দার্জিলিং, 14 জুলাই: নিজের গড় বাঁচাতে ব্যর্থ হলেন একদা পাহাড়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা বিমল গুরুং। যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নামে এক সময় পাহাড় কাঁপত, সেই দলই ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কাছে পরাজিত হল ৷ বিজনবাড়ি ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি থেকে তাঁর নিজের এলাকা রঙ্গিত দুই গ্রাম পঞ্চায়েতেই পরাজিত হয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কেবল মাত্র টিমটিম করে জ্বলছে বিমল গুরুংয়ের গ্রাম সংসদ আসনটি ৷
পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজের গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে রাখতে না পারায় এবার বিমল গুরুংয়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে পাহাড়ের ওয়াকিবহল মহল। অন্যদিকে, পাহাড়ের আটটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট করেছিল বিজেপি। গোটা পাহাড়ের প্রত্যেক আসনে প্রার্থীও দিয়েছিল জোট। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। দুই জেলার মধ্যে মাত্র একটি, মিরিক পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে পেরেছে ওই জোট।
বৃহস্পতিবার জোট মিরিকে বিজয় মিছিল ও সভাও করে। কিন্তু পাহাড়ের যা বর্তমান পরিস্থিতি জয়ী জোট প্রার্থীরা কতক্ষণ বিরোধী শিবিরে টিকে থাকবেন তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে খোদ জোট নেতৃত্বের। আর সেই ভাঙন আটকাতে ময়দানে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। রাজু বিস্তা জানিয়েছেন, যে সব বিজেপি ও জোট প্রার্থীরা গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জয়ী হয়েছে তাদের 15 দিনের উন্নয়নের প্রকল্প জমা দিতে বলেছেন। তিনি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীদের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জয়ী প্রার্থীদের জন্য 10 লক্ষ টাকা সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে দেবেন বলেও জানান ৷
অন্যদিকে, হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড একধাপ এগিয়ে জানিয়েছেন, তার দলের জয়ী প্রার্থীদের এলাকা উন্নয়নের জন্য তিনি নিজে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে একটি বিভাগ তৈরি করার সঙ্গেই দিল্লি থেকে কাজের জন্য ফান্ড নিয়ে আসবেন। আর বিজেপি জোটের এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিকমহলে জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মুখপাত্র এসপি শর্মা বলেন, "নিজের সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ করছেন না সাংসদ। আর নিজের দলের জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে টাকা বিলোবেন। তিনি সংসদীয় পরিকাঠামো সম্পর্কেই জানেন না।"
আরও পড়ুন: রায়গঞ্জের বিডিওকে হেনস্তা ! সাংসদ দেবশ্রী-সহ চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, "তিনি সাড়ে চার বছরে মাত্র দু'কোটি টাকা খরচ করেছেন। আর এখন এসব বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আর অন্যদিকে, বিজেপিকে সমর্থনকারী আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো নিজের গুরুত্ব ও অস্তিত্ব হারাচ্ছে। বিমল গুরুং নিজের গড় রক্ষা করতে পারেননি।"