ETV Bharat / state

"হাসছে পাহাড়", তবে এবার পদ্মের হাত ধরে ! - bimal gurung

শুধু পাহাড় নয়, মমতার থেকে মুখ ফিরিয়েছে উত্তরবঙ্গের সবকটি কেন্দ্র । আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, বালুরঘাট । কোনও কেন্দ্রেই দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল ।

বিজেপি
author img

By

Published : May 23, 2019, 11:46 PM IST

দার্জিলিং, 23 মে : তখন দুপুর 2টো । কাঞ্চনজঙ্ঘার কোল বেয়ে ফুটে উঠেছে রোদ্দুর । কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তখনও গণনাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন । অমর সিং রাই হারছেন । আভাস পেয়েও তাঁরা ফিরে আসেননি । আসলে, মমতার বক্তব্য অক্ষরে অক্ষরে পালন করছিলেন আর কী ! দিদি যে বলেছেন, "গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র ছেড়ে চলে আসবে না ।" ঠিক এক ঘণ্টা পর নামল বৃষ্টি । হালকাই । মাথায় ছাতা নিয়ে তখন BJP কর্মীরা ভিড় করেছেন গণনাকেন্দ্রের বাইরে । আছেন গুরুংপন্থী গোর্খার সমর্থকরা । এক রাউন্ড করে গণনা হচ্ছে, আর বাড়ছে মোদি মোদি চিৎকার । বিস্তার মুখেও ফুটছে হাসি । কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামল । মেঘলা আকাশ তখন রোদের আভা কেড়েছে । মুখ গোমড়া তৃণমূল কর্মীদেরও । পাহাড় তাদের জন্য হাসছে কই ?

এই সংক্রান্ত আরও খবর : দেশজুড়ে রং দে গেরুয়া

2011-তে ক্ষমতায় আসার পরই গোর্খাল্যান্ড ইশুর সমাধান করতে উঠে-পড়ে নামেন মমতা । গুরুংয়ের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে পাহাড়কে অনেকটাই শান্ত করে তোলেন । গুরুংও এক সভা থেকে মমতাকে "মা" বলে সম্বোধন করেন । বন্ধুত্বের সেই শুরু । দিন গেছে, বন্ধুত্ব বেড়েছে । আর মাঝেমধ্যেই পাহাড়ে গিয়ে মমতা বলে এসেছেন, "পাহাড় হাসছে ।" হঠাৎ ছন্দপতন । গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে গুরুংয়ের উলটপূরণে সমস্যায় পড়েন মমতা । 2014-তে BJP-র কাছে আসনও খোয়াতে হয় । এরপর 2016 । তখনও পাহাড়বাসীর রাগ কমাতে পারেননি । 3 বিধায়কই পায় মোর্চা । জাতিভিত্তিক আন্দোলন বাড়তে থাকে । উত্তপ্ত করে তোলে পাহাড়ের পরিস্থিতি । 100 দিন যাবৎ অশান্তির আগুনে জ্বলছিল দার্জিলিং । তাও আবার মমতার সফরের পরেরদিন থেকেই । পরে পরিস্থিতি সামলাতে দুঁদে গোয়েন্দাদের পাঠান মুখ্যমন্ত্রী । শেষমেশ শান্তি মেলে । পাহাড় অবশ্য হাসেনি ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর : পরাজয় মানেই পরাজিত নয় : মমতা

আত্মগোপন করতে বাধ্য হন গুরুং । বিনয় তামাংকে তাঁর জায়গায় আনা হয় । বেশ ভালোই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বিনয় । গুরুংকেও 'সরিয়ে' দেওয়া গেছিল । একাধিক বোর্ডের উদ্বোধন, উন্নয়ন প্রকল্প পাহাড়বাসীকে ফের মমতার কাছে এনে দেয় । বিভিন্ন জনসভা থেকে স্লোগান তোলেন, "পাহাড় হাসছে ।" লোকসভা নির্বাচনের সময়তেও পাহাড়বাসীর মন রাখতে ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করেন মমতা । আশা করেছিলেন অমর সিং রাইয়ের সমর্থনে গোর্খা আবার এক হবে । হল আর কোথায় ? BJP হালকা চালে বাজিমাত করে গেল যে । রাজু বিস্তা ভূমিপুত্র না হলেও বয়সে তরুণ । সাথে পেলেন গোর্খা (বিমলপন্থী)র সমর্থন । গুরুং অন্তরালে থেকেও বুঝিয়ে গেলেন, পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে । জিতিয়ে ফেরালেন রাজুকে । বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই পাহাড়ের "সর্বেসর্বা" ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর : 2009-এর পুনরাবৃত্তি ?

