শিলিগুড়ি, 30 অক্টোবর: মালবাজারের হড়পা বানের ঘটনা থেকেও শিক্ষা নিল না শিলিগুড়ির (Siliguri) পুলিশ প্রশাসন । ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নিয়ম অমান্য করে অবাধে চলল নদীর মাঝখানে ছটঘাট তৈরির কাজ (Chhath ghat build in middle of Mahananda river) । ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
শুধু তাই নয়, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নির্দিষ্টভাবে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ । ছটঘাট তৈরির কাজের ছবি সংগ্রহ করে তা ফের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল আদালতে জমা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে । নদীগর্ভে এনজিটির নিয়মের তোয়াক্কা না করে ওই ছটঘাটগুলি নির্মাণ হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহানন্দা বাঁচাও কমিটির সদস্যরা । যদিও সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা ।
সম্প্রতি দুর্গাপুজোর বিসর্জনে মালবাজারের মাল নদীতে আচমকা হড়পা বানে মৃত্যু হয় আটজনের । তারপর থেকেই বিসর্জন থেকে ছট পুজো পর্যন্ত নদীগুলিতে বিশেষ নজরদারির উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার । অবলম্বন করা হয় বাড়তি সতর্কতা । কিন্তু শিলিগুড়ির ছবিটা একদমই আলাদা । মহানন্দা নদী সংলগ্ন লালমোহন মৌলিক প্রতিমা নিরঞ্জন ঘাট, নৌকোঘাট, সন্তোষীনগর ঘাট-সহ একাধিক ঘাটের চিত্রটা একই । প্রশাসনের নাকের ডগাতেই একদম নদীর মাঝখানে তৈরি করা হচ্ছে সেসব ঘাট (Chhath Puja 2022) ।
ওই বিষয়ে মহানন্দা নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক জ্যোৎস্না আগরওয়াল বলেন, "সকাল থেকেই বিষয়টা আমাদের নজরে আসে । তৎক্ষণাৎ বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানানো হয় । কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । মালবাজারের ঘটনার পরও যদি পুলিশ প্রশাসন শিক্ষা না-নেয় তবে এরপরে কোন অঘটন ঘটলে তার দায়িত্ব প্রশাসনের হবে ।"
লালমোহন মৌলিক প্রতিমা নিরঞ্জন ঘাট ছটপুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জিত গুপ্তা বলেন, "ছট পুজো কমিটির তরফে কোনও ঘাট বানিয়ে দেওয়া হয় না। এমনকী ঘাট বাবদ কোনও টাকাও নেওয়া হয় না । ছটব্রতীরা নিজেরাই নিজেদের ঘাট তৈরি করে । মালবাজারের ঘটনা নিয়ে আমরা প্রত্যেককে সতর্ক করেছি । কিন্তু অনেকে আছে আমাদের কথা এবং ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নিয়ম অমান্য করে মহানন্দা নদীর মাঝখানে ছটঘাট তৈরি করছে । ফলে বিষয়টি আমরাও প্রশাসনকে জানাবো ।"
আরও পড়ুন: পন্ডিতিয়া রোডে বিকল্প জলাশয়ের কাজ চলছে পৌরনিগমের তরফে
শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, "আমরা পৌরনিগমের তরফে বিষয়টি চিঠি দিয়ে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি ।" শিলিগুড়ি পৌরনিগমের অধীনে আটটি ওয়ার্ডে মোট 42টি ছটঘাট রয়েছে । এবার প্রায় এক কোটি টাকা শুধুমাত্র বরাদ্দ করা হয়েছে ছটঘাট নির্মাণ ও আলোকসজ্জার জন্য । সেই কাজ করছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ।