ETV Bharat / state

কোরোনার কোপ, অমিল নয়াবাজারের ক্ষীর দই-খাসা দই

লকডাউনে বন্ধ সামাজিক অনুষ্ঠান, বন্ধের মুখে নয়াবাজার দই ব্যবসা।দক্ষিণ দিনাজপুরের বিখ্যাত খাবার বলতেই সবার প্রথমে নাম আসে নয়াবাজারের দইয়ের। নয়াবাজার এলাকারই প্রায় 50 জন দই ব্যবসায়ী আছেন। দই ব্যবসায়ীরা সাধারণত তিন ধরনের দই বিক্রি করে। ক্ষীর দই, খাসা দই ও সাধারণ দই। বিয়ে, শ্রাদ্ধ ও অন্নপ্রশাসন বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য আগে দই তৈরি হত। এখন সেই সব অনুষ্ঠান বন্ধ। এর ফলে এখন বেশির ভাগ দিনই কাজও বন্ধ।

GANGARAMPUR
কোরোনার কোপে রসনাতৃপ্তির নয়াবাজারের ক্ষীর দই
author img

By

Published : Jul 29, 2020, 9:46 PM IST

গঙ্গারামপুর, 25 জুলাই : কোরোনা লকডাউনের জন্য প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান । আর এর ফলে সেভাবে বরাত পাচ্ছে না গঙ্গারামপুর থানার নয়াবাজারের দই ব্যবসায়ীরা । বিগত কয়েক মাস ধরে বেশির ভাগ দই কারখানা বন্ধ রয়েছে। অল্প কিছু অর্ডার পেলে তা দিয়ে সংসার চালানো ও কর্মীদের বেতন দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে । এই অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা পেলে তাঁরা কিছুটা হলেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারতেন।

দক্ষিণ দিনাজপুরের বিখ্যাত খাবার বলতেই সবার প্রথমে নাম আসে নয়াবাজারের দইয়ের । জেলা তো বটেই ভিন রাজ্য থেকে দেশেও নয়াবাজারের দইয়ের বিশেষ নাম ডাক রয়েছে । শুধু মাত্র নাম ডাক নয় বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হয় নয়াবাজারের দই। গঙ্গারামপুর নয়াবাজার এলাকার বহু পরিবার এই দই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে । দীর্ঘ দিন ধরে বাপ ঠাকুরদার এই ব্যবসা করে আসছেন পরিবারের অন্যরা। এলাকার ব্যবসায়ীরা গ্রামের বাড়ি থেকে দুধ সংগ্রহ করে নয়াবাজারে নিয়ে আসে। শাক সবজির মতো এলাকায় দুধেরও হাট বসে। দূর দূরান্ত থেকে শতাধিক ব্যবসায়ী দুধ নিয়ে আসেন এই হাটে । প্রত্যেক দিন চার থেকে পাঁচ হাজার লিটার দুধ বেচা কেনা হয়। নয়াবাজার এলাকারই প্রায় 50 জন দই ব্যবসায়ী আছেন। দই ব্যবসায়ীরা সাধারণত তিন ধরনের দই বিক্রি করে। ক্ষীর দই, খাসা দই ও সাধারণ দই। ক্ষীর দইয়ের বর্তমান বাজার মূল্য 250 টাকা প্রতি কেজি। খাসা দই 120 টাকা প্রতি কেজি ও সাধারণ দই 90-100 টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি করে।

লকডাউনের আগে পর্যন্ত নয়াবাজারের দই ব্যবসায়ীদের বাড়ির চিত্রটা ছিল ব্যস্ততার। তবে এখন ভিন্ন । শেষ কবে উনুন জ্বালিয়েছেন, তাও মনে পরে না অনেক ব্যবসায়ীর । কোরোনা ও লকডাউনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ও অন্নপ্রাশন। এছাড়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আগেই এই সব অনুষ্ঠানে কুইন্টাল কুইন্টাল দই যেত। এমনকী নয়াবাজারের দই জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহারেও যেত। তবে লকডাউনে গাড়ি সমস্যা থাকায় তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় নয়াবাজারের বেশির ভাগ দই কারখান বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অল্প অর্ডার পেয়ে কয়েকটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে দই। আগে যে সংখ্যক কর্মী কাজ করত তার 25 শতাংশ এখন কাজ করে ৷ তাও যেদিন অর্ডার মেলে সেদিনই কাজ হয়। লকডাউনের ফলে চরম ক্ষতির সম্মুখিন নয়াবাজারের দই ব্যবসায়ীরা।

