শিলিগুড়ি, 10 মে: ভাঙাচোরা, টিনা, লোহা, প্লাস্টিক। হামেশাই রাস্তা দিয়ে এই ডাক শুনতে পাওয়া যায়। বাড়ির সমস্ত ভাঙাচোরা মাসের বা বছরের শেষে বিক্রি করা হয়। আর তাতে অল্পকিছু টাকাও মেলে। কিন্তু এমনটা যদি হয় যে ভাঙাচোরা বিক্রি করে কোটি টাকা মেলে। তাও এক বা দু'কোটি নয়। একশো কোটিরও বেশি ৷ যা কি না, রেকর্ড ভাঙা। শুনতে অবাক হলেও এটাই সত্যি। ভাঙাচোরা বিক্রি করেই রেকর্ড তৈরি করেছে ভারতীয় রেলের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ।
2022-23 আর্থিক বছরে ভাঙাচোরা বিক্রি করে 186 কোটি 34 লক্ষ টাকা আয় করেছে এনএফ রেল। শুধুমাত্র ভাঙাচোরা বিক্রি করে এত টাকা আয় হয়েছে এটা এনএফ রেলের ইতিহাসে প্রথম। মূলত, ভারতীয় রেল 'জিরো স্ক্র্যাপ মিশন'এর উদ্যোগ নেয়। অর্থাৎ বর্জ্যমুক্ত রেল বিভাগ। আর সেই উদ্যোগে বাজিমাত করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, "মূলত রেলের বর্জ্য অনেক জায়গা নষ্ট করে। আর এইসব বর্জ্য বিক্রি করার সময় আবার অনেক এমন অংশ বেরিয়ে আসে যা পুনরায় ব্যবহার করা যায়।"
তাঁর কথায়, বছরের শেষে একটা বড় অঙ্কের টাকা রেলের আয় হয় যা রেলের উন্নয়নে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর এবার 186 কোটি টাকা আমরা আয় করেছি রেলের বর্জ্য বিক্রি করে। যা 15 বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় রেল যখন 'জিরো স্ক্র্যাপ মিশন' শুরু করে তখন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল আধিকারিকরা প্রত্যেক ডিভিশন, ওয়ার্কশপ, শেড যাতে বর্জ্যমুক্ত হয় তার উদ্যোগ নেন। রেল বোর্ডের তরফে 185 কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দূরপাল্লার বেশ কিছু ট্রেনের স্টপেজ বাড়াল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল
কিন্তু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ গত 21 মার্চ পর্যন্ত 2022-23 আর্থিক বছরের রেলের জমা বর্জ্য বিক্রি করে 186 কোটি 34 লক্ষ টাকা আয় করে। এই উপার্জন গত বছরের চূড়ান্ত বিক্রির পরিসংখ্যানের তুলনায় 30 কোটি টাকার বেশি। এই বছর আবার লক্ষ্যমাত্রা 48 শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রেল বোর্ডের তরফে। রেলের তরফে আরও জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল 26 হাজার 250 মেট্রিক টন রেলের বর্জ্য, লাইন বিক্রি করেছে। আর 14 হাজার মেট্রিক টন অন্যান্য বর্জ্য বিক্রি করেছে। এছাড়াও এনএফ রেল কর্তৃপক্ষ চারটে ডিজেল লোকোমোটিভ, 124টি পুরনো বাতিল কামরা, 163টি ওয়াগন বিক্রি করেছে। এই উদ্যোগের মূল কারণই হল রেল স্টেশন, ডিপো, শেড, ওয়ার্কশপ-সহ অন্যান্য বিভাগ বর্জ্য মুক্ত রাখা।