বালুরঘাট, ২৪ সেপ্টেম্বর : নাবালক ছেলের সামনেই স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির পরিবারের বিরুদ্ধে। মৃতার নাম কাঞ্চনা শীল(35)। রবিবার বালুরঘাটের বোয়ালদাড়ে শ্বশুরবাড়িতেই কাঞ্চনার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির পরিবারের বিরুদ্ধে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কাঞ্চনাকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভরতি করে স্থানীয় বাসিন্দারা । গতকাল বালুরঘাট হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর ৷ খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত স্বামী পরেশ শীল ও দেওর পলাশ শীলকে গ্রেপ্তার করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ ।
কাঞ্চনার বাপের বাড়ি নেপালে। 15 বছর আগে কাঞ্চনার সঙ্গে বোয়ালদাড়ের বাসিন্দা পরেশ শীলের বিয়ে হয়। পরেশ পেশায় রাজমিস্ত্রি। পরেশ ও কাঞ্চনার 11 বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কাঞ্চনার পরিবারের অভিযোগ, "পরেশের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে এবং প্রায়শই নেশা করে অশান্তি করত কাঞ্চনার সঙ্গে। নেশা করার প্রতিবাদ করলেই পরেশ, পরেশের ভাই ও শাশুড়ি কাঞ্চনাকে গালিগালাজ করত, তাঁর উপর অত্যাচার চালাত । মাঝে মধ্যেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিত।" রবিবার সকালেও অশান্তি বাধে ৷ অভিযোগ, তখনই কাঞ্চনার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা । ওই সময় মায়ের চিৎকার শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থানে ছুটে যায় কাঞ্চনার ছেলে ৷ এরপরেই পরেশ, দেওর পলাশ ও শাশুড়ি শেফালি শীলের নামে অভিযোগ দায়ের করে মৃতার পরিবার। রবিবার রাতেই পরেশ ও পলাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কাঞ্চনার ছেলে বলে, "আমার বাবা প্রতি দিন মদ খেয়ে এসে অশান্তি করত। আমার কাকাও মাকে মারধর করত। মা প্রতিবাদ করলেই সবাই মিলে মাকে মারধর করত। সেদিনও সবাই মিলে মাকে মারধর করছিল। আমি তখন ভাত খেতে বসেছিলাম। বাবা মাকে মরে যেতে বলছিল। এরপরই আমি মায়ের চিৎকার শুনতে পাই ৷ গিয়ে দেখি মা বাথরুমের মধ্যে আগুনে জ্বলছে আর বাবা দাঁড়িয়ে দেখছে।"
DSP হেডকোয়ার্টার ধীমান মিত্র বলেন, "বোয়ালদারে ওই গৃহবধূর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছিলাম। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা রবিবার রাতেই ওই গৃহবধূর স্বামী ও দেওরকে গ্রেপ্তার করেছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 307 এবং 498 ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে । জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে ওই নাবালকের বয়ান রেকর্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। যদি গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সত্যি হয়। তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 302 ধারা যুক্ত করা হবে। আর যদি দেখা যায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছে তাহলে 306 ধারা যুক্ত করা হবে।"