শুধু পাহাড় নয়, মমতার থেকে মুখ ফিরিয়েছে উত্তরবঙ্গের সবকটি কেন্দ্র । আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, বালুরঘাট । কোনও কেন্দ্রেই দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল । এরমধ্যে একমাত্র মালদা দক্ষিণে ডালুমিঞা (কংগ্রেস) কোনওরকমে আসন টিকিয়ে রেখেছেন । বাকি সাত আসনই গেছে BJP-র দখলে । আলিপুরদুয়ারে জয় পেয়েছেন জন বারলা । জলপাইগুড়িতে জয়ন্তকুমার রায়, রায়গঞ্জে দেবশ্রী চৌধুরি, মালদা উত্তর খগেন মুর্মু, বালুরঘাটে সুকান্ত মজুমদার ।

কেন এরকম ফল ?

দার্জিলিঙের জয়ী প্রার্থী রাজু বিস্তা বলছেন, "পাহাড়ে তো আমরা জিতব জানতামই । গায়ের জোরে পুলিশ প্রশাসনকে সামনে রেখে অত্যাচার চালিয়েছে রাজ্য সরকার । মুখ খুললেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে । সামান্যতম সমালোচনাকেও রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিত ওরা । মানুষ এর থেকে মুক্তি চাইছিল । মুক্তিও মিলেছে ।"

পাহাড়ে না হয় গোর্খাল্যান্ড ইশু ঘৃতাহুতি দিয়েছিল । আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে সমস্যা কী ? তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী বলছেন, "আমরা হতবাক । এরকম হওয়ার কথা নয় । BJP হিন্দুত্বের তাস খেলেছে । উন্নয়নকে সরিয়ে মেরুকরণের রাজনীতিই সাফল্য পেয়েছে ।" কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলছেন, "এত পদ্ম আমরা কল্পনা করিনি ।"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : দেশের কাছে সৎ থাকব, জেনেশুনে ভুল করব না : মোদি

গণনাকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে এক গোর্খা সমর্থক (বিমলপন্থী) বলছিলেন, "মমতা বলতেন পাহাড় হাসছে । জোড়াফুল ফোটানোর চেষ্টা করেও উনি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি । এবার হাসি ফুটবে । পাহাড়ে হাসি ফোটাব আমরাই ।"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : বাংলায় পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে : দিলীপ

কথা বলতে বলতেই কানে এল, রাজু বিস্তা এগিয়ে আছেন প্রায় 2 লাখ ভোটে । তখন বিকেল 4টে । কাঞ্চনজঙ্ঘার কোণ দিয়ে হঠাৎ যেন আলোর বিচ্ছুরণ । ফের একবার আকাশ জুড়িয়ে এল সূর্য । আলোর ছটায় চিকচিক করে উঠল BJP কর্মীদের মুখ । সাথে মোদি-মোদি রব । তৃণমূল শিবিরে তখন শুধুই অন্ধকার ।

দার্জিলিং, 23 মে : তখন দুপুর 2টো । কাঞ্চনজঙ্ঘার কোল বেয়ে ফুটে উঠেছে রোদ্দুর । কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তখনও গণনাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন । অমর সিং রাই হারছেন । আভাস পেয়েও তাঁরা ফিরে আসেননি । আসলে, মমতার বক্তব্য অক্ষরে অক্ষরে পালন করছিলেন আর কী ! দিদি যে বলেছেন, "গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র ছেড়ে চলে আসবে না ।" ঠিক এক ঘণ্টা পর নামল বৃষ্টি । হালকাই । মাথায় ছাতা নিয়ে তখন BJP কর্মীরা ভিড় করেছেন গণনাকেন্দ্রের বাইরে । আছেন গুরুংপন্থী গোর্খার সমর্থকরা । এক রাউন্ড করে গণনা হচ্ছে, আর বাড়ছে মোদি মোদি চিৎকার । বিস্তার মুখেও ফুটছে হাসি । কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামল । মেঘলা আকাশ তখন রোদের আভা কেড়েছে । মুখ গোমড়া তৃণমূল কর্মীদেরও । পাহাড় তাদের জন্য হাসছে কই ?

