তপন, 28 অগাস্ট: সাধারণ মানুষের সমস্যা কমাতে এবার 'আপনার দুয়ারে প্রশাসন' কর্মসূচি চালু করল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ৷ কিন্তু সেই কর্মসূচি থেকেই উপভোক্তারা যথাযথ পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ৷ ক্ষোভ উগরে দিলেন অনেকেই ৷
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সরকারি পরিষেবা পেতে হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে৷ তাই তাঁদের হয়রানি কমাতে এবার উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন । আর যেতে হবে না প্রশাসনের কাছে ৷ বরং প্রশাসনিক আধিকারিকরা যাবেন সাধারণ মানুষের কাছে । প্রত্যেক এলাকায় একটি ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে ৷ সেখানে গিয়ে উপভোক্তারা তাঁদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন ৷ এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'আপনার দুয়ারে প্রশাসন' ৷ কিন্তু এই প্রকল্পে উপভোক্তাদের বেশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ । দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর বলা হচ্ছে BDO অফিসে যোগাযোগ করতে । বরং এর থেকে কোনও সমস্যা হলে গ্রাম পঞ্চায়েত বা BDO অফিসে যোগাযোগ করাই বেশি ভালো ছিল বলে মনে করছেন অনেকে ৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে, তাঁদের অভাব অভিযোগ শুনতে, এলাকায় প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে যান । ঠিক সেই ধাঁচেই 'আপনার দুয়ারে প্রশাসন' কর্মসূচির সূচনা করেন জেলাশাসক নিখিল নির্মল ৷ সঙ্গে ছিলেন প্রত্যেকের বিভাগের প্রশাসনিক আধিকারিকরাও ৷ কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হয় তপন ব্লকের মাঝিখণ্ডা ফুটবল মাঠে । উপভোক্তাদের সরকারি সুবিধা পাইয়ে দিতে অনুষ্ঠান চত্বরে ছিল 22টি স্টল । আগামী দিনে জেলার বাকি সাতটি ব্লকের জন্যও এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।
অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ সরকারি সুবিধা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন । এক স্টল থেকে আরেক স্টলে ঘোরানো হচ্ছে ৷ তারপর বলা হচ্ছে নিজ নিজ গ্রাম পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিসে যোগাযোগ করার জন্য । অনেকে আবার ঠিক কোন স্টলে নিজের সমস্যার কথা জানাবেন বা পরিষেবা পাবেন তা বুঝতে পারছেন না ৷ সরকারি কর্মীদের কাছে তা জানতে গেলে তাঁদের মধ্যে অনেককে ভুল স্টলও দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ফলে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে অনেককেই ৷ এমন কী, অভিযোগ কেন্দ্রেও সবার অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না ।
এই বিষয়ে সরকারি পরিষেবা নিতে আসা সিদ্দিক মণ্ডল, নিখিল সরকার ও গৌতম সাহা জানান, তাঁরা কেউ আধার কার্ড, আবার কেউ ভোটার কার্ড বিষয়ক সমস্যা সমাধানের জন্য এসেছিলেন । সকাল 10টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা । যখন তাঁদের ডাকা হল তখন সবকিছু দেখে সরকারি আধিকারিকরা তাঁদের পঞ্চায়েত অথবা BDO অফিসে যোগাযোগ করার কথা বলেন । এছাড়াও তাঁরা যে সমস্যার সমাধানের আবেদন জানিয়েছিলেন তার কোনও রিসিভ পেপার বা আবেদনের প্রমাণপত্র হিসেবে কিছুই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । এক উপভোক্তার কথায়, "এখান থেকেই সব সুবিধা মিলবে বলা হলেও কোথায় মিলছে ? এইভাবে কাজ হলে কমিটি গঠনের কোনও দরকারই ছিল না ৷ এমন ধরনের কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়ার কোনও মানেই হয় না ।"
যদিও এবিষয়ে নিখিল নির্মল বলেন, " 'আপনার দুয়ারে প্রশাসন' এই কর্মসূচির মাধ্যমে আধিকারিকরা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবেন । সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্প তুলে ধরা হবে । এর ফলে সাধারণ মানুষের হয়রানি অনেকটাই কমবে ।"