শিলিগুড়ি, 24 জুলাই: ফের বিস্ফোরক কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা । এবার নিজের দলের সাংসদকে বহিরাগত বলে তোপ দাগলেন তিনি। কাঠগড়ায় তুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককেও । তিনি মনে করেন, দল ও দলের নেতার মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কারণেই পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে খারাপ ফল হয়েছে বিজেপির। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তাকে উদ্দেশ্য করে তিনি জানান, বাইরে থেকে এসে পাহাড়বাসীকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিছু নেতা । কয়েকজন মিথ্যে কথা বলে পাহাড়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন । আর সেই কারণেই তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের হয়ে ভোট চাইতে যাননি ।
বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার ওই বক্তব্যের পরই আলোড়ন পরে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে । চরম অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির । লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় বিধায়কের এহেন বেসুরো হওয়ায় গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক । দলীয় সাংসদকে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করায় চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব। পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান ও 11 জনজাতির স্বীকৃতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে একদমই মাথা ঘামাচ্ছে না তা নিয়েও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক।
রবিবার শিলিগুড়িতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা । সেখানে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "পাহাড়ে পৃথক রাজ্য গঠন ও পাহাড়ের 11টি জনজাতিকে তপশিলি উপজাতির স্বীকৃতি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি । কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল । পাহাড়বাসী ভাষণ চায় না, প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চায়।"
আরও পড়ুন : মণিপুরকাণ্ডের দায় নিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে, দাবি সুগত বসুর
এরপরই সাংসদ রাজু বিস্তাকে একহাত নিয়ে বলেন, "ভোট আসলেই পাহাড়ে বাইরে থেকে এসে বিজেপির কিছু নেতা মিথ্যা কথা বলে ভোট ভিক্ষা করেন। মানুষ আর এদের বিশ্বাস করে না । ভোট শেষ হলেই তাঁদের আর পাত্তা পাওয়া যায় না ।" তিনি আরও জানান, 2021 সালে 12 অক্টোবর পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্র । তার একমাস পরেই আরও একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার কথা ছিল । কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই বৈঠক হয়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর 20 জুলাই পাহাড় ইস্যুতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছিল । কিন্তু সেটাও হয়নি। খালি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন বিজেপির কতিপয় নেতা । নেতাদের মিথ্যা কথা বলার জন্যই পাহাড়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও নিরুত্তর । তাঁর কথায়, "আমি জিটিএকে মান্যতা দিতে চাই না । দ্বিস্তর পঞ্চায়েত মানেই জিটিএকে জেলা পরিষদের মান্যতা দেওয়া । সেকারণেই আমি পাহাড়ে বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে যাইনি । আমি দলের বিরুদ্ধে নই, দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ।"