাড়লেই ফের পরিষেবা চালু করা হবে ৷"
টয় ট্রেন পরিষেবায় কাটছাঁট করা নিয়ে ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "এই পদক্ষেপ সত্যিই হতাশাজনক ৷ কিছু পরিষেবা চালু করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করছে রেল কর্তৃপক্ষ ৷ তার জেরেই এমন ঘটনা ঘটছে ৷ কিন্তু, এতে পর্যটনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ৷"