এই সংক্রান্ত আরও খবর : দেশজুড়ে রং দে গেরুয়া

2011-তে ক্ষমতায় আসার পরই গোর্খাল্যান্ড ইশুর সমাধান করতে উঠে-পড়ে নামেন মমতা । গুরুংয়ের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে পাহাড়কে অনেকটাই শান্ত করে তোলেন । গুরুংও এক সভা থেকে মমতাকে "মা" বলে সম্বোধন করেন । বন্ধুত্বের সেই শুরু । দিন গেছে, বন্ধুত্ব বেড়েছে । আর মাঝেমধ্যেই পাহাড়ে গিয়ে মমতা বলে এসেছেন, "পাহাড় হাসছে ।" হঠাৎ ছন্দপতন । গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে গুরুংয়ের উলটপূরণে সমস্যায় পড়েন মমতা । 2014-তে BJP-র কাছে আসনও খোয়াতে হয় । এরপর 2016 । তখনও পাহাড়বাসীর রাগ কমাতে পারেননি । 3 বিধায়কই পায় মোর্চা । জাতিভিত্তিক আন্দোলন বাড়তে থাকে । উত্তপ্ত করে তোলে পাহাড়ের পরিস্থিতি । 100 দিন যাবৎ অশান্তির আগুনে জ্বলছিল দার্জিলিং । তাও আবার মমতার সফরের পরেরদিন থেকেই । পরে পরিস্থিতি সামলাতে দুঁদে গোয়েন্দাদের পাঠান মুখ্যমন্ত্রী । শেষমেশ শান্তি মেলে । পাহাড় অবশ্য হাসেনি ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর : পরাজয় মানেই পরাজিত নয় : মমতা

আত্মগোপন করতে বাধ্য হন গুরুং । বিনয় তামাংকে তাঁর জায়গায় আনা হয় । বেশ ভালোই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বিনয় । গুরুংকেও 'সরিয়ে' দেওয়া গেছিল । একাধিক বোর্ডের উদ্বোধন, উন্নয়ন প্রকল্প পাহাড়বাসীকে ফের মমতার কাছে এনে দেয় । বিভিন্ন জনসভা থেকে স্লোগান তোলেন, "পাহাড় হাসছে ।" লোকসভা নির্বাচনের সময়তেও পাহাড়বাসীর মন রাখতে ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করেন মমতা । আশা করেছিলেন অমর সিং রাইয়ের সমর্থনে গোর্খা আবার এক হবে । হল আর কোথায় ? BJP হালকা চালে বাজিমাত করে গেল যে । রাজু বিস্তা ভূমিপুত্র না হলেও বয়সে তরুণ । সাথে পেলেন গোর্খা (বিমলপন্থী)র সমর্থন । গুরুং অন্তরালে থেকেও বুঝিয়ে গেলেন, পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে । জিতিয়ে ফেরালেন রাজুকে । বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই পাহাড়ের "সর্বেসর্বা" ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর : 2009-এর পুনরাবৃত্তি ?

শুধু পাহাড় নয়, মমতার থেকে মুখ ফিরিয়েছে উত্তরবঙ্গের সবকটি কেন্দ্র । আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, বালুরঘাট । কোনও কেন্দ্রেই দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল । এরমধ্যে একমাত্র মালদা দক্ষিণে ডালুমিঞা (কংগ্রেস) কোনওরকমে আসন টিকিয়ে রেখেছেন । বাকি সাত আসনই গেছে BJP-র দখলে । আলিপুরদুয়ারে জয় পেয়েছেন জন বারলা । জলপাইগুড়িতে জয়ন্তকুমার রায়, রায়গঞ্জে দেবশ্রী চৌধুরি, মালদা উত্তর খগেন মুর্মু, বালুরঘাটে সুকান্ত মজুমদার ।

কেন এরকম ফল ?

দার্জিলিঙের জয়ী প্রার্থী রাজু বিস্তা বলছেন, "পাহাড়ে তো আমরা জিতব জানতামই । গায়ের জোরে পুলিশ প্রশাসনকে সামনে রেখে অত্যাচার চালিয়েছে রাজ্য সরকার । মুখ খুললেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে । সামান্যতম সমালোচনাকেও রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিত ওরা । মানুষ এর থেকে মুক্তি চাইছিল । মুক্তিও মিলেছে ।"

পাহাড়ে না হয় গোর্খাল্যান্ড ইশু ঘৃতাহুতি দিয়েছিল । আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে সমস্যা কী ? তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী বলছেন, "আমরা হতবাক । এরকম হওয়ার কথা নয় । BJP হিন্দুত্বের তাস খেলেছে । উন্নয়নকে সরিয়ে মেরুকরণের রাজনীতিই সাফল্য পেয়েছে ।" কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলছেন, "এত পদ্ম আমরা কল্পনা করিনি ।"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : দেশের কাছে সৎ থাকব, জেনেশুনে ভুল করব না : মোদি

গণনাকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে এক গোর্খা সমর্থক (বিমলপন্থী) বলছিলেন, "মমতা বলতেন পাহাড় হাসছে । জোড়াফুল ফোটানোর চেষ্টা করেও উনি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি । এবার হাসি ফুটবে । পাহাড়ে হাসি ফোটাব আমরাই ।"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : বাংলায় পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে : দিলীপ

কথা বলতে বলতেই কানে এল, রাজু বিস্তা এগিয়ে আছেন প্রায় 2 লাখ ভোটে । তখন বিকেল 4টে । কাঞ্চনজঙ্ঘার কোণ দিয়ে হঠাৎ যেন আলোর বিচ্ছুরণ । ফের একবার আকাশ জুড়িয়ে এল সূর্য । আলোর ছটায় চিকচিক করে উঠল BJP কর্মীদের মুখ । সাথে মোদি-মোদি রব । তৃণমূল শিবিরে তখন শুধুই অন্ধকার ।

