দার্জিলিং, 9 সেপ্টেম্বর: সিকিমের উচ্চ পর্বতশৃঙ্গের কাছাকাছি থাকা জঙ্গল থেকে পাওয়া বিরল প্রজাতির শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাস চিনে পাচারের ছক! অভিযান চালিয়ে ভিন জেলার এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করল বন দফতর। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম দেন্দুপ তামাং। সে কালিম্পঙের দান্তে দালমানের বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, শিলিগুড়ির সমরনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই পাচারকারীকে গ্রেফতার করে বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশন।
ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে 13.20 গ্রাম শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাস। এই শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাস পাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে বন দফতরে। জানা গিয়েছে, অভিযানের সময় আরও দুই পাচারকারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। তারা কোনওভাবে পালাতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের কাছে কমবেশি 1 কেজি ফাঙ্গাস আছে বলে খবর। এর আগে একাধিকবার অন্য বন্যপ্রাণ সামগ্রী পাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এই প্রথমবার বিরল প্রজাতির ওই শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাসের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় চিন্তা বেড়েছে বন আধিকারিকদের ৷
এই বিষয়ে মুখ্য উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ বিভাগের মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, "ক্যাটারপিলার ফাঙ্গাস বা শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাস পাচারের ছক কষা হয়েছিল। এই শুঁয়োপোকা সিকিম বা হিমালয়ের খুব উচ্চ পর্বতশৃঙ্গের জঙ্গলে পাওয়া যায়। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।" বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে ঘটনাস্থল থেকে পলাতক ওই দুই পাচারকারীদের কাছে আরও অন্তত এক কেজি শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাস রয়েছে। ওই দুই পাচারকারীদের উদ্দেশ্যে খোঁজ শুরু করেছে বন দফতর।
উদ্ধার হওয়া মাত্র ওই 13.20 গ্রাম শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাসের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য প্রায় 21 হাজার টাকা। ওই ফাঙ্গাসের এক কেজির মূল্য প্রায় 15 লক্ষ টাকা! মূলত ওই ফাঙ্গাস চিনে পাচার করা হয়ে থাকে। চিনের কালোবাজারে ওই ফাঙ্গাসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেখানে এই ফাঙ্গাস দিয়ে হিমালয়ান ভায়াগরা বা যৌন শক্তি বৃদ্ধির ওষুধ তৈরিতে করা হয়ে থাকে বলে অনুমান প্রশাসনের । এছাড়াও ফুসফুস, কিডনির জটিল রোগের ওষুধ তৈরিতে এই শুঁয়োপোকার ফাঙ্গাস ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে চিনে।
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়িতে হাতবদলের পর নেপাল হয়ে চিনে ওই ফাঙ্গাস পাচারের পরিকল্পনা ছিল। ইতিমধ্যে ওই ফাঙ্গাস পাচারে বন্ধ করতে সিকিমের বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন এ রাজ্যের বন দফতরের আধিকারিকরা। পাশাপাশি, এই পাচারের বিষয়টি কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রককেও জানানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মাঝে আতঙ্ক স্ক্রাব টাইফাস! জেলাজুড়ে উদ্বেগ