নয়াবাজারের দই ব্যবসা বন্ধ
এই বিষয়ে দই ব্যবসায়ী লক্ষ্মণ চন্দ্র ঘোষ জানান, আগে যেমন বিয়ে, শ্রাদ্ধ ও অন্নপ্রশাসন বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য দই তৈরি হত। এখন সেই সব অনুষ্ঠান বন্ধ। এর ফলে এখন বেশির ভাগ দিনই কাজও বন্ধ। লকডাইনের আগে জেলা সহ জেলার বাইরে এক দু'দিন পর পর অর্ডারের দই যেত। লকডাউন ও কোরোনা সংক্রমণের জন্য প্রায় 5 মাস ধরে কাজ বন্ধ। এই ক্ষতির হিসেব বলে বোঝানো মুশকিল। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এই বিষয়ে দই ব্যবসায়ী লক্ষ্মণ চন্দ্র ঘোষ জানান, আগে যেমন বিয়ে, শ্রাদ্ধ ও অন্নপ্রশাসন বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য দই তৈরি হত। এখন সেই সব অনুষ্ঠান বন্ধ। এর ফলে এখন বেশির ভাগ দিনই কাজও বন্ধ। লকডাইনের আগে জেলা সহ জেলার বাইরে এক দু'দিন পর পর অর্ডারের দই যেত। এখন কাজ বন্ধ। এই ক্ষতির হিসেব বলে বোঝানো মুশকিল। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। এই বিষয়ে আর এক দই ব্যবসায়ী শক্তি ঘোষ জানান, লকডাউনের আগে দইয়ের ব্যবসা খুব ভাল ছিল। তবে লকডাউনের পর ব্যবসার পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়েছে। বর্তমানে দই ব্যবসা সংকটে। তেমন সামাজিক কাজ না হওয়ায় দইয়ের কোনও চাহিদা নেই। বর্তমানে 50 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করছেন। কারণ তাদেরও পরিবার রয়েছে। লকডাউনের আগে পর্যন্ত তাদের দই মালদা, উত্তর দিনাজপুর, শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে যেত। তবে আগে ক্ষীর দই থেকে এমনি দইয়ের চাহিদা বেশি ছিল। আগে প্রতিদিন গড়ে 2 থেকে 3 কুইন্টাল দই তৈরি হত। এখন বেশির ভাগ দিনই বন্ধ থাকছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দই ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার সব রকম আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

গঙ্গারামপুর, 25 জুলাই : কোরোনা লকডাউনের জন্য প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান । আর এর ফলে সেভাবে বরাত পাচ্ছে না গঙ্গারামপুর থানার নয়াবাজারের দই ব্যবসায়ীরা । বিগত কয়েক মাস ধরে বেশির ভাগ দই কারখানা বন্ধ রয়েছে। অল্প কিছু অর্ডার পেলে তা দিয়ে সংসার চালানো ও কর্মীদের বেতন দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে । এই অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা পেলে তাঁরা কিছুটা হলেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারতেন।

দক্ষিণ দিনাজপুরের বিখ্যাত খাবার বলতেই সবার প্রথমে নাম আসে নয়াবাজারের দইয়ের । জেলা তো বটেই ভিন রাজ্য থেকে দেশেও নয়াবাজারের দইয়ের বিশেষ নাম ডাক রয়েছে । শুধু মাত্র নাম ডাক নয় বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হয় নয়াবাজারের দই। গঙ্গারামপুর নয়াবাজার এলাকার বহু পরিবার এই দই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে । দীর্ঘ দিন ধরে বাপ ঠাকুরদার এই ব্যবসা করে আসছেন পরিবারের অন্যরা। এলাকার ব্যবসায়ীরা গ্রামের বাড়ি থেকে দুধ সংগ্রহ করে নয়াবাজারে নিয়ে আসে। শাক সবজির মতো এলাকায় দুধেরও হাট বসে। দূর দূরান্ত থেকে শতাধিক ব্যবসায়ী দুধ নিয়ে আসেন এই হাটে । প্রত্যেক দিন চার থেকে পাঁচ হাজার লিটার দুধ বেচা কেনা হয়। নয়াবাজার এলাকারই প্রায় 50 জন দই ব্যবসায়ী আছেন। দই ব্যবসায়ীরা সাধারণত তিন ধরনের দই বিক্রি করে। ক্ষীর দই, খাসা দই ও সাধারণ দই। ক্ষীর দইয়ের বর্তমান বাজার মূল্য 250 টাকা প্রতি কেজি। খাসা দই 120 টাকা প্রতি কেজি ও সাধারণ দই 90-100 টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি করে।

