বালুরঘাট, 27 অগাস্ট : পুজোর আর দু'মাসও নেই। এই সময় সাধারণত দম ফেলার সময় থাকে না পুজো উদ্যোক্তাদের । তবে এবার পুজো দোরগোঁড়ায় এলেও নেই কোনও ব্যস্ততা । নেই উৎসাহ বা উদ্দীপনাও । কারণ, এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিগ বাজেটের পুজো উদ্যোক্তারা এখনও ততটা তৎপর নন ৷ মণ্ডপ তৈরির জন্য এখনও পোঁতা হয়নি বাঁশ । প্রতিমার উপর পড়েনি মাটির প্রলেপ। পুজোর প্রস্তুতি বা কাজ কবে শুরু হবে তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা । তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্যোক্তাদের মত, এবার বড় করে নয়, ছোটো করে পুজোর আয়োজন করবেন তাঁরা । এবং পুজোর যে অর্থ ব্যয় হয় তার একটি অংশ সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করবে ।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি, বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরে বেশ কয়েকটি বিগ বাজেটের পুজো হয় । জেলা তো বটেই জেলার বাইরে থেকেও বহু মানুষ প্রত্যেক বছর দক্ষিণ দিনাজপুরের বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপ ও প্রতিমা পরিদর্শন করতে আসে । তিন-চার মাস আগে থেকেই মণ্ডপ ও প্রতিমার কাজ শুরু করে থাকেন উদ্যোক্তারা । পুজোর ঠিক আগে চরম ব্যস্ততা থাকে উদ্যোক্তাদের মধ্যে । তবে এবার কোরোনার প্রভাবে পুরো চিত্রটাই বদলে গিয়েছে ৷ পুজোর আর দু'মাসও বাকি নেই। এই সময়েও এখনও পুজো মণ্ডপ ও প্রতিমার কাজে হাতই দেননি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট, হিলি, গঙ্গারামপুর সহ অন্য জায়গার পুজো উদ্যোক্তারা। পুজো আদৌ করা সম্ভব হবে কি না বা কতটা হবে তা নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা । যার ফলে এবারে পুজো উদ্যোক্তারা এখনও মণ্ডপ ও দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার সাহস পাচ্ছেন না । এবারের দুর্গা পুজো জাঁকজমকপূর্ণ হবে না বললেই চলে ।
এবিষয়ে বালুরঘাট সৃজন সংঘ ক্লাবের সম্পাদক গোবিন্দ দে জানান, এবার কোরোনা ও লকডাউনের জন্য ক্লাবের সদস্যরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবারে বড় করে দুর্গাপুজো করবেন না । প্রত্যেক বছরই তাদের দুটি জায়গায় দুর্গাপুজো করা হয় । একটি মায়ের মন্দির ও একটি দর্শনার্থীদের জন্য। এবার শুধুমাত্র মন্দিরে পুজো করবেন। বড় করে আলোকসজ্জা হবে না ৷
বালুরঘাট কচিকলা অ্যাকাডেমির সম্পাদক সুখেন্দু চ্যাটার্জি জানান, বরাবরই তাঁদের ক্লাবের পুজো দর্শকের প্রশংসা পায় । তবে এবার কোরোনা সংক্রমণের জন্য সেভাবে পুজো করা সম্ভব হবে না । এমনকী এবার দর্শনার্থীরাও সেভাবে ভিড় করবেন না পুজোমণ্ডপে । ফলে এবার বড় করে পুজোর আয়োজন তাঁরা করবেন না। সরকারি নির্দেশ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ছোটো করে পুজোর আয়োজন করবেন । যেহেতু পুজো করতেই হবে তাই প্রতিমার কাজ শুরু হয়েছে । পুজো মণ্ডপ ও লাইটিং এবার একবারে থাকবে না বললেই চলে । ক্লাবের যারা সদস্য রয়েছে তাদের সাহায্যে এবার পুজো হবে । কোথাও চাঁদা তুলবেন না তারা। এই সময়ে সকলকেই সকলের পাশে থাকতে হবে।
এবিষয়ে ত্রিমোহনী অমর ফ্রেন্ডস স্ট্যাফ ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, তাঁদের ক্লাবের এবার 50 তম বর্ষপূর্তি । ক্লাবের 50 তম বর্ষে জাঁকজমকভাবে দুর্গাপুজোর আয়োজন করার চিন্তাভাবনা করেছিলেন তাঁরা । তবে লকডাউন করার জন্য এবার সেসব কিছুই হবে না। একদম ছোটো করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করবেন । পাশাপাশি এবারে ক্লাবের পুজোর বরাদ্দ থেকে সমাজসেবা মূলক কাজ করবেন। এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি সব রকম নির্দেশ মেনে এবার দুর্গা পুজোর আয়োজন করতে হবে উদ্যোক্তাদের।