বালুরঘাট, 21 নভেম্বর: এলাকায় বেড়েছে ড্রাগসের নেশা। আর এই নেশায় জীবন গেল তরতাজা এক যুবকের। মৃত যুবকের নাম সুশান্ত মণ্ডল(27)। পেশায় গ্রিল মিস্ত্রি ছিল । বাড়ি বালুরঘাট ব্লকের পতিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মণিপুর এলাকায়। ড্রাগসের নেশার কারণে গতকাল গভীর রাতে বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় সুশান্ত। বিষয়টি রাতেই পরিবারের সদস্যদের নজরে আসে। এরপর খবর দেওয়া হল পুলিশকে। পরে বালুরঘাট থানার পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়ার পর পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। তারপর গ্রিলের কাজ শুরু করে। এদিকে ক্লাস নাইন থেকেই সুশান্ত মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে । দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে প্রত্যেকদিন নেশা করত সে। যার জেরে মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়ে সুশান্ত। অবশেষে গতকাল গভীর রাতে নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়। রাতেই বিষয়টি নজরে আসে পরিবারের সদস্যদের। গোটা ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। শুক্রবার বালুরঘাট থানা ও পতিরাম ফাঁড়ির পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নেশার সামগ্রী হিসাবে ড্রাগস বা হেরোইনের বিক্রি বেড়েছে। প্রত্যেক পাড়ার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে কিলবিশ। এর ফলে যুবসমাজ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। কিছু বলতে গেলে উলটে তাদেরকেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ড্রাগস বিক্রি হলেও সব জেনেও পুলিশ প্রশাসন নীরব। টাকার বিনিময়ে পুলিশ কিছু করছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
মৃতের বাবা সুজিত মণ্ডল জানান, প্রত্যেক দিনই তাঁর ছেলে কিলবিশের নেশা করত। যেদিন নেশা করত সেদিন ভালো থাকত। আর যেদিন করত না সেদিন অসুস্থ বোধ করত। তাঁরা বিষয়টি জানার পর নেশা ছাড়ানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করেছিলেন। এমনকী ছেলেকে সবরকম ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তবে কোনও লাভ হয়নি। মৃতের মামা অখিল মণ্ডল জানান, পতিরাম এলাকায় নেশার সামগ্রী বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে নষ্ট হচ্ছে যুব সমাজ। এই সর্বনাশা নেশা যাতে বন্ধ করা হয় তার জন্য তিনি পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এবিষয়ে DSP হেড কোয়ার্টার ধীমান মিত্র জানান, ইতিমধ্যে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছেন তারা।