লকডাউনের আগে পর্যন্ত নয়াবাজারের দই ব্যবসায়ীদের বাড়ির চিত্রটা ছিল ব্যস্ততার। তবে এখন ভিন্ন । শেষ কবে উনুন জ্বালিয়েছেন, তাও মনে পরে না অনেক ব্যবসায়ীর । কোরোনা ও লকডাউনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ও অন্নপ্রাশন। এছাড়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আগেই এই সব অনুষ্ঠানে কুইন্টাল কুইন্টাল দই যেত। এমনকী নয়াবাজারের দই জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহারেও যেত। তবে লকডাউনে গাড়ি সমস্যা থাকায় তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় নয়াবাজারের বেশির ভাগ দই কারখান বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অল্প অর্ডার পেয়ে কয়েকটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে দই। আগে যে সংখ্যক কর্মী কাজ করত তার 25 শতাংশ এখন কাজ করে ৷ তাও যেদিন অর্ডার মেলে সেদিনই কাজ হয়। লকডাউনের ফলে চরম ক্ষতির সম্মুখিন নয়াবাজারের দই ব্যবসায়ীরা।

নয়াবাজারের দই ব্যবসা বন্ধ
এই বিষয়ে দই ব্যবসায়ী লক্ষ্মণ চন্দ্র ঘোষ জানান, আগে যেমন বিয়ে, শ্রাদ্ধ ও অন্নপ্রশাসন বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য দই তৈরি হত। এখন সেই সব অনুষ্ঠান বন্ধ। এর ফলে এখন বেশির ভাগ দিনই কাজও বন্ধ। লকডাইনের আগে জেলা সহ জেলার বাইরে এক দু'দিন পর পর অর্ডারের দই যেত। লকডাউন ও কোরোনা সংক্রমণের জন্য প্রায় 5 মাস ধরে কাজ বন্ধ। এই ক্ষতির হিসেব বলে বোঝানো মুশকিল। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এই বিষয়ে দই ব্যবসায়ী লক্ষ্মণ চন্দ্র ঘোষ জানান, আগে যেমন বিয়ে, শ্রাদ্ধ ও অন্নপ্রশাসন বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য দই তৈরি হত। এখন সেই সব অনুষ্ঠান বন্ধ। এর ফলে এখন বেশির ভাগ দিনই কাজও বন্ধ। লকডাইনের আগে জেলা সহ জেলার বাইরে এক দু'দিন পর পর অর্ডারের দই যেত। এখন কাজ বন্ধ। এই ক্ষতির হিসেব বলে বোঝানো মুশকিল। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। এই বিষয়ে আর এক দই ব্যবসায়ী শক্তি ঘোষ জানান, লকডাউনের আগে দইয়ের ব্যবসা খুব ভাল ছিল। তবে লকডাউনের পর ব্যবসার পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়েছে। বর্তমানে দই ব্যবসা সংকটে। তেমন সামাজিক কাজ না হওয়ায় দইয়ের কোনও চাহিদা নেই। বর্তমানে 50 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করছেন। কারণ তাদেরও পরিবার রয়েছে। লকডাউনের আগে পর্যন্ত তাদের দই মালদা, উত্তর দিনাজপুর, শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে যেত। তবে আগে ক্ষীর দই থেকে এমনি দইয়ের চাহিদা বেশি ছিল। আগে প্রতিদিন গড়ে 2 থেকে 3 কুইন্টাল দই তৈরি হত। এখন বেশির ভাগ দিনই বন্ধ থাকছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দই ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার সব রকম আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.