শিলিগুড়ি, 30 জুন: শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ দখল করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । যদিও ভোট গণনার সময় কারচুপির অভিযোগ এনেছে বিজেপি (BJP alleges vote rigging) ৷ এর প্রতিবাদে গণনা কেন্দ্রের ভিতরেই রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে বসে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা । অভিযোগ, কাউন্টিংয়ের সময় বিজেপি প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টের অবর্তমানে ফলাফল ঘোষণা করা হয় । জয়ী ঘোষণা করা হয় মহকুমা পরিষদের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কুমুদিনী বারিককে । আর এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা । পুনর্গণনার দাবিতে তারা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে বসেন ।
বিজেপি প্রার্থী রেনুকা যাদবের অভিযোগ, তিনি এবং তাঁর কাউন্টিং এজেন্টের অনুপস্থিতিতে আচমকা তৃণমূল কংগ্রেসকে জয়ী ঘোষণা করা হয় ৷ এরপরই তাঁরা প্রথমে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পুনর্গণনার দাবি জানান। রিটার্নিং অফিসার তা অস্বীকার করলে রিটানিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান । ব্লক বিজেপি সভাপতি সন্তোষ সিংহ এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমাদের অনুপস্থিতিতে আচমকা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হল । আমাদের নথি পর্যন্ত দেখানো হল না। আমরা চাই পুনরায় কাউন্টিং হোক।"
আরও পড়ুন : শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে সবুজ-ঝড়, পঞ্চায়েত হাতছাড়া সিপিআইএমের
শিলিগুড়ি পৌরনিগমের পর মহকুমা পরিষদ নির্বাচনেও বুধবার জয় পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । মহকুমা পরিষদের 9টি আসনের মধ্যে 8তেই জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস । অন্যদিকে, 4টি পঞ্চায়েত সমিতিও নিজেদের দখলে রেখেছে শাসকদল । পঞ্চায়েত সমিতির গণনার পর পরই শুরু হয়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের উচ্ছাস । মহাকুমার 4টি পঞ্চায়েত সমিতির ভোট গণনা শুরুতে খড়িবাড়ি 12টি গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে 9টি তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করে । তিনটিতে বিজেপি জয় পায় ।
নকশালবাড়িতে তৃণমূলের ফল গতবারের তুলনায় আরও ভালো হয়েছে । সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির 18টি আসনের মধ্যে একটি মাত্র বিজেপি দখল করতে পেরেছে । বাকি 17টি তৃণমূল নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে । মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির 15টি আসনের মধ্যে 12টি তৃণমূল এবং তিনটি আসন বিজেপির দখলে গিয়েছে । ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির 21টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি আসনে জয়ী হয়েছে । অন্যদিকে, 22টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে 19টি আসনই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ।
আরও পড়ুন : ফাঁসিদেওয়ায় গণনা কেন্দ্রের বাইরে বিশৃঙ্খলা, পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ পুলিশের
উল্লেখযোগ্যভাবে, মহকুমা পরিষদের আসনে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাধিপতি প্রার্থী তথা গতবারের বিজয়ী প্রার্থী কাজল ঘোষ । পরাজিত হয়েছেন সিপিএম নেতা গৌতম ঘোষ । জয়ী হয়েছেন তারকা প্রার্থী রুমা রেশমি এক্কা, নলিনী রঞ্জন রায় । এদিকে এবারের সবার নজর ছিল ফাঁসিদেওয়া আসনে । সেখানে আইনুল হক বনাম নির্দল প্রার্থী আখতার আলির লড়াই ছিল । সেখানেও 1600 ভোটে জয়ী হয়েছেন আইনুল হক । অন্যদিকে, জয়ী হয়েছেন প্রাক্তন সভাধিপতি জ্যোতি তির্কে । সব মিলিয়ে সরগরম ছিল গণনা পর্ব ।
জ্যোতি তির্কে বলেন, "এই জয় মানুষের জয়, মা, মাটির জয় । এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় ।" আইনুল হক বলেন, "নির্দল, বিরোধী যাই থাকুক না কেন মানুষ আমাদের পাশে ছিল । মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে ছিল, আছে ও থাকবে ।" পরাজিত প্রার্থী আখতার আলি বলেন, "আমি পরাজয়কে মাথা নত করে স্বীকার করছি । তবে ভয়মুক্তভাবে যদি ভোট হত তাহলে হয়ত আমি জয়ী হতাম। "