শিলিগুড়ি, 22 জুলাই: বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট । তার আগে ফের বদলাচ্ছে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ । আরও একবার গোর্খাল্য়ান্ড ইস্যুতে বিজেপির উপর চাপ বাড়ালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। তিনি স্পষ্টতই জানান, স্বাধীনতা দিবসে গোর্খাল্যান্ড বা পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পালা মিটতেই এমনটাই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে হুঁশিয়ারি দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতেই রাজনৈতিকমহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করে লড়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কিন্তু আশানুরূপ ফল হয়নি। লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই এবার অবস্থান পরিবর্তন করছেন বিমল গুরুং, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিকমহল।গুরুং বলেন, "অগস্ট মাসের মধ্যে বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে অবশ্যই কিছু ঘোষণা করতে হবে। এবার পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। শুধু দিল্লিতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছবি তুললেই হবে না।"
বিমল গুরুং আরও বলেন, "এত বছর ধরে পাহাড়ে রয়েছে বিজেপি । কিন্তু তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। এবার সময় এসেছে আশাকরি স্বাধীনতা দিবসের দিন গোর্খাদের জন্য বড় কিছু ঘোষণা করবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উত্তরবঙ্গে পাহাড়েই প্রথম পদ্মফুল ফুটেছিল। অনেক আশা নিয়ে পাহাড়বাসী ভোট দিয়েছিল। ভেবেছিল পাহাড়ে সুদিন আসবে। কিন্তু বিজেপি কিছুই করল না। তবুও পাহাড় তাদের ঠকায়নি। পরপর তিনবার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এবার কিছু না করলে আর সুযোগ পাওয়া কঠিন।" বিমলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবসে বিভিন্নান ঘোষণা করে থাকেন। তাঁর আশে, এবছর তিনি পাহাড় নিয়েও বড় কিছু ঘোষণা করবেন নিশ্চয়ই। পাহাড়বাসী সেই আশা নিয়েই টিভির পর্দায় চোখ রাখবেন বলেও জানান তিনি। বিমল গুরুংয়ের অভিযোগ, বিজেপি ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও পালন করেনি। বিজেপি পাহাড়কে ব্যবহার করেছে বলেও জানান তিনি। আসন্ন বাদল অধিবেশনেও পাহাড় নিয়ে আলোচনা না হলে তার প্রভাব লোকসভা নির্বাচনে পড়বে বলেও জানান গুরুং।
আরও পড়ুন: মালদার ঘটনায় ধৃত 5, অন্য অভিযোগে গ্রেফতার দুই নির্যাতিতাও; দাবি জেলা পুলিশের
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করেছিল বিমলের মোর্চা। যদিও নির্বাচন শেষ হতেই সেই জোট থেকে বেরিয়ে আসেন বিমল গুরুং। আর তারপরই তিনি কেন্দ্রকে দুষলেন। কারণ পাহাড় সমস্যা নিয়ে বিজেপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরপর তিনটি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করেছে। তাদের ইস্তেহারেও ছিল, যে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছুই হয়নি। বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছিলেন 20 জুলাইয়ের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। কিন্তু কোনওরকম বৈঠক হয়নি বলেই দাবি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার । তাই বিজেপির এহেন রাজনীতি নিয়ে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন বিমল গুরুং বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল। অন্যদিকে বিমল গুরুংয়ের এই মন্তব্য শুনে বিজেপির হিল সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, "আমাদের সাংসদ প্রচুর কাজ করেছে পাহাড়ে। বিজেপি যা বলে তাই করে। শুধু একটু ধৈর্য রাখতে হবে।"