বালুরঘাট, 18 ফেব্রুয়ারি : বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী তৃণমূল বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মণসহ একাধিক তৃণমূল নেতা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে দুর্নীতি করেছে, অভিযোগ স্থানীয় BJP নেতৃত্বের । BJP নেতারা আগেই দাবি করেছিলেন যে, তাঁদের কাছে গোটা ঘটনার তথ্য প্রমাণ রয়েছে ৷ এবার সেই তথ্য প্রমাণ সহ প্রশাসনের দ্বারস্থ হল BJP-র বালুরঘাট শহর মণ্ডল কমিটি ৷ যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান বেবি বর্মণ । অন্যদিকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বালুরঘাট পুরসভার প্রশাসক তথা সদর মহকুমা শাসক বিশ্বরঞ্জন মুখার্জি ।
অভিযোগ, বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী তৃণমূল বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মণ তাঁর মা পদবী বর্মণ ও তাঁর স্বামী সৌভিক কুমার দাসকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর (গীতাঞ্জলি ঘর) পাইয়ে দিয়েছেন । শুধুমাত্র বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মণই নয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পরিবারের লোকেদের পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে 15 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের চেয়ারম্যান পুলক রঞ্জন গোস্বামী, ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের সভাপতি অধীর শীল এবং আরও দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । BJP-র বালুরঘাট টাউন মণ্ডল কমিটির সভাপতি সুমন বর্মণ জানান, পুরো বিষয়টি তিনি জানতে পারেন রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্টের মাধ্যমে । দুর্নীতির তথ্য হাতে পাওয়ার পরেই জেলা প্রশাসন ও পৌরসভায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন । ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে দুর্নীতির উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছে বালুরঘাট BJP ।
BJP-র বালুরঘাট টাউন মণ্ডল কমিটির সভাপতি সুমন বর্মণ বলেন, "বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী তৃণমূল বোর্ড প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে । অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতারা নিজের পরিবারের লোকেদের ঘর পাইয়ে দিয়েছে । যেমন, বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মণ তাঁর মায়ের নামে 14 নম্বর ওয়ার্ডে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর মঞ্জুর করেছে ৷ তাঁর স্বামীও 'গীতাঞ্জালী' ঘর পেয়েছেন, অথচ যাঁদের পাওয়ার কথা তাঁরা পাননি৷ সবটা নিজেরাই লুটেপুটে নিয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা৷"
সুমন বর্মণের আরও দাবি, এই দুর্নীতির যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে ৷ সেই তথ্য সহ পৌরসভা ও প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে । অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সেই ছয় জনের জমি এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ্যে আনতে হবে । ওই ছয় জন আদৌ সরকারি প্রকল্পের ঘর পাওয়ার যোগ্যা কিনা তা যাচাই করার দাবি জানানো হয়েছে । এই বিষয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে বালুরঘাট BJP নেতৃত্ব আন্দোলনে নামবেন৷
গোটা ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মণ অবশ্য জানিয়ে দিলেন, "আমার মা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর যে পেয়েছেন তা সত্যি । কিন্তু মা ঘর পাওয়ার যোগ্য। মা'র নিজের সেরকম জায়গা জমি ছিল না৷ টিনের ঘরে থাকতেন । স্বামীও একই কারণে ঘর পেয়েছেন । BJP-র রটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ।"
এদিকে অভিযোগ জমা পড়লেও তাঁর হাত অবধি এখনও তা আসেনি বলে জানালেন বালুরঘাট পৌরসভার প্রশাসক তথা সদর মহকুমাশাসক বিশ্বরঞ্জন মুখার্জি ৷ তিনি বলেন, "অভিযোগ পত্র হাতে পেলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব। "