পাহারে জোড়া পদ্মের উদয়, ডুয়ার্সে আদিবাসী বলয়েও গুটিয়ে গেল ঘাসফুল

 

পাহাড়ে ফের ফুটল পদ্ম। গেরুয়া জোয়ারে গা ভাসালো তরাই ও ডুয়ার্সের বিস্তির্ন এলাকা।এদিন বেলা যত গড়িয়েছে ততই পদ্মের দাপটে মুখ লুকিয়েছে জোড়াফুল। ফলাফলের নিরিখে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে ফলাহলের পোস্টমর্টেম।

 

ক্ষমতায় আসার পর বহুবার পাহাড়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানিয় এলাকার উন্নয়নে একাধীক বোর্ড গঠন ছাড়াও উন্নয়নমূলক নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি। বারংবার ঘোষণা করেছেন অশান্তির আবহ কাটিয়ে হাসছে ঝলমলে দার্জিলিঙ।  কিন্তু শাসক দলের নেত্রীর প সেই ফানুস আজ স্কাল থেকেই মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করে। লোকসভা আসনতো বটেই, দার্জিলিঙ বিধান সভা আসনেও কার্যত পদ্মের ছয়লাপে কার্যত গুটিয়ে যান তৃণমূল শিবিরের নেতারা। ডুয়ার্সে আদিবাসী বলয়ে আলিপুরদুয়ারে কার্যত ভোটের ফল ঘোষণা হতেই দাপট দেখাতে শুরু করে গেরুয়া শিবির।

কেন এমন হল? দার্জিলিঙ লোকসভায় জয়ী বিজেপির রাজু  বিস্ত বলেন, পাহাড়ে শান্তির নামে আসলে গায়ের জোরে পুলিশ প্রশাসনকে সামনে রেখে দমণপিড়ন চালিয়েছিল সরকার। মানুষের দাবিকে মুখ বন্ধ করতে বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টাকা এবং পুলিশ প্রশাসনের জোরকে সামনে রেখে সামান্যতম সমালোচনাকেও রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়েছিল রাজ্যের সরকার। তাই মানুষের ক্ষোভের দাবানলের চোরা স্রোতে আজ পদ্মের জোয়ার পাহাড়ে।

আলিপুরদুয়ারে দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে পৃথক জেলা ঘোষণা করেছিল সরকার। একাধিক আইটিআই, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বা কন্যাশ্রী, সবুজসাথী সহ নানা প্রকল্পে বাসিন্দারা সুযোগ সুবিধা পেলেও ভোটের ফলে স্পষ্ট হয়েছে সেখানেও কার্যত পদ্মের রমরমা আর ধর্মের ভিত্তিতে মেরুকরণ। আদিবাসীরা সরাসরি বিজেপির পক্ষে গিয়েছেন।

 তৃণমূল বিধায়ক এবং শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তি বলেন আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছি। বহু বুথে আমরা মাত্র ৮টি ভোট পেয়েছি। এমনটা হওয়ার কথা নয়। বিজেপি হিন্দুত্বের তাস খেলেছিল। তা সফল হয়েছে। উন্নয়নকে সরিয়ে রেখে মেরুকরণের রাজনীতিই সাফল্য দিয়েছে বিজেপিকে।

কোচবিহারে রবীমিথকে সমানে টক্কর দিয়েছেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা ও বিজেপি প্রার্থী নিশিথ প্রামানিক। সম্পুর্ন ফলাফল এখনো সামনে না এলেও জোড়াফুলের ধসের স্পষ্ট ছবি সামনে এসেছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এ নিয়ে বলেন হতবাক হয়ে গিয়েছি। এত পদ্ম আমরা কল্পনা করি নি।

জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ গঠনের জেরে ভোট বাক্সে বাড়তি মার্জিন আশা করেছিল তৃণমূল শিবির। কিন্তু ভোট বাক্সে উলটো ছবি ধরা পড়েছে।  এক্ষেত্রেও তৃণমূল কংগ্রেসের  জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তি বলেন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই জলপাইগুড়িতে দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সার্কিট বেঞ্চ হল। মাত্র এক বছর আগে জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা পেয়েছিলাম। নতুন করে সব ভাবতে হবে আমাদের। তবে বিজেপির নেতারা স্পষ্ট করেছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ের নামে কার্যত মানুষের দাবিকে অগ্রাহ্য করে নীরব সন্ত্রাস চালানো হয়েছিল। মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে দেদার ছাপ্পা, জালিয়াতি করা হয়েছিল। নাহলে তখনই পালাবদল হতো।  এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে মানুষের সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।  

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.