শিলিগুড়ি, 9 জুলাই : শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর । শিলিগুড়ি পৌরনিগমে রয়েছে 47 টি ওয়ার্ড । পৌরনিগমের মূল পরিষেবার অন্যতম জঞ্জাল অপসারণ । অভিযোগ উঠেছিল, বাম আমলে পৌরনিগমের নিজস্ব জঞ্জাল সাফাই এর পাশাপাশি আধিকারিকদের গাড়ি থাকা সত্বেও বেসরকারি সংস্থা থেকে গাড়ি নিয়ে আর্থিক অপচয় করা হচ্ছিল । বাড়তি অর্থের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছিল পৌরনিগমের উপর ।
শুধু তাই নয় । পরিষেবার জন্য কেনা তেল চুরি থেকে পৌরনিগমের গাড়িগুলি বেসরকারি সংস্থার বা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল । এই ধরনের দুর্নীতি দূর করতে এবার নজরদারিতে বিশেষ জোর দিচ্ছে শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ড ।
দায়িত্ব নেওয়ার পর ইতিমধ্যেই অন্তত 21 বেসরকারি গাড়ির টেন্ডার বাতিল করেছে পৌরপ্রাশাসক বোর্ড । গাড়িগুলি বাম আমলে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল । বাম আমলে নিজেদের গাড়ি থাকা সত্ত্বেও সেগুলিকে বসিয়ে রেখে টেন্ডারের মাধ্যমে গাড়ি নিয়ে পৌরনিগমের পরিষেবা দেওয়ার অভিযোগ উছেঠে । এই খাতে প্রায় দেড় কোটি টাকার বিল আটকে দিয়েছে বর্তমান প্রশাসক বোর্ড ।
পৌরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন শিলিগুড়ি পুরনিগমের অধীনে শতাধিক গাড়ি জঞ্জাল অপসারণ থেকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে । এই সব গাড়ির উপর নজরদারি রাখতে প্রতিটি গাড়িতে বসানো হবে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম । এতে কোন সময় কোন গাড়ি কোথায় যাচ্ছে তা সম্পূর্ণটাই অনলাইনে ট্র্যাক করা হবে । পৌরনিগমের প্রশাসনিক ভবনের পাশাপাশি প্রতিটি বোরো থেকে একইভাবে নজরদারি চালানো হবে । শুধু তাই নয় প্রতিদিন পরিষেবা দিতে কত তেল খরচ হচ্ছে এবং জ্বালানি অপচয় করা হচ্ছে কী না সেটির উপর নজরদারি রাখতে ব্যবহার করা হবে ফুয়েল ট্র্যাকিং সিস্টেম ।
শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার বলেন, " প্রচুর গাড়ি বেসরকারি সংস্থার থেকে টেন্ডারে নেওয়া হয়েছে । অথচ পৌরনিগমের নিজস্ব গাড়ি থাকা সত্ত্বেও সেগুলিকে গ্যারেজে অথবা অন্য কোথাও ফেলে রাখা হয়েছে । ব্যবহার করা হচ্ছিল না । বাড়তি খরচের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছিল । গাড়িগুলো কখন কোথায় যাচ্ছে সে সব নজরদারির কোনও বালাই নেই । এসব বিষয় সামনে আসতেই আমরা নজরদারির জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি । এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জাতীয়স্তরের সংস্থার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি ।" আর এক সদস্য অলোক চক্রবর্তী বলেন," গাড়িগুলোর উপর নজরদারির জন্য বিশেষত এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে দুর্নীতিহীন একটি পরিষেবা আমরা চালু করতে পারবো ।"
আরও পড়ুন : যাত্রীদের কথা ভেবে উত্তরের সব রুটে চলবে অর্ধেক বেসরকারি বাস
এদিকে বর্তমান পুরবোর্ডের অভিযোগ মানতে নারাজ শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য । তাঁর সাফকথা দুর্নীতি হয়ে থাকলে প্রমাণ করুক । তৃণমূল ক্ষমতায় এসে এখন অনেক কিছু করবে । মানুষের যেটা দরকার সেটা না করে গাড়ির তেল নিয়ে পড়েছে । এদিকে শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা প্রাক্তন প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য শঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন এসব পুরোটাই তৃণমূলের আইওয়াশ । এখন দরকার করোনা সংক্রমণ আটকানো । করোনার টিকাকরণের ব্যাবস্থা করা উচিৎ । পৌরসভা এসব না করে ফ্রি ওয়াইফাই জ়োন , গাড়িতে তেলের মিটার এসব করছে ।