দার্জিলিং, 11 অক্টোবর: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়র রিসার্চ স্কলারকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগে অপসারিত করা হল বিভাগীয় প্রধানকে । ওই বটানি বিভাগের রিসার্চ স্কলারকে দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দেওয়া ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে । বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট দেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটি ।
বুধবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর । অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ক্লাস বয়কট করে মৌন বিক্ষোভে বসেন পড়ুয়ারা । তাঁদের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে ৷
জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বটানি বিভাগের এক জুনিয়র রিসার্চ স্কলার অভিযোগ জানিয়েছেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের বটানি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জ্ঞানবিকাশ ভাণ্ডারির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ করেন তিনি । 2022 সাল থেকে জুনিয়র রিসার্চ স্কলার ওই যুবতী অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি-র জন্য গবেষণা শুরু করেন । অভিযোগ, সেই থেকেই ওই গবেষককে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানি শুরু করেন অধ্যাপক ।
অভিযোগ, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাবরেটরিতে যুবতীকে একা পেয়ে যৌন হেনস্থা করেন ওই অধ্যাপক । এরপরই ওই যুবতী শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানায় । যদিও গোটা ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে । অধ্যাপককে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে । পড়ুয়াদের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্ত অধ্যাপককে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হোক, পাশাপাশি তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হোক ।
আরও পড়ুন: দেড় মাসের মাথায় ফের বদল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে
ওই বিভাগের আরেক রিসার্চ স্কলার মহিমা সরকার বলেন, "এর আগেও ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠেছে । ছাত্রীদের নিয়ে কটূক্তি করেন ওই অধ্যাপক । এই ঘটনার পর যাতে নির্যাতিতা কোনওরকম অভিযোগ না জানান, তার জন্য তাঁকে নানারকম হুমকি দেওয়া হয়েছে । আমরা অভিযুক্তের শাস্তি চাই ।"
আরেক গবেষক সলমন হায়দার বলেন, "আমরা অভিযুক্ত অধ্যাপকের কড়া শাস্তির দাবি রেখেছি । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদাসীন । দ্রুত পদক্ষেপ না করলে বড়সড় আন্দোলন হবে ।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, "অধ্যাপককে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটি তদন্ত করবে । ততদিন ওই অধ্যাপককে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে । তাঁর জায়গায় বিজ্ঞান বিভাগের ডিন সুভাষচন্দ্র রায়কে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ।"