দার্জিলিং, 6 মে: ছোটবেলা থেকেই সেনা এবং সেনাবাহিনীর প্রতি অমোঘ টান ছিল সিদ্ধান্তের। প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন, পড়াশোনোয় আগাগোড়া ভালো ছিলেন। সেনাতে যোগ দেওয়ার পর খুব অল্প সময়ে প্যারাকমান্ডো রেজিমেন্টে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ইউনিটেও খুব সুনাম ছিল তাঁর। কিন্তু এত অল্প সময়ে যে দেশের জন্য তাঁকে আত্মবলিদান দিতে হবে সেটা ভেবেও উঠতে পারেননি সিদ্ধান্তের নববিবাহিতা স্ত্রী ও তার পরিবার ৷ শনিবার জাতীয় পতাকায় মোড়া সিদ্ধান্ত ছেত্রীর কফিনবন্দি নিথর দেহ পৌঁছল তাঁর শহর শিলিগুড়িতে।
উল্লেখ্য, জম্মুর রাজৌরিতে তল্লাশি অভিযানে শুক্রবার সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জওয়ানের ৷ শহিদ জওয়ানের মধ্যে ছিলেন দার্জিলিংয়ের পুলবাজার ব্লকের কিজোমবস্তির বাসিন্দা সিদ্ধান্ত ছেত্রী। এদিন জম্মু থেকে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে তাঁর শবদেহ বাগডোগরা বিমানবন্দরে সেনা ছাউনিতে পৌঁছয়। সেখান থেকে সড়কপথে ব্যাংডুবি সেনা ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শহিদ সিদ্ধান্ত ছেত্রীকে গান স্যালুট দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন, শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক, জেলা প্রশাসন আধিকারিক, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, ভারতীয় সেনার কর্নেল অঞ্জন কুমার বাসুমাতারি-সহ অন্যান্যরা। সেখানে তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: রাজৌরিতে এনকাউন্টারে মৃত দার্জিলিঙের সিদ্ধান্ত ছেত্রী, শোকবার্তা মমতার
এরপর সেখান থেকেই তাঁর দেহ সিদ্ধান্তের বাড়ি কিজোমবস্তিতে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। সিদ্ধান্ত ছেত্রী 2019 সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। 2021 সালে প্যারা এসএফে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি অপারেশনেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর ছুটি কাটিয়ে 14 এপ্রিল জম্মুর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন সিদ্ধান্ত। শহিদ জওয়ানের জামাইবাবু বিক্রম থাপা বলেন, "ইউনিটে খুব ভালো নাম ছিল সিদ্ধান্তের। খুব ভালো পারফরম্যান্স থাকায় প্যারা এসএফের মতো এলিট ফোর্সে জায়গা পেয়েছে। আমাদের জন্য খুব দুঃখের দিন। সবেমাত্র বিয়ে হয়েছিল।" শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "ভারতীয় সেনা সবসময় দেশের জন্য প্রাণ নিয়োজিত করতে একমুহূর্ত চিন্তা করে না। কেন্দ্রীয় সরকার এই শহিদ পরিবারের পাশে রয়েছে।"