বালুরঘাট, 29 মে: হঠাৎই হড়পা বানে বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর জলস্তর এক লাফে বেড়ে গেছে। জলের স্রোতে বালুরঘাট, কালিকাপুর এলাকায় ভেসে গেল বাঁশের সাঁকো। নদীর চরে থাকা তরমুজ, শশা-সহ বিভিন্ন ফসলও ভেসে চলে যায়। হঠাৎ আত্রেয়ী নদীতে জল এভাবে বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
এদিকে সাঁকো ভেসে যাওয়ার ফলে বিপাকে পড়েছেন এলাকার প্রায় দশ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা। গতকাল রাত 9টা নাগাদ হঠাৎ নদীর জল বেড়ে যায়। বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে যায়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাতায়াত। আপাতত নৌকাতে পারাপার শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাটের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আত্রেয়ী নদী ফের বাংলাদেশে মিশেছে। বাংলাদেশের মোহনপুরে রাবার ড্যাম লাগানো রয়েছে আত্রেয়ী নদীতে। বাংলাদেশই মূলত এই নদীর জল নিয়ন্ত্রণ করে। আমফানের পরেও উত্তরবঙ্গসহ পাহাড়ি এলাকায় গত দু-তিনদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এরফলে বুধবার রাত থেকেই নদীর জলস্তর অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে। যদিও পরদিনই তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এদিকে গতরাতে আত্রেয়ী নদীতে হড়পা বানে এক লাফে নদীর জলের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। নদীর কিনারায় বয়ে চলেছে স্রোত। হঠাৎ নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় বালুরঘাট শহর লাগোয়া রঘুনাথপুর ও কালিকাপুরের মধ্যে থাকা বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে যায়। এর ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কালিকাপুর ও বালুরঘাটের মধ্যে । বালুরঘাটে আসতে হলে অনেকটা ঘুর পথে আসতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এলাকায় কংক্রিটের সেতুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে হরপা বানে পাগলিগঞ্জ, পরানপুর, মাহিনগর এলাকায় নদী চড়ে থাকা তরমুজ, শশা-সহ অন্যান্য ফসল ভেসে যায়। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন কৃষকরা।
বছর তিনেক আগে এলাকার মন্ত্রী তথা বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা নদীর উপর কংক্রিটের সেতু তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে সেই সেতু আজও তৈরি হয়নি। এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কুশল ঘোষ জানান, হঠাৎ করেই আত্রেয়ী নদীতে জলস্তর বেড়ে যায়। জল বেড়ে যাওয়ায় বালুরঘাটের সঙ্গে যোগাযোগকারী বাঁশের সাঁকোটিও ভেসে যায়। জলে ভেসে যায় বহু ফসল। বিপদের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। দ্রুত সেতু নির্মাণ করে সমস্যা সমাধানের দাবি তোলেন গ্রামবাসীরা।
অন্যদিকে এবিষয়ে বালুরঘাট ব্লকের BDO অনুজ শিকদার বলেন, "বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত সরকারিভাবে অবৈধ। তাই ওই নদীঘাটের দায়িত্ব আমাদের নেই। মানুষ নিজের সুবিধার্থে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছেন। নতুন ব্রিজ তৈরির ব্যাপারে কোনও নির্দেশিকা নেই। তবে যদি প্রয়োজন হয়, 100 দিনের কাজের মাধ্যমে বন্যা রুখতে মাটি উঁচু করার ব্যবস্থা করব।"